বাংলা হান্ট ডেস্কঃ মেদিনীপুর মেডিকেল কলেজে স্যালাইন (Saline Controversy) থেকে সংক্রমণের কারণে প্রসূতি মৃত্যুর ঘটনায় তোলপাড় গোটা রাজ্য। এই ঘটনার পর মেদিনীপুর মেডিকেল কলেজের ১৩ জন চিকিৎসককে সাসপেন্ড করা হয়েছে। তাদের মধ্যে রয়েছেন ৭ জন জুনিয়র চিকিৎসক। স্যালাইন কান্ডে মেদিনীপুর মেডিকেল কলেজের সাসপেন্ডেড চিকিৎসক পল্লবী বন্দ্যোপাধ্যায় এবার দ্বারস্থ হয়েছেন কলকাতা হাইকোর্টের।
স্যালাইনকাণ্ডে (Saline Controversy) সাসপেনশন বাতিলের আর্জি চিকিৎকের
জরুরী ভিত্তিতে ওই মামলা দায়ের করার অনুমতি দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট (Calcutta High Court)। স্যালাইন কাণ্ডে (Saline Controversy) যে ১৩ জন চিকিৎসককে সাসপেন্ড করা হয়েছে, ইতিমধ্যেই তাঁরা আন্দোলনে নেমেছেন। সাসপেনশন তুলে নেওয়ার আর্জি জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রী সহ স্বাস্থ্যশিক্ষা অধিকর্তা, স্বাস্থ্যভবনে চিঠি দিয়েছেন তাঁরা। চিকিৎসক পল্লবী বন্দ্যোপাধ্যায়ের দাবি, তিনি প্রসূতির অ্যানাস্থেশিয়া করেছিলেন। অ্যানাস্থেশিয়া কারণে কোনো রোগীর মৃত্যু হয়নি। তাই কোনো কারণ ছাড়াই তাঁদের সাসপেন্ড করা হয়েছে বলে দাবি করেছেন ওই সাসপেন্ডেড চিকিৎসক। জানা যাচ্ছে, আগামী সোমবার কলকাতা হাইকোর্টে এই মামলার শুনানি হতে চলেছে।
গত সপ্তাহে রাজ্যের স্বাস্থ্য অধিকর্তা, স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিকর্তা এবং মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষকে একসাথে চিঠি দিয়েছিলেন সাসপেন্ডেড জুনিয়র চিকিৎসকরা। মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ ওই চিঠি পাঠিয়েছেন স্বাস্থ্য ভবনে। কিন্তু, কোন পক্ষ থেকে কোন বার্তা না আসায় এবার স্বয়ং রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর দ্বারস্থ হয়েছেন জুনিয়র ডাক্তাররা। সাসপেন্ডেড ৭ চিকিৎসক আলাদা ইমেইল করেছিলেন তাঁকে। প্রত্যেক ক্ষেত্রেই শাস্তি পুনর্বিবেচনা করার আর্জি জানানো হয়েছে।
আরও পড়ুন: ‘এই কারণে সন্দীপ ঘোষকে দোষী বলা ঠিক নয়’! তিলোত্তমার বাবার ২ দাবি ‘ভিত্তিহীন’ বলল আদালত
মেদিনীপুর মেডিকেল কলেজের স্যালাইন কান্ডের (Saline Controversy) পরিপ্রেক্ষিতে এবার মুখ্য সচিবকেও ইমেইল করল ‘জয়েন্ট প্লাটফর্ম অফ ডক্টর্স’। মেদিনীপুর মেডিকেল কলেজের চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে ভারতীয় ন্যায় সংহিতা অনুযায়ী যে পুলিশি পদক্ষেপ করা হচ্ছে, মেল মারফত তা প্রত্যাহারের আর্জি জানানো হয়েছে। চিকিৎসকদের দাবি, রোগীর পোস্টমর্টেম রিপোর্টে প্রমাণিত হয়েছে ওই চিকিৎসকদের কোনও ত্রুটি ছিল না। তারপরেও এই পদক্ষেপ অতিসক্রিয়তা।
স্যালাইন কাণ্ডে সংক্রমণের জেরে মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি থাকা এক প্রসূতির মৃত্যু হয়েছিল। অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন হাসপাতালের আরও চারজন প্রসূতি। পরিবার সূত্রে খবর ৮ জানুয়ারি রাতে মেদিনীপুরের সরকারি হাসপাতালে সুস্থ সন্তানের জন্ম দিয়েছিলেন চন্দ্রকোণার বাসিন্দা মামনি রুই দাস। পরিবারের অভিযোগ স্যালাইন দেওয়ার পরেই তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে শুরু করে। পরের দিন ৯ জানুয়ারি মৃত্যু হয় তাঁর। ‘পশ্চিমবঙ্গ ফার্মাসিউটিক্য়াস’ নামে ওই কোম্পানির স্যালাইন ব্যবহার করার কারণেই পার্শ্ব প্রতিক্রিয়ার জন্য প্রসূতির শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়। এরপর তাঁর রক্তক্ষরণ বন্ধ করার জন্য ‘রিঙ্গার ল্যাকটেট স্যালাইন’ ব্যবহার করা হয়। জানা যায় ওই নিষিদ্ধ স্যালাইন থেকে পার্শ্ব প্রতিক্রিয়ার কারণে অকাল মৃত্যু হয় প্রসূতির।