বাংলা হান্ট ডেস্কঃ আরজি কর কাণ্ডে গ্রেফতার হয়েছেন প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষ (Sandip Ghosh)। চিকিৎসক ধর্ষণ খুনের মামলায় গ্রেফতার হয়েছেন টালা থানার প্রাক্তন ওসি অভিজিৎ মণ্ডলও। এরপর তাঁদের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ উঠেছে। এবার যেমন মুখ খুললেন এক ডাক্তার। আসল চিকিৎসককে ‘ভুয়ো’ হিসেবে দাবি করে জেল খাটানোর অভিযোগ আনা হয়েছে সন্দীপ এবং তাঁর ‘বাহিনী’র বিরুদ্ধে।
সন্দীপের (Sandip Ghosh) বিরুদ্ধে মারাত্মক অভিযোগ!
২০২২ সালে নিট পিজি পরীক্ষায় ২৯১৩৭ র্যাঙ্ক করেছিলেন রাজীব রঞ্জন। বিহারের সরকারি মেডিক্যাল কলেজ থেকে এমবিবিএস পাশ করা এই ডাক্তার এই রাজ্যে বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজে পিজি স্তরে ভর্তির জন্য কাউন্সেলিংয়ে যোগ দিয়েছিলেন। সেই সময় কাউন্সেলিং সেন্টার ছিল আরজি কর (RG Kar Hospital)। সেখানেই বাঁধে বিপত্তি!
২০২২ সালের নভেম্বর মাসে কাউন্সেলিংয়ে যোগ দিয়েছিলেন রাজীব। তখন তাঁর এমবিবিএস ডিগ্রি ভুয়ো বলে দাবি করেন আরজি করের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষ (Sandip Ghosh) এবং তৎকালীন ডিন অফ স্টুডেন্টস বুলবুল মুখোপাধ্যায়। সেই সময় এনআরএস থেকে এমবিবিএস পাশ রাহুল কৃষ্ণ নামের এক পরিচিতের দ্বারস্থ হন তিনি। সেই চিকিৎসক আরজি কর কর্তৃপক্ষকে জানান, সেই ডিগ্রি ভুয়ো নয়, সেটি আসল। নথি যাচাইয়ের আবেদন জানান তাঁরা।
আরও পড়ুনঃ ‘ফুলকি’ অতীত, আদৃতও ফেল! নতুন বেঙ্গল টপার কে? TRP তালিকা দেখলে মাথা ঘুরে যাবে!
সেদিন কোনও আর্জি না শুনেই টানা থানার (Tala Police Station) তরফ থেকে রাজীবকে গ্রেফতার করা হয় বলে খবর। গ্রেফতার করা হয় সাহায্য করতে এগিয়ে আসা রাহুল কৃষ্ণকেও। প্রায় বছর দুয়েক সেই মামলা চলার পর শিয়ালদহ আদালতে নির্দোষ প্রমাণিত হন দু’জনে। এমনকি রাজীবের এমবিবিএস ডিগ্রি আসল বলে প্রমাণিত হয়।
এর আগে রাজীবের এমবিবিএস (MBBS) ডিগ্রি বাজেয়াপ্ত করেছিল টালা থানা। বুধবার আদালতের নির্দেশ মতো সেটি নিতে কলকাতায় আসেন ওই চিকিৎসক। তিনি বলেন, ‘ভেরিফিকেশনের সময় আমাদের নথিকে ভুয়ো বলা হয়। আমাদের সিনিয়ররা সরব হলে, আমায় ও আমার সিনিয়রকে গ্রেফতার করা হয়’।
এখানেই না থেকে রাজীব আরও বলেন, ‘পুরো খতিয়ে দেখার আগেই বলে দেন নথি ভুল আছে। বলছে, উনি নাকি ডাক্তার নন। আমি বোঝানোর চেষ্টা করি কোনও সমস্যা নেই। হয়তো নেটের প্রবলেম রয়েছে। এটাও বললাম বাংলা বুঝতে পারে না। একটু দেখে নিন। তবে আমার কথা শুনল না। ভেরিফিকেশনের পর ওরা নাকি বলল নথি ভুয়ো’।
এদিকে এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই সন্দীপ (Sandip Ghosh) এবং টালা থানার ভূমিকা নিয়ে মাথাচাড়া দিয়েছে একগুচ্ছ প্রশ্ন। অভিযোগ ঠিকভাবে যাচাই না করে কেন ওই ডাক্তারি পড়ুয়াকে তড়িঘড়ি গ্রেফতার করা হল? জানা যাচ্ছে, উচ্চশিক্ষা অর্জন না করতে পেরে এরপর অবসাদের শিকার হয়ে পড়েন রাজীব। কেন বিনা অপরাধে তাঁকে গ্রেফতার করা হল? ওই চিকিৎসক পড়ুয়ার ভবিষ্যৎ নষ্ট হওয়ার দায় কার? দেখা দিয়েছে এমনই নানান প্রশ্ন।