বাংলাহান্ট ডেস্ক: অপরিশোধিত তেল উৎপাদনে রাশ টানার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সৌদি আরব (Saudi Arabia)। এর জেরে গোটা পৃথিবীতে জ্বালানি সঙ্কট দেখা দিতে পারে বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। বিশ্বের একাধিক দেশই আরবের এই সিদ্ধান্তের ফলে সমস্যায় পড়বে। বাদ যাবে না ভারতও। এ দেশেও জ্বালানির সঙ্কট দেখা দিতে পারে বলে জানা গিয়েছে। চলতি বছরের দ্বিতীয় ভাগে এর প্রভাব দেখা যাবে বলে জানিয়েছেন আন্তর্জাতিক শক্তি সংস্থার (IEA) এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর ফতেহ বিরোল।
জানা গিয়েছে, সৌদি আরব, রাশিয়া এবং অন্যান্য ‘ওপেক’ দেশগুলি তেলের উৎপাদন কমিয়ে আনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ওপেক অর্থাৎ অর্গানাইজেশন অফ দ্য পেট্রোলিয়াম এক্সপোর্টিং কান্ট্রিজ। এই সংগঠনের সদস্য দেশগুলি তাদের তেল উৎপাদন কমিয়ে ফেলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এর ফলে চলতি বছরের দ্বিতীয়ার্ধে ভারতে তেল আমদানি করার মূল্য দ্বিগুণ হয়ে যাবে। যার ফলে ভারতে লাফিয়ে বাড়তে পারে তেলের দাম।
শুধু তাই নয়, বিশ্বজুড়ে চাপে থাকবে তেলের বাজার। ফতেহ বিরোল বলেছেন, ভারত সাধারণত জ্বালানি আমদানি করে। দেশের জ্বালানি চাহিদা মেটাতে বেশিরভাগ জ্বালানিই বাইরে থেকে আমদানি করা হয়। তাই সৌদি আরব এবং রাশিয়ার সিদ্ধান্তের প্রভাব পড়বে ভারতের উপরও। ভারতে জ্বালানির দাম আরও বাড়লে সেই চাপ সরাসরি পড়বে সাধারণ মানুষের উপর। একইসঙ্গে চাপ পড়বে ভারতের অর্থনীতির উপরও। বিরোল জানিয়েছেন, তেলের দামের উপর চাপ এবং সরবরাহ নিরাপত্তা উদ্বেগ আগামী বছরগুলিতে কমবে।
তার কারণ বর্তমানে আরও বেশি সংখ্যক দেশ প্রাকৃতিক গ্যাস উৎপাদন এবং রফতানি করছে। এর ফলে বাজারে বৃদ্ধি পাচ্ছে এলিপিজি-র সরবরাহ। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের পর থেকে বিশ্বের তেলের বাজারে উল্লেখযোগ্য একটি জায়গা নিয়েছে ভারত। অন্যদিকে, রশিয়া থেকেও অপরিশোধিত তেল আমদানি করার হার বাড়িয়ে দিয়েছে ভারত। এছাড়াও ডিজেল এবং জেট ফুয়েলের মতো পরিশোধিত তেলের মাধ্যমে ইউরোপীয় দেশগুলিতে প্রবেশ করেছে।
একটি রিপোর্টে বলা হয়েছে, গত বছরের তুলনায় ভারত তেলের আমদানি ৩৩ গুণ বাড়িয়েছে। আইইএর এক শীর্ষ কর্মকর্তা বলেছেন যে এটি একটি বৈধ পদক্ষেপ। ফতেহ বিরোল আরও বলেছেন যে ভারত বাণিজ্য ও আর্থিক নিয়মের ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক নিয়ম ও বিধি অনুসরণ করছে। পাশাপাশি, ভারত স্বচ্ছভাবে এবং অন্যদের তুলনায় কম ভর্তুকি মূল্যে অপরিশোধিত তেল আমদানি করে লাভ করছে। এটিকে বৈধ পদক্ষেপ হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন ফতেহ বিরোল।