বাংলাহান্ট ডেস্ক: নিত্যদিন কতই না কটুক্তি, সমালোচনার মুখে পড়তে হয় তারকাদের। সোশ্যাল মিডিয়ায় উঠতে বসতে নোংরা কটাক্ষ তো ভেসে আসেই, ইন্ডাস্ট্রিতেও নামী পরিচালক প্রযোজকদের লালসাময় দৃষ্টির শিকার হন অভিনেত্রীরা। বিষয়টা নিয়ে সম্প্রতি মুখ খোলেন বাঙালি অভিনেত্রী সায়ন্তনী ঘোষ (Sayantani Ghosh)। যথেষ্ট পরিচিত মুখ হয়েও শরীর নিয়ে অশ্লীল মন্তব্যের মুখে পড়তে হয়েছিল তাঁকে।
বহু বছর ধরে অভিনয় এবং মডেলিং জগতের সঙ্গে যুক্ত থেকেছেন সায়ন্তনী। সরাসরি দেখেছেন বলিউডের অন্ধকার দিকটাকেও। সংস্পর্শে এসেছেন বিতর্কিত কাস্টিং কাউচের। বহুবার ‘বডি শেমিং’ এর শিকার হয়েছেন তিনি। সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে ইন্ডাস্ট্রির দুমুখো রূপের মুখোশ খুলে দিয়েছেন সায়ন্তনী।
শুধু যে পুরুষদেরই লালসার শিকার হতে হয় মহিলাদের এমনটা কিন্তু নয়। সায়ন্তনীর কথা থেকেই জানা যায়, আসলে মহিলারাই কিন্তু মহিলাদের সবথেকে বড় শত্রু। সায়ন্তনী জানান, সে সময়ে তিনি মাত্র ১৮-১৯ বছর বয়সের এক তরুণী। মডেলিং জগতে পরিচয় বানানোর চেষ্টায় আছেন।
সে সময়ে এক মহিলা তাঁর শরীর নিয়ে কুরুচিকর মন্তব্য করেছিলেন। স্তনযুগলের আকার নিয়ে অশ্লীল কটাক্ষ শুনতে হয়েছিল সায়ন্তনীকে। এমনকি তাঁকে এমন প্রশ্নও করা হয়েছিল, তাঁর যেহেতু স্তনের আকার বড় তার মানেই তিনি যৌনতায় সক্রিয়।
সায়ন্তনী বলেন, “উনি ভেবেছিলেন যৌনজীবন সক্রিয় হলেই স্তনযুগলের আকার বেড়ে যায়। আমি বুঝতেও পারিনি কথাটার কী অর্থ ছিল। সে সময়ে আমি কুমারী ছিলাম। এই ধরনের বিষয়গুলো চিরতরে মনের উপরে একটা দাগ ফেলে দেয়।” দিনের পর দিন মহিলাদের শরীর নিয়ে নোংরা মন্তব্য করে আসছেন অনেকে। আর তাতে ইন্ধন জোগাচ্ছে সোশ্যাল মিডিয়ার কিছু কুরুচি সম্পন্ন মানুষ।
এখানেই ভোগান্তির শেষ নয়। বলিউডের এক প্রযোজকের নজরেও পড়েছিলেন সায়ন্তনী। তখন সবে সবে মুম্বইয়ে পা রেখেছিলেন তিনি। এক প্রযোজক তাঁকে প্রস্তাব দেন তাঁর সঙ্গে কিছুক্ষণ ‘সময় কাটানো’র, যাতে তিনি সায়ন্তনীকে চরিত্রটি বোঝাতে পারেন। এ বিষয়ে এক অভিনেত্রীর নামও উল্লেখ করে ওই প্রযোজক জানিয়েছিলেন, কীভাবে অযোগ্য হওয়া সত্ত্বেও তাঁকে চরিত্রটির জন্য মানানসই করে তুলেছিলেন তিনি।
সায়ন্তনী বলেন, কাস্টিং কাউচের অভিজ্ঞতা মানুষকে ভেতর থেকে নাড়িয়ে দেয়। মনে প্রশ্ন ওঠে, কেন এই ধরনের লালসার শিকার হতে হচ্ছে? এর জন্য দায়ী কে? অভিনেত্রী জানান, তিনি এই অবসাদগুলো কাটিয়ে উঠতে পেরেছিলেন। আজ তিনি ইন্ডাস্ট্রির একজন পরিচিত মুখ। নিজের যোগ্যতায় এই উচ্চতায় পৌঁছেছেন তিনি।