বাংলা হান্ট ডেস্ক : কথিত আছে এই শ্রাবণের পুণ্যতিথিতে শিবের (Lord Shiva) মাথায় জল ঢাললে নাকি সমস্ত মনস্কামনা পূর্ণ হয়। আর তাই তো এই পূণ্যতিথিতে মহাদেবের দর্শনের অভিপ্রায়ে তারকেশ্বরে (Tarakeswar) গেলেন লাখ লাখ ভক্ত। বাংলার সব থেকে বিখ্যাত শৈবতীর্থ হল এই মন্দির। মহাদেবের জন্মমাস বলে খ্যাত শ্রাবণে তাই সব ভক্ত ভিড় জমায় এই মন্দিরে।
এই মাসে পূন্যার্থীরা গঙ্গার ঘাট থেকে জল নিয়ে বাঁকে করে পায়ে হেঁটে তারকেশ্বর যাত্রা করেন। যদিও সারাবছরই ভক্তদের ভিড় থাকে এখানে তবে শ্রাবণে মানুষের সমাগম একটু বেশি। ষন্ডেশ্বর তলা ঘাটে স্নান করে কপালে তিলক কেটে পিতলের কলসিতে জল ভরে শুরু হয় পদযাত্রা। পথের কষ্ট লাঘব করতে চলে শিবের নামের জপ।
এরকমই পূণ্যার্থীদের সাথে পা মেলালেন সারফুল আলি। শিবের কাছে মানসিক ছিল তাই শ্রাবণ মাসে তারকেশ্বরে শিবের মাথায় জল ঢালতে চলেছেন তিনি। এই বিরল ঘটনা দেখে অবাক হয়েছেন অনেকেই। মুসলিম ধর্মাবলম্বী সারফুল কী কারণে শিবের চরণে আশ্রয় নিলেন? প্রশ্ন তুলেছেন অনেকেই। এই প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে সারফুল বলেন, ‘ইশ্বর আল্লা সবই এক। মানুষ তাতে বিভেদ দেখে।’
গত মঙ্গলবার রাতে চুঁচুড়া এম জি রোড জেলেপাড়া থেকে কয়েকজন বন্ধু মিলে তারকেশ্বর জল ঢালতে রওনা দিয়েছেন সারফুল। চুঁচুড়া ষন্ডেশ্বর তলা ঘাট থেকে কলসি করে জল নিয়ে এগিয়ে চলেছেন রাজু ,অক্ষয় ,সুরাজ প্রসেনজিৎ , বাসুদেব, উদয় ,শেখ সারফুল আলীরা। তাদের কেউ রাজমিস্ত্রি তো কেউ আবার মাছ বিক্রেতা। কেউ কেউ আবার করেন সেলসম্যানের কাজ।
আরও পড়ুন: একটি টিকিটেই ৮ বার ভ্রমণ! ভারতীয় রেলের এই সুবিধার কথা জানলে মাথা ঘুরে যাবে
ভিন্ন ধর্মাবলম্বী হলেও মিলেমিশেই থাকেন তারা। তাদের মধ্যে নেই কোন ধর্মীয় ভেদাভেদ। সারফুল-রাজু-অক্ষয়দের মতে, সনাতন ধর্ম তো শান্তিরই কথা বলে, হিংসার কথা বলে না। তাছাড়া সনাতন ধর্মমতে দেবাদিদেব মহাদেব তো সকলেরই। তার আরাধনা করার জন্য কোন আলাদা ধর্মের অনুসারী হতে হয়না। মন থেকে ডাকলেই ভক্তের ডাকে সাড়া দেন আদিদেব।