বাংলা হান্ট ডেস্ক: রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে যুদ্ধের পরিস্থিতি ভারত সহ একাধিক দেশে ইতিমধ্যেই উদ্বেগ বাড়িয়েছে। এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে, ওই দুই দেশই যুদ্ধ শুরুর প্রান্তে দাঁড়িয়ে রয়েছে। সবচেয়ে বড় ব্যাপার হল, যুদ্ধ শুরু হলে বিশ্বের তেলের বাজারে ব্যাপক অস্থিরতা দেখা দেবে। এমনকি, অপরিশোধিত তেলের দাম ব্যারেল প্রতি ১০০ ডলার ছাড়িয়ে যাবে বলেও মনে করা হচ্ছে। যার ফলে বিভিন্ন দেশে ব্যাপক হারে মুদ্রাস্ফীতি দেখা দিতে পারে।
উল্লেখযোগ্যভাবে, রাশিয়া প্রাকৃতিক গ্যাসের বৃহত্তম সরবরাহকারী দেশ। পাশাপাশি, অপরিশোধিত তেল উৎপাদনেও এই দেশের গুরুত্ব রয়েছে। রাশিয়া বিশ্বব্যাপী চাহিদার প্রায় ১০ শতাংশ উৎপাদন করে। এমতাবস্থায়, দুই দেশের মধ্যে যুদ্ধ শুরু হওয়ার হলে যে অপরিশোধিত তেল এবং প্রাকৃতিক গ্যাসের সরবরাহে বিরূপ প্রভাব পড়বে তা আর বলার অপেক্ষা রাখেনা। পাশাপাশি, জ্বালানির দামও বিপুল হারে বাড়তে থাকবে।
এছাড়াও, ইউরোপের ৪০ শতাংশেরও বেশি গ্যাস আসে রাশিয়া থেকে। যার সরাসরি প্রভাব পড়বে সাধারণ মানুষের ওপর। যুদ্ধের জন্য বর্ধিত উদ্বেগের প্রভাব ইতিমধ্যেই অপরিশোধিত তেলের দামের পাশাপাশি শেয়ার বাজারেও দৃশ্যমান। এমনকি, ভারতীয় স্টক মার্কেটেও ব্যাপক পতন দেখা গিয়েছে।
এদিকে, রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে চলমান সমস্যার কারণে ইতিমধ্যেই অপরিশোধিত তেলের দাম সর্বোচ্চ ৯৬.৩ ডলার ব্যারেল প্রতি ছুঁয়েছে। যদিও, বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন যে, শীঘ্রই এই দাম প্রতি ব্যারেলে ১০০ ডলার ছাড়িয়ে যাবে। এদিকে, সোমবারও বিশ্বব্যাপী তেলের বাজারে দর প্রায় ২ শতাংশ বেড়েছে।
একই সময়ে ইউরোপে প্রাকৃতিক গ্যাসের দামও বেড়েছে প্রায় ছয় শতাংশ। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, রাশিয়া বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম অপরিশোধিত তেল উৎপাদনকারী দেশ। ইউরোপের দেশগুলো তাদের তেলের ২০ শতাংশেরও বেশি রাশিয়া থেকে নেয়। এছাড়াও, রাশিয়া বিশ্বের ১০ শতাংশ তামা এবং ১০ শতাংশ অ্যালুমিনিয়াম উৎপাদন করে। অর্থাৎ যুদ্ধ শুরুর সঙ্গে সঙ্গে ইউরোপের দেশগুলোর জন্য নানান সমস্যা তৈরি হতে চলেছে।
বিশেষজ্ঞরা আরও জানিয়েছেন যে, ভারতেও এর প্রভাব দেখা যাবে। পাশাপাশি, যুদ্ধের সময়ে সাপ্লাই চেইন ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় শেয়ারবাজার আরও পতনের সম্ভাবনা রয়েছে। যুদ্ধের পরিবেশে বিনিয়োগকারীদের মনোভাবও ক্ষতিগ্রস্ত হবে বলে মনে করছেন তাঁরা। এছাড়াও, বিনিয়োগকারীরাও উদ্বিগ্ন যে, রাশিয়া এবং ইউক্রেনের মধ্যে লড়াই শুরু হলে তার উত্তাপ কেবল দুটি দেশে সীমাবদ্ধ থাকবে না, ইউরোপে এর সরাসরি প্রভাব পড়বে। শুধু তাই নয়, এই ধরনের যে কোনো সংঘর্ষ আমেরিকা ও রাশিয়ার মতো সামরিক শক্তিশালী দেশকেও মুখোমুখি করে দিতে পারে। এমনটা হলে বিশ্বের অর্থনীতি মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে।