বাংলা হান্ট নিউজ ডেস্ক: কানপুরে ভারত বনাম নিউজিল্যান্ড টেস্ট সিরিজের প্রথম টেস্টের চতুর্থ দিনের খেলার শেষে ফের চালকের আসনে ভারত। অথচ তৃতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে কেঁপে গিয়েছিল ভারতীয় ব্যাটিং লাইন আপ। কাইল জেমিসন এবং টিম সাউদি-র দুরন্ত বোলিংয়ে একসময় ৮০ রানের মধ্যে পাঁচ উইকেট হারিয়ে ফেলেছিল ভারতীয় দল। সেখান থেকে দিনের শেষে নিউজিল্যান্ডের সামনে ২৮৪ রানের টার্গেট দেয় ভারত।
ভারত যে ঘুরে দাঁড়িয়েছে তার কৃতিত্ব মূলত দুজনের। প্রথমজন হলেন চলতি টেস্টে প্রথমবার ভারতের হয়ে সাদা জার্সি গায়ে চাপানোর সুযোগ পাওয়া শ্রেয়স আইয়ার। প্রথম ইনিংসে শতরান করার পর দ্বিতীয় ইনিংসেও দুরন্ত ছন্দে শ্রেয়স। পূজারা, রাহানেরা যেখানে পরপর ব্যর্থ হয়ে ফিরে গিয়েছেন, সেখানে দায়িত্ব নিয়ে ভারতের ইনিংসকে এগিয়ে নিয়ে গেলেন মুম্বাইয়ের তারকা ক্রিকেটার। দ্বিতীয় ইনিংসেও দুর্দান্ত ব্যাটিং করে ১২৫ বলে ৬৫ রান করেন তিনি।
দ্বিতীয় যার জন্য ভারত ঘুরে দাঁড়িয়েছে তিনি হলেন বঙ্গ উইকেটরক্ষক ঋদ্ধিমান সাহা। প্রথম ইনিংসে সাউদির বলে মাত্র ১ রান করে আউট হলে প্রবল সমালোচিত হয়েছিলেন। তারপর চোটের জন্য করতে পারেননি কিপিং-ও। তার জায়গায় কিপিং করা শ্রীকর ভরত-কে প্রথম দলে সুযোগ দেওয়ার জোড়ালো দাবি উঠতে থাকে। এইসবও বলা হয়েছিল যে ৩৭ বছর বয়স্ক সাহার ভারতীয় ক্রিকেটকে আর নতুন করে কিছু দেওয়ার নেই। তার মধ্যেই অশ্বিন, জাদেজা ফিরে যাওয়ার পর ঘাড়ে ব্যাথা নিয়েই ব্যাটিং করতে নামেন ঋদ্ধি। দিনের শেষে অধিনায়ক অজিঙ্কা রাহানে যখন ২৩৪ রানে ইনিংস ডিক্লেয়ার করার সিদ্ধান্ত নেন। ঋদ্ধি তখন ড্রেসিংরুমে ফিরছেন। তার নামের পাশে ঝকঝক করছে অপরাজিত ৬১ রান। সমালোচকদের করে যাওয়া যাবতীয় সমালোচনার জবাব নিজের ব্যাট দিয়েই দিলেন বঙ্গ ক্রিকেটের উজ্জ্বল রত্ন।
আজ যখন ঋদ্ধি ব্যাট করতে নেমেছেন তখন তিনি ভুগছিলেন ঘাড়ের ব্যাথায়। তারপর ৬৬ তম ওভারে যখন সাউদির বল ফাইন লেগে পুশ করে অর্ধশতরান সম্পূর্ণ করেন, তখন ক্যামেরা খানিকক্ষণের জন্য তার মুখে ফোকাস করেছিল। যন্ত্রণা কাতর মুখটাতে তখন কিছুটা হলেও তৃপ্তি ছিল। তবে তা মুহূর্তের জন্য। তারপরেই সেই চিরপরিচিত নির্লিপ্ত ঋদ্ধি, যিনি শুধু মাঠে নিজের কাজটি করে যাওয়ার চেষ্টা করেন। ভারতকে চালকের আসনে বসিয়ে যখন তিনি ফিরছেন, তখন তার নামের পাশে একটি নতুন রেকর্ড। সবচেয়ে বেশি বয়স্ক ভারতীয় উইকেটরক্ষক হিসাবে হাফ-সেঞ্চুরি করার রেকর্ড এই ম্যাচে নিজের নামে করে নেন ঋদ্ধি। এতদিন সেই রেকর্ড দখলে ছিল প্রাক্তন জাতীয় উইকেটরক্ষক ফারুক ইঞ্জিনিয়ারের। ৩৭ পূর্ণ করার দু মাসে আগে সেই রেকর্ড করেছিলেন ফারুক। ঋদ্ধি যখন এই রেকর্ড ভাঙলেন তখন তার বয়স ৩৭ বছর ৩৫ দিন। চোট যদি বেশি না ভোগায় তাহলে হয়তো মুম্বাই টেস্টেও দেখা যেতে পারে তাকে।