বাংলাহান্ট ডেস্ক: রূপম ইসলাম (Rupam Islam), নামটার সঙ্গে যত না আবেগ জড়িয়ে রয়েছে ততটাই আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে বিতর্কও। কখনো তাঁর বিরুদ্ধে ওঠে গান চুরির অভিযোগ, কখনো প্রশ্ন ওঠে তাঁর গান গাওয়ার ক্ষমতা নিয়ে। আবার কখনো রাজনৈতিক জটেও জড়িয়ে যায় তাঁর নাম। অনুরাগী এবং নিন্দুকরা ছায়াসঙ্গী রূপমের।
সম্প্রতি রূপমের একটি অনুষ্ঠান ঘিরে নতুন বিতর্ক শুরু হয়েছে নেটমাধ্যমে। আরো স্পষ্ট ভাবে বলতে গেলে একটি বিশেষ ছবি নিয়ে তীব্র আপত্তি প্রকাশ করেছেন নেটনাগরিকদের একটা বড় অংশ। জেলবন্দি দেশদ্রোহী উমর খালিদের (Umar Khalid) ছবি প্রচার করায় রূপমের বিরুদ্ধেও উঠেছে দেশদ্রোহিতার অভিযোগ।
ব্যাপারটা খোলসা করে বলা যাক। গত ১০ জুন নিউ ব্যারাকপুরের কৃষ্টি অডিটোরিয়ামে গানের অনুষ্ঠান ছিল রূপম ইসলামের। ‘গুরুদেব’কে চোখের সামনে দেখতে উপচে পড়েছিল শ্রোতাদের ভিড়। মঞ্চে একটার পর একটা গান গেয়ে যান রূপম। আর তাঁর পেছনে জায়ান্ট স্ক্রিনে ফুটে উঠতে থাকে একটার পর একটা ছবি। কখনো মুষ্টিবদ্ধ হাতে বিপ্লবের প্রতীক, কখনো কুস্তিগীরদের আন্দোলনের ছবি।
কিন্তু একটি ছবি নিয়েই শুরু যাবতীয় বিবাদ বিতর্ক। ছবিটি উমর খালিদের, যিনি সম্প্রতি তিহার জেলে ১০০০ দিন পূর্ণ করলেন। ২০২০ সালে দিল্লি দাঙ্গায় কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের অভিযোগে গ্রেফতার করা হয় তাঁকে। কাশ্মীরকে ভারতের থেকে আলাদা করার দাবি জানানো উমর খালিদের ছবি প্রদর্শন করায় এবার রূপমের বিরুদ্ধে শুরু হয়েছে ক্ষোভ।
সোশ্যাল মিডিয়ায় বিতর্কিত ছবিটি শেয়ার করে গায়ককে তুলোধনা করেছেন কয়েকজন নেটনাগরিক। কাশ্মীরকে আলাদা করা, ভারতের ‘টুকরে হোঙ্গে’ স্লোগান দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে যাঁর বিরুদ্ধে, তাঁর ছবি দেখিয়ে কী প্রমাণ করতে চাইছেন রূপম? প্রশ্ন তুলেছেন নেটিজেনদের একাংশ। নিজেকে ‘বিপ্লবী’ হিসেবে দেখাতে গিয়ে দেশদ্রোহিতা করছেন রূপম, এমনও অভিযোগ উঠেছে। এমনকি কয়েকজন তাঁর বিরুদ্ধে ‘লভ জিহাদ’ এর অভিযোগও টেনে এনেছেন।
কারোর অভিযোগ, নিজের রাজ্যে অনশনরত চাকরিপ্রার্থীদের কোনও ছবি তো দেখা গেল না রূপমের শোতে। কেউ মনে করিয়ে দিয়েছেন, রূপমই তৃণমূলের জন্য ‘মা মাটি মানুষ’ গেয়েছিলেন। আবার তিনিই নাগরিকত্ব আইনের বিরোধিতা করে গেয়েছিলেন ‘কাগজ আমি দেখাব না’। তবে বরাবরের মতো কোনো অভিযোগেরই উত্তর দেননি রূপম।
উল্লেখ্য, দিল্লি দাঙ্গার মাস্টারমাইন্ড বলে অভিযুক্ত উমর খালিদের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ রয়েছে। সন্ত্রাসবাদী আফজল গুরুকে আদর্শ বলা থেকে শুরু করে দেশদ্রোহিতার অভিযোগে অভিযুক্ত তিনি। জেএনইউ প্রাক্তনী নাগরিকত্ব আইনের বিরোধিতা করে UAPA আইনের আওতায় গ্রেফতার হন।