বাংলা হান্ট ডেস্কঃ রাশিয়ার এক ডাক্তার কয়েক বছর আগে কৈলাস মান সরোবরের যাত্রা করেছিলেন। উনি এই যাত্রার পর দাবি করেছিলেন যে, কৈলাস পর্বতে বাস্তবেই একটি প্রাচীন পিরামিড আছে, আর সেই পিরামিড ছোট ছোট পিরামিড দিয়ে ঘেরা। এর সুত্র গিজা এবং মেক্সিকোর Teotihuacan পিরামিডের সাথে যুক্ত।
হিমালয় পর্বতমালা সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ৬ হাজার ৭১৮ মিটার উঁচুতে কৈলাস পর্বতকে হিন্দু, বৌদ্ধ আর জৈন ধর্ম অনুযায়ী পবিত্র স্থল বলা হয়। হিন্দুদের মান্যতা অনুসারে ভগবান শিব এই পর্বতেই বাস করতেন। আর সেখানেই ওনার সমাধি আছে। তিব্বতের বৌদ্ধদের অনুযায়ী, পরম আনন্দের প্রতীক বুদ্ধ ডেমচোক (ধর্মপাল) কৈলাস পর্বতের অধিষ্ঠাতা দেবতা। আর জৈন ধর্মে কৈলাসকে অষ্টাপদ বলা হয়। তাঁদের অনুসারে প্রথম তীর্থঙ্কর ঋশভহদেব এখানেই শান্তি খুঁজে পেয়েছিলেন।
আজ পর্যন্ত কোন মানুষই এই পর্বতে চড়াই করতে পারেনি। যেই এই পাহাড়ে ওঠার চেষ্টা করেছে, তাঁরই মৃত্যু হয়েছে। আর এটা নিয়ে অনেক কথাও প্রচলিত আছে। চীনের সরকার কৈলাস পর্বতের ধার্মিক আস্থা দেখে, সেখানে চড়াই করা নিষিদ্ধ করেছে। এটাও শোনা যায় যে, ১৯ এবং ২০ শতাব্দীতে কিছু পর্বতআরোহী এই পাহাড়ে চড়ার চেষ্টা করেছিলেন, কিন্তু তাঁরা সবাই উধাও হয়ে গেছেন।
রাশিয়ার ডাক্তার এর্নেস্ট মুলদাশিফ (Ernst Muldashev) নিজের স্মৃতিকথায় লেখেন, ওনাকে একবার সাইবেরিয়ার পর্বতআরোহীরা বলেছিলেন যে, কিছু পর্বতআরোহী কৈলাস পর্বতের একটি নির্দিষ্ট জায়গায় পৌঁছেছিল। আর তাঁর একবছর পর বৃদ্ধাবস্থার জন্য তাঁদের মৃত্যু হয়। বিখ্যাত রাশিয়ার চিত্রকার নিকোলায় রেরিখ এর বিশ্বাস অনুযায়ী, কৈলাসের আসেপাশে শাম্বালা নামের একটি রহস্যময়ি রাজ্য আছে। সেখানে শুধু তপস্যিরা বসবাস করেন।
১৯৯৯ সালে রাশিয়ার নেত্র রোগ বিশেষজ্ঞ এর্নেস্ট মুলদাশিফ ঠিক করেন যে, কৈলাস পর্বতের রহস্য উন্মোচনের জন্য তিনি ওই এলাকায় যাবেন। ওনার পর্বতআরোহী টিমে ভুবিজ্ঞান, ভৌতিক বিশেষজ্ঞ আর ঐতিহাসিকবিদেরা ছিলেন। তাঁরা অনেক তিব্বতি লামাদের সাথে সাক্ষাৎ করেন। পবিত্র কৈলাসের আশেপাশে অনেক মাস ধরে সময় কাটান। এরপর তিনি একটি বই লেখেন ‘where do we come from” সেখানে তিনি কৈলাস পর্বতের যাত্রা নিয়ে অনেক কথাই লেখেন।
তদন্ত করার পর এর্নেস্ট মুলদাশিফ এই সিদ্ধান্তে আসে যে, বাস্তবে কৈলাস পর্বতে একটি মানব নির্মিত পিরামিড আছে, আর এই পিরামিডের নির্মাণ প্রাচীন কালে করা হয়েছিল। উনি দাবি করেছিলেন যে, একটি বড় পিরামিডকে অনেক ছোট ছোট পিরামিড ঘিরে আছে আর সেখানে অলৌকিক ঘটনা ঘটে।
সেখান থেকে ফেরার পর এর্নেস্ট মুলদাশিফ লেখেন, ‘রাতের নিশ্তব্দতায় পাহাড়ের ভিতর থেকে একটি আজব ফিসফিস এর শব্দ আসে। এক রাতে আমি আর আমার দুই সহযোগী পাথর পড়ার আওয়াজ পেয়েছি। আর এই আওয়াজ কৈলাস পর্বতের পেটের ভিতর থেকে আসছিল। আমারা ভেবেছিলাম যে, পিরামিডের ভিতরে অন্য কোন মানুষ আছে।”
উনি আরও লিখেছিলেন, ‘তিব্বতি গ্রন্থে লেখা আছে যে শাম্বালা একটি আধ্মাতিক দেশ, এটা কৈলাস পর্বতের উত্তর-পশ্চিমে অবস্থিত। বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিকোন দিয়ে এই বিষয়ে চর্চা করা আমার পক্ষে কঠিন। তবে আমি পরিস্কার ভাবে বলতে পারি, কৈলাস পর্বতের এলাকা সোজাসুজি পৃথিবীর জীবনের সাথে জড়িত। যখন আমরা তপস্যিদের রাজ্য তথা পিরামিড আর পাথরের দর্পণকে মিলিয়ে একটি যোজনাবদ্ধ নকশা বানাই, তখন আমরা সেটা দেখে হয়রান হয়ে যাই! কারণ সেই নকশা ডিএনএ এর অণুর স্থানিক সংরচনার নকশা ছিল।”
কৈলাস পাহার আর তাঁর আশেপাশের পরিবেশের উপর গবেষণা করা বৈজ্ঞানিক নিকোলাই রোমনভ আর ওনার টিম তিব্বতের মন্দিরের ধর্মগুরুদের সাথে সাক্ষাৎ করেন। উনি বলেন, কৈলাস পর্বতের চারিদিকে একটি অলৌকিক শক্তি বয়ে চলে।