বাংলাহান্ট ডেস্ক: রঙের উৎসব শেষ হতেই শোকের ঘন অন্ধকারে ঢেকেছে বলিউড। হোলির পরের দিনই ঝড়ের মতো এসে পৌঁছেছে খ্যাতনামা অভিনেতা সতীশ কৌশিকের (Satish Kaushik) মৃত্যু সংবাদ। আট থেকে আশি সব্বার প্রিয় অভিনেতা ছিলেন তিনি। হাসিখুশি অভিনেতার এমন আকস্মিক মৃত্যু মেনে নিতে পারছেন না কেউই। তাঁর অবর্তমানে বারেবারে ফিরে আসছে তাঁর সঙ্গে জড়িয়ে থাকা সমস্ত স্মৃতি।
এমনি এক কাহিনি জড়িয়ে রয়েছে অভিনেত্রী নীনা গুপ্তার (Neena Gupta) সঙ্গেও। সেই কাহিনিটা জানলেই বুঝতে পারবেন বাস্তবে কতটা বড় মনের মানুষ ছিলেন সতীশ কৌশিক। যখন কেউ ছিল না তাঁর পাশে, তখন সবার বিরুদ্ধে গিয়ে নীনার হয়ে কথা বলেছিলেন তিনি। নীনাকে স্বীকৃতি দিতে চেয়েছিলেন সতীশ।
এ কাহিনি অবশ্য অনেক আগের। সতীশ কৌশিক এবং নীনা দুজনেই খুব ভাল বন্ধু ছিলেন। তখনো অভিনেতা বিয়ে করে উঠতে পারেননি। অন্যদিকে প্রাক্তন ওয়েস্ট ইন্ডিজ ক্রিকেটার ভিভ রিচার্ডসের প্রেমে পড়ে বিয়ের আগেই অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েছিলেন অভিনেত্রী। সে সময়ে দাঁড়িয়ে নায়িকাদের বিয়ের আগে গর্ভবতী হয়ে পড়াটা সমাজের চোখে কেচ্ছা স্বরূপ ছিল।
পদে পদে কটাক্ষ, সমালোচনা শুনে শুনে বিধ্বস্ত হয়ে গিয়েছিলেন নীনা। সে সময়ে তাঁর পাশে এসে দাঁড়িয়েছিলেন সতীশ। নীনার প্রশংসা করে বিয়ের প্রস্তাব দিয়েছিলেন তিনি। এত কুৎসা সহ্য করে তিনি একা থাকবেন কী করে তাই নিয়ে চিন্তিত ছিলেন সতীশ।
নীনাকে তিনি বলেছিলেন, ‘তুই চিন্তা করছিস কেন, আমি তো আছি। বাচ্চার গায়ের রঙ শ্যামবর্ণ হলে আমি বিয়ে করব, তাহলে আর কারোর কোনো সন্দেহ থাকবে না’। তাঁর কথায় চোখে জল চলে এসেছিল নীনার। কিন্তু তিনি সসম্মানেই বন্ধুর প্রস্তাব ফিরিয়ে দিয়েছিলেন। অবিবাহিত অবস্থাতেই মেয়ে মাসাবার জন্ম দিয়েছিলেন নীনা। তবে সতীশের সঙ্গে তাঁর বন্ধুত্ব আরো গভীর হয়ে গিয়েছিল।
পরবর্তীকালে ১৯৮৫ সালে শশির সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন সতীশ। নয় বছর পর এক পুত্রসন্তান হয় তাঁদের। কিন্তু ভাগ্যের পরিহাসে দু বছর পর ছেলেকেও হারান সতীশ শশি। শেষে ৫৬ বছর বয়সে সারোগেসির মাধ্যমে মেয়ে হনসিকার জন্ম হয়। মাত্র ১০ বছর বয়সেই বাবাকে হারাল হনসিকা।