বাংলা হান্ট ডেস্কঃ রাশিয়া এবং ইউক্রেন যুদ্ধের মাঝে যখন আমেরিকাসহ গোটা ইউরোপের দেশগুলি রাশিয়ার সঙ্গে সমস্ত বাণিজ্যিক সম্পর্ক ছিন্ন করে, সেই মুহুর্তে সে দেশ থেকে অশোধিত তেল কেনা প্রসঙ্গে প্রথম থেকেই ভারতের বিরুদ্ধে কড়া ভাষায় আক্রমণ করতে দেখা যায় আমেরিকাকে। এমনকি নিজেদের প্রতিনিধি পাঠিয়েও ভারতের বিরুদ্ধে রীতিমতো হুঁশিয়ারি দেয় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। আর এবার তাদের সেই বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে মুখ খুললেন ভারতের বিদেশ মন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। ভারত বিদেশমন্ত্রী কড়া ভাষায় জানান যে, ভারতকে সতর্ক করার আগে আমেরিকার উচিত ইউরোপের মার্কিন ঘনিষ্ঠ দেশগুলোর দিকে নজর দেওয়া।
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের মাঝে যখন সমস্ত ইউরোপীয় দেশগুলি রাশিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করে, তখন সেই দেশ থেকে কম দামি অশোধিত তেল পাওয়ার দিকে ঝাঁপায় ভারত। দেশের মানুষের স্বার্থের কথা চিন্তা করে কোনো কিছুর সাথে যে আপস করা হবে না, সে বিষয়ে স্পষ্ট জানায় কেন্দ্র সরকার। আর এর পরেই গতকাল মার্কিন প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করেন ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং এবং এস জয়শঙ্কর। বৈঠক শেষে সাংবাদিক সম্মেলনে মার্কিন বিদেশসচিব জানান যে, প্রত্যেক দেশকেই তাদের পক্ষ থেকে আর্জি জানানো হয়েছে যেন কেউ রাশিয়ার থেকে কোনরকম জিনিস না কেনে। এরপর রাশিয়া থেকে ভারতের তেল কেনা প্রসঙ্গে তাকে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি জানান, “ভারত এবং রাশিয়ার সম্পর্ক বহুদিনের। তবে বর্তমানে আমেরিকা তার মিত্র দেশগুলোকে এই অনুরোধ জানিয়েছে যে, রাশিয়া থেকে কোনরকম জ্বালানি যেন না কেনা হয়।”
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এই হুঁশিয়ারি মাঝেই জয়শঙ্কর জানান, “ভারত এক মাসে রাশিয়ার থেকে যে পরিমাণ তেল আমদানি করে, ইউরোপের দেশগুলো এক দিনে তার থেকেও বেশি পরিমাণ তেল কেনে তাদের থেকে। আর রাশিয়া থেকে তেল আমদানির পরিসংখ্যান যদি দেখা যায়, তাহলে আমি আমেরিকাকে ইউরোপের দেশগুলোর দিকেই নজর দিতে বলব।”
পূর্বে রাশিয়া থেকে তেল আমদানি প্রসঙ্গে নির্মলা সীতারমণ এক বক্তব্য পেশ করে তিনি বলেন যে, “ভারতের স্বার্থ এবং নিরাপত্তা রক্ষা করা সরকারের একমাত্র উদ্দেশ্য। দেশের স্বার্থ সবকিছুর উপরে। যদি কম দামে তেল পাওয়া যায়, তাহলে আমরা কিনবো না কেন? দেশের মানুষের প্রয়োজন অনুযায়ী তাই আমরা তেল আমদানি করা শুরু করেছি আর ভবিষ্যতেও করব।”