বাংলা হান্ট ডেস্ক : টালমাটাল রাজনীতি এবং ভয়ংকর অর্থনৈতিক সংকটে জেরবার পাকিস্তান (Pakistan)। শ্রীলঙ্কার (Srilanka) মতোই দেউলিয়া হওয়ার চরম সীমায় এসে গিয়েছে দেশটি। এই সংকট থেকে মুক্তি পেতে সৌদি আরবের (Saudi Arabia) সহায়তা বারবার চেয়ে আসছিল ক্ষমতাসীন শরিফ-জারদারি সরকার। এত চেষ্টার ফল হাতনাতে পেল পাকিস্তান। সৌদি আরবের ক্রাউন প্রিন্স মহম্মদ বিন সালমান পাকিস্তানে ১০ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের বড় ঘোষণা করলেন।
জানা যাচ্ছে, সৌদি ফান্ড ফর ডেভেলপমেন্টকে পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় ব্যাংকে সৌদি আমানত বাড়িয়ে ৫ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছানোর বিষয়ে পর্যালোচনার করার নির্দেশ দেন যুবরাজ মুহাম্মদ। গত বছরের আগস্টেই পাকিস্তানে বিনিয়োগের ঘোষণা করে সৌদি আরব। এছাড়া পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় ব্যাংকে সৌদি আমানতের মেয়াদ ডিসেম্বরে বাড়ানো হয়।
সৌদি প্রেস এজেন্সি মঙ্গলবার ভোরে বলেছে, পাকিস্তান এবং এর জনগণের অর্থনীতিকে সমর্থন করার ক্ষেত্রে সৌদি আরবের অবস্থান নিশ্চিত করেছেন যুবরাজ মুহাম্মদ। পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর গত বছরের এপ্রিলে প্রথম বিদেশ সফরে সৌদি আরব গিয়েছিলেন শাহবাজ শরিফ। ওই সফরে জেদ্দায় সৌদি যুবরাজের সঙ্গে একান্তে বৈঠক করেন তিনি। সে সময় দুই দেশের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের বিষয়ে আলোচনা হয়।
প্রথম সফরে সৌদি আরবে গেলে শাহবাজ শরিফকে গার্ড অব অনার দেওয়া হয়। তাকে স্বাগত জানান সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান। দুই নেতার বৈঠকের পর পাকিস্তান জানায়, ‘প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ যুবরাজ মুহাম্মদ বিন সালমানের সঙ্গে দেখা করেছেন। তাঁদের বৈঠকে দুই দেশের বাণিজ্য ও ব্যবসায়িক সম্পর্কের ক্ষেত্র বৃদ্ধি, বিনিয়োগ বৃদ্ধি ও সৌদি আরবে পাকিস্তানের জনশক্তির জন্য সুযোগ সৃষ্টিসংক্রান্ত বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।’
পাকিস্তানের বর্তমান রিজার্ভ ৬০০ কোটি ডলারেরও কম, যা গত আট বছরে সর্বনিম্ন। এ ছাড়া গত বছরের ভয়াবহ বন্যায় ভারতের পড়শি দেশে ৩০০ কোটি ডলারেরও বেশি ক্ষতি হয়েছে। চলতি সপ্তাহের শুরুতে পাকিস্তানের অর্থমন্ত্রী ইসহাক দার সংবাদ সম্মেলন করে জানান, অর্থনীতিতে কিছুটা স্বস্তি দিতে পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় ব্যাংকে আমানত হিসেবে কিছু অর্থ রাখবে সৌদি আরব। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা মনে করছেন, দেউলিয়াত্ব ঠেকাতে সৌদির সাহায্য প্রয়োজন পাকিস্তানের।
২০২১ সালের নভেম্বরে ইমরান খানের শাসনামলে ইসলামাবাদকে ৩০০ কোটি ডলার সহায়তা দেয় রিয়াদ। গত কয়েক মাসে পাকিস্তানকে আরও অর্থ দিয়েছে সৌদি। গত এপ্রিলে ক্ষমতা নেওয়ার পর অর্থনৈতিক সহায়তা ও বিনিয়োগের জন্য মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে সফর করেছিলেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ। ইসলামাবাদ জানিয়েছে, গত বছরের এপ্রিল থেকে নভেম্বর পর্যন্ত পাকিস্তানকে ৯০ কোটি ডলার সহায়তা দিয়েছে সৌদি। এ ছাড়া দেশটি থেকে ৫০ কোটি ডলারের তেল আমদানি করেছে পাকিস্তান।