বাংলা হান্ট ডেস্কঃ আরজি কর কাণ্ডের প্রতিবাদে ২৭ আগস্ট নবান্ন অভিযানের ডাক দিয়েছিল পশ্চিমবঙ্গ ছাত্র সমাজ। সেই কর্মসূচি ঘিরে উত্তাল হয়ে ওঠে বাংলা। আন্দোলনকারীদের ধরপাকড় থেকে শুরু করে জলকামান, কাঁদানে গ্যাসের ব্যবহার- সবকিছুর সাক্ষী থেকেছে রাজ্য। এরপর বৃহস্পতিবার বিজেপির ডাকা বাংলা বনধেও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে রাজ্যের নানান প্রান্ত। এবার এই দুই কর্মসূচিতে পুলিশি ‘অত্যাচার’এর প্রতিবাদে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনে চিঠি লিখলেন সৌমিত্র খাঁ (Saumitra Khan)।
সৌমিত্রর (Saumitra Khan) এক পদক্ষেপে চাপ বাড়ল মমতার?
বৃহস্পতিবার বিষ্ণুপুরের বিজেপি সাংসদ তথা রাজ্য বিজেপির সহ সভাপতি সহ মোট ৬ জন জনৈক ব্যক্তি জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের (National Human Rights Commission) ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানকে একটি চিঠি দিয়েছেন। পশ্চিমবঙ্গের ডিজিপির বিরুদ্ধে ২৭ আগস্ট এবং ২৮ আগস্ট শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদকারীদের ওপর অবৈধ ও নির্মমভাবে মারধর করার অভিযোগ এনেছেন তাঁরা।
- চিঠিতে কী লেখা হয়েছে?
সৌমিত্র (Saumitra Khan) সহ বিশিষ্টজনদের দেওয়া এই চিঠিতে লেখা হয়েছে, ‘পশ্চিমবঙ্গ সরকার পরিচালিত একটি হাসপাতালে মহিলা চিকিৎসকের ধর্ষণ, খুনের ঘটনায় গোটা দেশে ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে। এই মর্মান্তিক ঘটনা পুরো দেশকে কাঁপিয়ে দিয়েছে। এই ঘটনার প্রতিবাদের পাশাপাশি ন্যায়বিচারের দাবি জানানো হচ্ছে। এই কাণ্ডের ফলে রাজ্য সরকারের আসল চেহারা বাইরে বেরিয়ে এসেছে। সেই সঙ্গেই মহিলা মুখ্যমন্ত্রী চালিত এক রাজ্যে মহিলারা সুরক্ষিত নয় এটাও প্রকাশ্যে এসেছে’।
আরও পড়ুনঃ ‘নিজেদের মানসিকতা বদলান’! হাইকোর্টের তোপের মুখে রাজ্য, তুলোধোনা প্রধান বিচারপতির
চিঠিতে লেখা হয়েছে, আরজি করের ঘটনার প্রেক্ষিতে শান্তিপূর্ণভাবে প্রতিবাদের জন্য গত ২৭ আগস্ট বিভিন্ন ছাত্র সংগঠনের তরফ থেকে নবান্ন অভিযানের (Nabanna Abhijan) ডাক দেওয়া হয়েছিল। রাজনৈতিক যোগসূত্র ছাড়া সকলে হাতে পতাকা নিয়ে হাঁটছিল। কিন্তু পুলিশের তরফ থেকে এই শান্তিপূর্ণ আন্দোলনকারীদের ওপর নির্মমভাবে অত্যাচার করা হয়। আন্দোলন ছত্রভঙ্গ করতে কাঁদানে গ্যাস, জলকামানের ব্যবহার করে পুলিশ।
এই ঘটনার প্রেক্ষিতে ২৮ আগস্ট ১২ ঘণ্টার বাংলা বনধের (Bangla Bandh) ডাক দেয় বিজেপি। এর বিরুদ্ধে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিল রাজ্য, তবে কোনও সুরাহা হয়নি। সৌমিত্রদের দেওয়া চিঠিতে লেখা হয়েছে, ’২৮ আগস্ট যখন ভারতীয় জনতা পার্টির কার্যকর্তারা শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলন করছিলেন, তখন তাঁদের ওপর লাঠিচার্জ করা হয়। জলকামান, কাঁদানে গ্যাস ছোঁড়া হয়। শুধুমাত্র পুলিশ আধিকারিকরাই নন কয়েকজন দুষ্কৃতী আচমকাই আন্দোলনকারীদের ওপর পাথর ছুঁড়তে শুরু করে’।
ফাল্গুনী পাত্র, প্রিয়াংশু পাণ্ডে, সঞ্জয় বণিকদের ওপর কীভবে অত্যাচার করা হয়েছে সেকথাও তুলে ধরা হয়েছে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনে লেখা চিঠিতে। একইসঙ্গে অভিযোগ, শান্তিপূর্ণ আন্দোলনকারীদের এভাবে মারধর করে ভারতীয় সংবিধানের ১৯ এবং ২১ নং ধারার মৌলিক অধিকার ভঙ্গ করা হয়েছে। নিজেদের বক্তব্যের স্বপক্ষে একগুচ্ছ ছবি তুলে ধরে সৌমিত্রদের (Saumitra Khan) আর্জি, পশ্চিমবঙ্গে শান্তি ফিরিয়ে আনতে যথাযথ পদক্ষেপ নিক কমিশন।
এদিন জাতীয় মানবাধিকার কমিশনে চিঠি দেওয়ার পাশাপাশি সংবাদসংস্থা ANI-এর মুখোমুখি হয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সম্বন্ধে একটি বিস্ফোরক দাবিও করেন সৌমিত্র (Saumitra Khan)। তিনি বলেন, ‘২০২৬ সালে মমতা ক্ষমতায় এলে উত্তর পূর্ব করিডোর (শিলিগুড়ি) বন্ধ করে দেবেন। উনি রাজনীতির জন্য সব করতে পারেন। রাজনীতির জন্য আতঙ্কবাদীদেরও থাকার বন্দোবস্ত করে দিতে পারেন’।