বাংলা হান্ট ডেস্ক : ছিল মার্কিনি নিষেধাজ্ঞা, ছিল পশ্চিমি রাষ্ট্রের অমত। তারপরও, সবকিছুকে বুড়োআঙুল দেখিয়ে রাশিয়া (Russia) থেকে অপরিশোধিত পেট্রোলিয়াম কিনছে ভারত (India)। এবং সেই তেল আমার বিশ্বের বাজারে বিক্রি করছে করছে চড়া দামে। এমনকি আমেরিকাও (America) ভারতের থেকে রাশিয়ার কিনেছে। শুধু তাই নয়, পরিসংখ্যান বলছে বিগত ১০ মাসে ভারত রাশিয়া থেকে তেল কেনার পরিমাণ বাড়িয়েছে ৩৮৪ শতাংশ।
কিন্তু সমস্যা অন্য জায়গায়। ভারতকে রাশিয়া থেকে সস্তায় তেল কিনতে দেখে লোভ জাগে চিনেরও। করোনা পরবর্তী সময়ে আবারও ঘুরতে শুরু করেছে বাণিজ্যের চাকা। ফের অপরিশোধিত পেট্রোলিয়ামের চাহিদা বেড়েছে চিনে। জানা যাচ্ছে, ভারত যে দামে রাশিয়া থেকে তেল কেনে সেই দামেই এবার তেল চাইছে বেজিং। কিন্তু রাশিয়া চিনকে সেই দামে তেল বিক্রি করবে না বলেই মনে করছে আন্তর্জাতিক রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞ মহল। রাশিয়ার পাল্লা বরং ঝুঁকে থাকবে ভারতের দিকেই।
মস্কো সূত্রে খবর, চিন তেলের জন্য আবদার করলেও রাশিয়া ভারতকেই সেই সুযোগ দিতে চাইছে। এর আগে রাশিয়া থেকে খুব কম পরিমাণ তেলই ভারত কিনত। ভারতে সরবরাহ হওয়া অধিকাংশ তেলই আসত আরব থেকে। কিন্তু রাশিয়ার উপর নিষেধাজ্ঞা জারি হওয়ার পর ভারতে বিরাট এক বাজার খুঁজে পায় পুতিনের দেশ। আন্তর্জাতিক সূত্র খবর, রাশিয়া থেকে ভারত বর্তমানে প্রতিদিন ১.৮৫ লক্ষ ব্যারেল তেল কেনে।
চিনের কোভিড জিরো নীতির পর রাশিয়ার পুরো তেলের আমদানিকেই কিনতে পারে বেজিং। কিন্তু তারপরও রাশিয়া ভারতকেই সেই সুযোগ দিতে চাইছে বলে জানা যাচ্ছে। আন্তর্জাতিক শক্তি সংস্থা সূত্রে জানা যাচ্ছে, একটা সময় রাশিয়া চিনকে প্রতিদিন ২.৩ লক্ষ ব্যারেল তেল রপ্তানি করত। আইইএ জানাচ্ছে, কোভিড পরবর্তী সময়ে চিনের ৯০০০০০ ব্যারেল অপরিশোধিত পেট্রোলিয়াম প্রতিদিন লাগতে পারে।
রাশিয়ার চিনের থেকে বেশি ভারতকে প্রধান্য দেওয়ার আর একটি বড় কারণ হল দূরত্ব। চিন রাশিয়ার সীমান্তে অবস্থান করলে তার পরিশোধনাগারগুলি রয়েছে দক্ষিণ দিকে। সেখানে তেল পৌঁছে দিতে একটি ট্যাঙ্কারের সময় লাগে ৪০ থেকে ৪৫ দিন। অপরদিকে ভারতে ওই তেল পৌঁছাতে সময় লাগে ৩৫ দিন। এই মুহুর্তে রাশিয়া ভারতের চতুর্থ বৃহত্তম তেল রপ্তানিকারক দেশ। সর্বোপরি চিনকে টেক্কা দিয়ে রাশিয়ার তেল কিনবে ভারত। যা কূটনীতিক ভাবেও ভারতের বড় জয়।