বাংলা হান্ট ডেস্ক: পরিস্থিতি যেইরকমই হোক না কেন ভারত (India) বহুদিন ধরেই পরমাণু জ্বালানি কিংবা আধুনিক অস্ত্রশস্ত্র প্রতিটি ক্ষেত্রেই রাশিয়ার (Russia) ওপর ভরসা করে এসেছে। এমনকি, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের (Russia-Ukraine War) আবহেও যখন একাধিক দেশ পুতিনের দেশের ওপর বিভিন্ন নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল তখনও রাশিয়ার কাছ থেকে অপরিশোধিত তেল কিনেছে ভারত। যদিও, কিছু কিছু দেশ আবার এই নির্ভরতাকে ভালো ভাবে নেয়নি।
এমনকি, ২০১৯ সালের একদম প্রথম দিকে রাশিয়া থেকে এস-৪০০ ট্রিউম্ফ ক্ষেপণাস্ত্র (S-400 Triumph Missile) প্রতিরোধী ব্যবস্থা কেনার প্রসঙ্গে রীতিমতো ক্ষুব্ধ হয়েছিলেন আমেরিকার তৎকালীন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। শুধু তাই নয়, তিনি জানিয়েছিলেন যে, মস্কোর সঙ্গে এস-৪০০ কেনার চুক্তি বাতিল করা হলে আমেরিকা ভারতকে “টার্মিনাল হাই অলটিটিউড এরিয়া ডিফেন্স” ক্ষেপণাস্ত্র বিক্রি করবে। যদিও, সেই প্রস্তাব খারিজ করে দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী (Narendra Modi)। আর এভাবেই বারংবার রাশিয়ার সাথে নিজের বন্ধুত্বপূর্ণ মনোভাব বজায় রেখেছে ভারত।
এই প্রসঙ্গে ভারতের বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর পূর্বেই জানিয়েছিলেন যে, অস্ত্র এবং জ্বালানির ক্ষেত্রে রাশিয়ার ওপর নির্ভরতার একাধিক গুরুত্বপূর্ণ কারণ রয়েছে। মূলত, বহু দশক ধরে পশ্চিমী বিশ্ব ভারতকে কোনোরকম অস্ত্র রফতানি করত না। পাশাপাশি, অস্ত্রের গুণমানের বিষয়টিও রয়েছে। এমতাবস্থায়, সামগ্রিকভাবে দেশের ভবিষ্যৎ স্বার্থের কথা মাথায় রেখেই এহেন সিদ্ধান্ত নেওয়ার পথে হেঁটেছে ভারত।
তবে এবার, ঠিক সেই আবহেই এই দুই দেশের প্রতিরক্ষা চুক্তিকে আরও মজবুত করতে এক বিরাট প্রস্তাব এল খোদ রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের কাছ থেকে। পুতিন প্রস্তাব পাঠিয়েছেন যে, ভারতকে এবার বিপুল পরিমানে পরমাণু জ্বালানি ও আধুনিক অস্ত্রশস্ত্র দেবে রাশিয়া। এই প্রসঙ্গে জানিয়ে রাখি যে, বর্তমানে তামিলনাড়ুর কুড়নকুলমে রাশিয়ার সাহায্যেই তৈরি দু’টি পরমাণু চুল্লি চালু রয়েছে।
শুধু তাই নয়, আরও ৪ টি পরমাণু বিদ্যুৎ চুল্লি তৈরিও হচ্ছে। এমতাবস্থায়, ওই পরমাণু বিদ্যুৎ চুল্লিগুলিতে উৎপাদন চালু রাখার জন্য সঠিক পরিমানে জ্বালানি সরবরাহ ও আধুনিক প্রযুক্তি দিয়ে সাহায্য করার প্রস্তাব পাঠিয়েছে রাশিয়া। এদিকে, একদিকে যখন রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের আবহে রাশিয়ার কাছ থেকে জ্বালানি এবং অস্ত্র কেনার প্রসঙ্গে বিশ্বের একাধিক দেশ বিতর্কের সৃষ্টি করছে ঠিক সেই আবহে রাশিয়া নিজেই ভারতকে এই প্রস্তাব পাঠাল। এই প্রসঙ্গে জানিয়ে রাখি যে, ভারত কিন্তু এখনও রাশিয়ার কাছ থেকে তেল কেনা অব্যাহত রেখেছে।