অস্ত্রের ব্যবহার নয়,শান্তির বার্তা দিতে দুর্গার হাতে পদ্ম ফুল। শান্তিনিকেতনে ছোটো আদিবাসী গ্রাম,সোনারঝুড়ি বনেরপুকুর ডাঙায় শিল্পী আশিস ঘোষের হাতের ছোঁয়ায় এই অভিনব দূর্গা প্রতিমা তৈরি হয়। এই বছর এই দূর্গাপূজা ১৮ বছরে পা দিচ্ছে।
সৌতিক চক্রবর্তী, শান্তিনিকেতন,বীরভূমঃ দূর্গা পূজোতে প্রতি বছরের মতো এই বছরেও শান্তিনিকেতনে ছোটো আদিবাসী গ্রাম,সোনারঝুড়ি বনেরপুকুর ডাঙায় অন্য চিত্র দেখা যাচ্ছে। সেখানে,মা দুর্গার হাতে অস্ত্র ব্যবহার না করে শান্তির বার্তা মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে পদ্ম ফুলই দুর্গা প্রতিমার হাতে ব্যবহার করেন শিল্পী। থাকে না কোনও অস্ত্রের ব্যবহার। শান্তির বার্তা ছড়িয়ে দেওয়াই মূল লক্ষ্য এই দুর্গাপুজো কমিটির।
পূজো কমিটির সদস্যরা জানান, এই পূজোটি অনেকের কাছে পরিচিত হিরালিনী দূর্গা পূজা নামে। আর এই পূজোটি স্থানীয়দের কাছে বাঁধন দাসের পুজো নামেও পরিচিত। ২০০১ সাল থেকে সোনারঝুড়ি জঙ্গলের মধ্যে হয়ে আসছে এই দূর্গা পুজোটি।
যখন,২০০১ সালে পুজোর মুখোমুখি সময়ে আমেরিকা দেশে টুইন টাওয়ারে ভয়াবহ বিস্ফোরণ ঘটে তখনই একটা অশান্তির বাতাবরণ তৈরি হয় সারা দেশ জুড়ে। এই অশান্তির সময়ে হিরালিনী দুর্গাপূজোর সূচনা করেন শিল্পী বাঁধন দাস। তিনি নিজের দুই হাতে প্রতিমা গড়েন। টুইন টাওয়ারে ভয়াবহ
বিস্ফোরণের ঘটনার জেরে অশান্তির পৃথিবীতে শান্তির বার্তা দিতে এই পূজোতে দেবীর হাতে অস্ত্র না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন শিল্পী বাঁধন দাস। তার আদলে দেবীর হাতে তুলে দেন পদ্ম। ২০০২ সালে এই শিল্পী পরলোকগমন করেন তারপর থেকে তাঁর ছাত্ররা এই পুজোটি সুন্দর ভাবে চালিয়ে যায়। তাঁদের সঙ্গে এই পূজোতে অংশগ্রহণ করছেন এলাকার বাসিন্দারাও।
শান্তিনিকেতনে সোনাঝুরি লাগোয়া আদিবাসী এলাকা সহ বেশ কিছু গ্রামের মানুষজন শিল্পী আশিস ঘোষের সঙ্গে প্রতিমা নির্মাণের কাজে সাহায্য করেন। শিল্পী আশিস ঘোষ বলেন,‘বহু আগে আদিবাসীদের দুর্গাপুজোয় ছিলো একটু অন্যরকম। পুজোর চারদিন এই সোনারঝুড়ি জঙ্গলের মধ্যে চলে আদিবাসী সাঁওতালি নৃত্য, গান,বাউল প্রভৃতি। এই পূজোতে এই এলাকার মানুষেরা পাঁচদিন ধরে অনুষ্ঠানে মেতে থাকেন।’