বাংলা হান্ট ডেস্কঃ “কুণাল ঘোষ আমাদের মামা। বিজেপিতে জায়গা তৈরি রাখছি। তাড়াতাড়ি চলে আসুন”, একদা সাপে-নেউলে সম্পর্ক থাকলেও এদিন সম্পূর্ণ ১৮০° ঘুরে তৃণমূল মুখপাত্রকে নিজের দলে আমন্ত্রণ করে বসলেন বিজেপি (BJP) সাংসদ সৌমিত্র খাঁ (Saumitra Khan)। একইসঙ্গে কুণালবাবুকে বিজেপিতে যোগ দেওয়ার কথা বলে বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে একাধিক জল্পনারও সৃষ্টি করলেন তিনি।
উল্লেখ্য, অতীতে কুণাল ঘোষ বনাম সৌমিত্র খাঁ-র দ্বৈরথ প্রায় প্রত্যেকেরই জানা। কখনো তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগড়ে দিয়েছেন সৌমিত্রবাবু, তো অপরদিকে আবার তার পাল্টা দিতে আক্রমণের ঝাঁজ ক্রমশ বাড়িয়ে তুলেছেন কুণাল ঘোষ। বঙ্গ রাজনীতিতে এ চিত্রটি অতীতে বারংবার ধরা পড়ে। তবে এদিন কি এমন হলো যে, তৃণমূল কংগ্রেস নেতাকে তাঁর ‘মামা’ বলে আখ্যা দিয়ে বসলেন সৌমিত্রবাবু?
শুধু তাই নয়, পরবর্তীতে বিজেপিতে যোগদান করার জন্য আহ্বানও জানান তিনি। এর পিছনে অবশ্য বেশ কয়েকটি কারণ দেখছেন বিশেষজ্ঞরা। আসলে সাম্প্রতিক সময়ে বাংলার বুকে উঠে আসা একের পর এক দুর্নীতি মামলায় ব্যাকফুটে শাসক দল। পার্থ চট্টোপাধ্যায় থেকে অনুব্রত মণ্ডলের গ্রেফতারি মাঝে বিরোধীরা একের পর এক কটাক্ষ ছুড়ে দিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেসকে। অপরদিকে আবার পার্থ চট্টোপাধ্যায় প্রসঙ্গে একাধিক বিতর্কিত মন্তব্যের জেরে দলের ক্ষোভের মুখে পড়েছেন কুণাল। এমনকি কুণালকে প্রকাশ্যে মন্তব্য করতেও না বলা হয়েছে। যার কারণে এখন কুণালবাবু নিজের মুখ বন্ধ করেই রাখেন। কার্যত বলা ভাল, কুণাল ঘোষ এখন নিজের দলে কোণঠাসা।
উল্লেখ্য, সম্প্রতি কুণালের বক্তব্য রাখার উপর নিষেধাজ্ঞাও জারি করে দল। এরপরই বিগত কয়েকদিন ধরে যোগাযোগ একপ্রকার বন্ধ করে দিয়েছেন তিনি আর তার মাঝে সৌমিত্র খাঁয়ের ‘মামা’ প্রসঙ্গ বঙ্গ রাজনীতিতে যে যথেষ্ট জল্পনার সৃষ্টি করেছে, তা বলা বাহুল্য।
প্রসঙ্গত, কুণাল ঘোষের বক্তব্যের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করার পর বেশ কয়েকদিন তাঁকে রাজনীতিতে সক্রিয় দেখা গেলেও গত ২-৩ দিনে চিত্রে বেশ খানিকটা বদল এসেছে। এর মাঝে এদিন সৌমিত্র খাঁ বলেন, “কুণাল ঘোষ আমাদের মামা। বিজেপিতে জায়গা তৈরি রাখা হয়েছে। আপনি আমাদের দলে চলে আসুন। এরপর জায়গা থাকবে না।” একইসঙ্গে কুণালবাবুকে ‘বাংলার মামা’ বলেও সম্বোধন করেন তিনি।
এখন প্রশ্ন উঠে গিয়েছে, বিজেপি নেতার আচমকা কুণাল-প্রীতির পিছনে কারণ কি? বিশেষত, গত বছর বিধানসভা নির্বাচনে সৌমিত্রবাবুর স্ত্রী সুজাতা মণ্ডলের তৃণমূলে যোগ দেওয়ার পর সৌমিত্র-কুণাল দ্বন্দ্ব বহুগুনে বৃদ্ধি পায়। তবে একটি মহল আবার দাবি করেছে, বর্তমান রাজনীতিতে যেভাবে একের পর এক নেতারা দলবদল করে চলেছে, তাতে কিছুই বলা যায় না।