বাংলা হান্ট ডেস্ক: রাশিয়া-ইউক্রেনের যুদ্ধের আবহে রীতিমতো সরগরম হয়ে রয়েছে গোটা বিশ্ব। ইউক্রেনের ওপর রাশিয়ার শক্তি প্রদর্শনের ক্রমাগত ছবি আমরা প্রতিদিনই পাচ্ছি। কিন্তু, এবার মনে হচ্ছে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের একটি দীর্ঘ পরিকল্পনা রয়েছে।
এতদিন বিশেষজ্ঞরা বলছিলেন যে, রাশিয়া ইউক্রেনকে পুরোপুরি ধ্বংস করার পরই শান্ত হবে। কিন্তু এরই মধ্যে আরেকটি চাঞ্চল্যকর বিষয় সামনে এসেছে। সম্প্রতি বেলারুশের প্রেসিডেন্ট এবং পুতিনের অন্যতম ঘনিষ্ঠ সহযোগী আলেকজান্ডার লুকাশেঙ্কোর সঙ্গে তাঁর কর্মকর্তাদের কথোপকথনের একটি অংশ ফাঁস হয়েছে। এতে তিনি রাশিয়ার একটি পরিকল্পনার কথা উল্লেখ করছেন যেখানে দাবি করা হচ্ছে যে, ইউক্রেনের পর রাশিয়ার পরবর্তী টার্গেট হবে প্রতিবেশী দেশ মলদোভা।
এই প্রসঙ্গে ডেইলি মেইলের এক প্রতিবেদন অনুযায়ী জানা গিয়েছে যে, বেলারুশের প্রেসিডেন্ট আলেকজান্ডার লুকাশেঙ্কো রাশিয়া ও ইউক্রেনের সঙ্কট নিয়ে তাঁর নিরাপত্তা পরিষদের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের সঙ্গে একটি বৈঠক করছিলেন। সেখানে তাঁরা যুদ্ধের মানচিত্রের মাধ্যমে ইউক্রেনে রাশিয়ার আক্রমণের ব্যাপারে বিস্তারিত আলোচনাও করেন। পাশাপাশি, ওই আলোচনায় তিনি বলেন যে, ইউক্রেনের পর রাশিয়া মলদোভাও আক্রমণ করতে পারে।
তবে, তিনি তা নিছক ভুল করে বলেছেন নাকি এর মধ্যে কোনো সত্যতা আছে তা ভবিষ্যতই বলে দেবে। কিন্তু এই ঘটনা বর্তমানে ভাইরাল হয়ে যাওয়ায় মলদোভা লাইমলাইটে চলে আসে।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, বেলারুশের প্রেসিডেন্ট আলেকজান্ডার লুকাশেঙ্কো রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিনের অন্যতম বন্ধু। স্বাভাবিকভাবেই বেলারুশও রাশিয়ার মিত্র দেশের তালিকায় পড়ে। এমনকি, বেলারুশ ইউক্রেনে হামলার সময় রাশিয়াকে সমর্থন করেছে এবং ইউক্রেনে তাদের সৈন্যও পাঠিয়েছে। এই কারণেই অনুমান করা হচ্ছে যে, তিনি পুতিনের কূটনৈতিক কৌশল ভালো করেই জানেন।
এদিকে, ইতিমধ্যেই এই ঘটনার একটি ছবিও ভাইরাল হয়েছে যেখানে দেখা যাচ্ছে যে, লুকাশেঙ্কো একটি যুদ্ধের মানচিত্রের সামনে দাঁড়িয়ে আছেন এবং সেই মানচিত্রে ইউক্রেন ও মলদোভাকে স্পষ্টভাবে দেখা যাচ্ছে। এই মানচিত্রের মাধ্যমেই লুকাশেঙ্কো তাঁর উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের জানিয়েছিলেন যে, আগামী দিনে রাশিয়া ঠিক কোন কোন জায়গায় বোমা বর্ষণ করতে পারে।
পাশাপাশি যেহেতু, মলদোভা ইউক্রেনের প্রতিবেশী দেশ, এর ফলে পুতিন সেটি যে কোনো সময়ে আক্রমণ করতে পারেন বলে নতুন করে আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। তবে, এটা সত্য যে বেলারুশ রাশিয়াকে ইউক্রেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধে সাহায্য করছে। শুধু তাই নয়, যুদ্ধের আগে রাশিয়ার সঙ্গে দশদিনের সামরিক মহড়াও নিয়েছিল বেলারুশের সৈন্যরা। এরপর বেলারুশের ইউক্রেন সীমান্তে রুশ সেনাদের মোতায়েন করা হয়।
এদিকে, ইউক্রেনে ভয়াবহ হামলার মধ্যেই রুশ সেনারা দাবি করেছে যে, তারা খেরসন শহর দখল করেছে। তবে এই বিষয়ে ইউক্রেনের পক্ষ থেকে এখনো কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। পাশাপাশি, ইউক্রেনের কনোটপ শহরের মেয়র দাবি করেছেন যে, রুশ সৈন্যরা তাঁকে শহরটি তাদের কাছে হস্তান্তর করার জন্য হুমকি দিয়েছে নাহলে তারা সেটিকে পুরোপুরি ধ্বংস করে দেবে বলে জানিয়েছে। যদিও, সারা বিশ্বের প্রথম সারির নেতারা রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে চলমান যুদ্ধ থামানোর বহু চেষ্টা করছেন।