বাংলা হান্ট ডেস্কঃ আরজিকর কাণ্ডে (RG Kar Case) অভিযুক্ত সঞ্জয় রায়কে শনিবারই দোষী সাব্যস্ত করেছে শিয়ালদা আদালত। ওই দিনেই ‘ভিসেরা রিপোর্ট’ নিয়ে বিস্ফোরক দাবি করলেন তার আইনজীবী কবিতা সরকার। তিনি দাবি করেছেন, ‘এখনও ভিসেরা রিপোর্ট আমাদের সামনে আসেনি। রিপোর্ট পজেটিভ হলে প্রমাণিত হবে চিকিৎসক আগেই খুন হয়েছিলেন। আমার মক্কেল নির্দোষ।’
আরজিকর কাণ্ডে (RG Kar Case) চাঞ্চল্যকর দাবী সঞ্জয়ের আইনজীবীর
কবিতা দেবীর দাবি তার মক্কেলকে ফাঁসানো হয়েছে। তবে সঞ্জয় তদন্তে সহযোগিতা না করায় সমস্ত রহস্য ফাঁস করা সম্ভব হয়নি বলেও আক্ষেপ করেছেন লিগাল এইড সেলের এই আইনজীবী। শনিবার শিয়ালদহ আদালতের বিচারক অনির্বাণ দাস এই মামলার (RG Kar Case) রায় ঘোষণা করেছেন। তিনি জানিয়েছেন আগামী সোমবার এই মামলায় সাজা ঘোষণা করা হবে। সিভিক ভলেন্টিয়ারকে আরজিকর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তরুণী চিকিৎসকের ধর্ষণ-হত্যাকাণ্ডের মূল অভিযুক্ত হিসেবে দোষী সাব্যস্ত করে বিচারক জানিয়েছেন এই অপরাধের জন্য তার সর্বনিম্ন ১০ বছরের কারাদণ্ড অথবা সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড হতে পারে।
আরজি কর মামলায় (RG Kar Case) দোষী সাব্যস্ত হওয়ার পর গতকাল কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে সঞ্জয় দাবী করেছিল, তাকে নাকি ফাঁসানো হয়েছে। তার কথায়, ‘আমার গলায় রুদ্রাক্ষের মালা আছে। রুদ্রাক্ষের মালা নিয়ে এই অপরাধ করব! আমি যদি এই অপরাধ করতাম তাহলে রুদ্রাক্ষের মালা ছিড়ে পড়ে যেত। স্যার আপনি বুঝতে পারছেন নিশ্চয়ই যে আমাকে পুরো ফাঁসানো হচ্ছে।’ ওই একই সুরে তার আইনজীবী কবিতাদেবীও বলেছেন, ‘ও যদি এটা করত তাহলে রুদ্রাক্ষ ছড়ানো ছিটানো পাওয়া যেত। আমার মক্কেলের বিরুদ্ধে সরাসরি কোন প্রমাণ মেলেনি। সবটাই পারিপার্শ্বিক প্রমাণ। যা দিয়ে কাউকে দোষী সাব্যস্ত করা কঠিন।’
ভিসেরা রিপোর্ট নিয়েও গতকাল বিস্ফোরক দাবি করেছেন অ্যাডভোকেট কবিতা দেবী। তিনি বলেছেন, ‘এখনও পর্যন্ত রিপোর্ট প্রকাশ্যে আসেনি। এই রিপোর্ট পজেটিভ আসলে দেখতে হবে যে চারজন চিকিৎসক মেয়েটির সঙ্গে ছিল তারা ওকে কি খাইয়েছিল? কারণ রিপোর্ট পজিটিভ আসলে প্রমাণ হবে মেয়েটির মৃত্যু আগে হয়েছিল। আমার মক্কেল দোষী নয়’। তবে প্রশ্ন উঠছে নির্যাতিতার নিপল সোয়াব সঞ্জয়ের সঙ্গে মিলে গিয়েছিল কীভাবে? তা নিয়ে যদিও খোলসা করে কিছু বলতে পারেননি সঞ্জয়ের আইনজীবী।
আরও পড়ুন: ‘হিন্দুদের ইচ্ছাতেই চলবে দেশ!’ ‘বিতর্কিত’ বিচারপতির বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে ১৩ আইনজীবী
গতকাল আরজি কর মামলায় (RG Kar Case) রায়দান শুরু হওয়ার আগে আদালতের লকআপে সঞ্জয়ের সঙ্গে দেখা করেছিলেন তার আইনজীবী। সেখানে সঞ্জয় নাকি দাবি করেছিল, ‘ আমি তো গরিব, পয়সা নেই। আমার এত প্রতিপত্তি নেই। একটা ফোন কল করে আমাকে ফাঁসিয়ে দেওয়া হয়েছে’। তার এই দাবির পরে প্রশ্ন উঠতে শুরু করে। কে ওই ফোন কল করেছিল? কে ফাঁসিয়েছে তাকে?
আইনজীবী কবিতা সরকার নাম নিয়েই দাবি করেছেন কলকাতা এদিন পুলিশের ওয়েলফেয়ার সেলের দায়িত্বপ্রাপ্ত অনুপ দত্ত ফোন করে ডেকেছিল সঞ্জয় রায়কে। ঘটনার দিন সঞ্জয় প্রথমে থার্ড ফ্লোরে গিয়েছিল। সিসিটিভি ফুটেছে তার হাবভাব দেখে সেকথা বোঝা গিয়েছে।’ একই সাথে লিগালসেলের কিছু গাফিলতি নিয়েও আক্ষেপ করেছেন কবিতা সরকার। তিনি বলেছেন, ‘আমরা কোন ডিফেন্স সাক্ষ্য আনিনি। আরও অনেক কাজ পুঙ্খানুপুঙ্খ করতে পারিনি।’ আইনজীবীর দাবি হাইকোর্টে গেলে সেগুলো করা যেতে পারে। যদিও কবিতা সরকার জানিয়েছেন সঞ্জয় তার সাথে কোন সহযোগিতা করছে না। বারবার নিজেকে নির্দোষ বলে দাবি করলেও কারও নাম প্রকাশ করছে না সে।