বাংলাহান্ট ডেস্ক: দিলীপ কুমারের (dilip kumar) সঙ্গে সঙ্গে ভারতীয় চলচ্চিত্রে এক যুগের অবসান হল। দীর্ঘ রোগভোগের পর বুধবার সকালে মুম্বইয়ের হিন্দুজা হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করলেন বর্ষীয়ান অভিনেতা। সেঞ্চুরির দু ধাপ আগে শেষ হয়ে গেল তাঁর জীবনের দৌড়। পেছনে ফেলে রেখে গেলেন অগুন্তি অনুরাগী ও সর্বাধিক প্রিয়, সহধর্মিণী সায়রা বানুকে (saira banu)।
বুধবার সকালে স্বামীর মৃত্যু সংবাদ শুনে সায়রা বানু প্রথম বলেছিলেন, “ভগবান আমার বেঁচে থাকার কারণটাই কেড়ে নিল। সাহাবকে ছাড়া তো আমার জীবন অর্থহীন। আমি কিছু ভাবতেই পারছি না। দয়া করে সকলে প্রার্থনা করুন”। চিকিৎসক ডাঃ জালিল পারেকর এই দুসংবাদ প্রথম শোনান সায়রা বানুকে। সেই মুহূর্ত থেকে শোকস্তব্ধ হয়ে রয়েছেন বর্ষীয়ান অভিনেত্রী।
দিলীপ সায়রার প্রেমকে নজির মানা হত বলিউডে। দীর্ঘ ৫৪ বছরের দাম্পত্য জীবন তাঁদের। নিজের থেকে ২২ বড় দিলীপ কুমারের প্রেমে পড়ে তাঁকে বিয়ে করেছিলেন সায়রা। মাত্র ১২ বছর বয়সে দিলীপ কুমার অভিনীত ‘মুঘল-ই-আজম’ ছবি দেখে অভিনেতার প্রেমে পড়েছিলেন তিনি। তখন থেকেই তাঁর মনে বিশ্বাস ছিল একদিন তিনিই দিলীপ কুমারের স্ত্রী হবেন।
সেই বিশ্বাসে ভর করেই বলিউডে পা রাখেন সায়রা বানু। দিলীপের মন জয় করতে সক্ষমও হন তিনি। ‘ঝুঁক গয়া আসমান’ ছবির সেটে আসে সেই বহু প্রতীক্ষিত মুহূর্ত। সায়রাকে প্রেম প্রস্তাব দেন দিলীপ। ১৯৬৬ তে বিয়ে হয় তাঁদের। বয়সের এত ফারাক কিন্তু বুঝতেই দেননি দুজনে। ৫৪র ও বেশি বছর ধরে মনে প্রাণে দিলীপ কুমারকে ভালবেসে গিয়েছেন সায়রা।
দম্পতি নিঃসন্তান ছিলেন। তবে একবার সন্তানসম্ভবা হয়েছিলেন সায়রা। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত সন্তান গর্ভেই নষ্ট হয়ে যায়। তারপর থেকে আর কখনো মা হতে পারেননি তিনি। ১৬ বছর সংসার করার পর সায়রাকে ছেড়ে দ্বিতীয় বিয়েও করেছিলেন দিলীপ। কিন্তু পরে ভুল বুঝতে পেরে আবার ফিরেও এসেছিলেন।
একটা সময় স্বামীর সেবা করার জন্য অভিনয় থেকে অবসর নেন সায়রা বানু। জীবনের শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত দিলীপ কুমারকে আগলে রেখেছিলেন। কিছুদিন আগেও সায়রা বানু জানিয়েছিলেন আগের থেকে সুস্থ আছেন অভিনেতা। বাড়ি ফিরবেন শীঘ্রই। কিন্তু তাঁর আশা আর পূরণ হল না।