বাংলা হান্ট ডেস্কঃ রাজ্যের একের পর এক দুর্নীতির (Scam) তদন্তে আটঘাট বেঁধে ময়দানে নেমেছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। সম্প্রতি আরও বেড়েছে গোয়েন্দাদের তৎপরতা। গত সপ্তাহেই নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় ইডির হাতে গ্রেফতার হয়েছেন ‘কালীঘাটের কাকু’ ওরফে সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র। অন্যদিকে এই উত্তপ্ত পরিস্থিতিতেই গত শুক্রবার এবার কলকাতায় (Kolkata) ইডি ডিরেক্টর (ED Director) সঞ্জয় কুমার মিশ্র। সেই থেকেই জল্পনা ছিল যে এবার বড় কিছু ঘটতে চলেছে বাংলায়।
তবে এই দুদিনে কেন্দ্রীয় এজেন্সির কোনও রকম অ্যাকশন না দেখা গেলেও সোমবার রাত থেকে নিজাম প্যালেস ও সিজিও কমপ্লেক্সের অন্দরে ফের গুঞ্জন শুরু হয়েছে। সূত্র মারফত জানা যাচ্ছে, এই সপ্তাহেই বড় কিছু করতে পারে গোয়েন্দা সংস্থা এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট তথা ইডি।
প্রসঙ্গত, গতকাল সকালে বাচ্চা নিয়ে বিদেশ যাচ্ছিলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্ত্রী রুজিরা বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে ইডিকে জানানোর পরও বিমানবন্দরে রুজিরার বিদেশ যাত্রায় বাধা দিয়েছে অভিবাসন দফতর। এয়ারপোর্টেই তাকে নোটিসও দিয়েছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা।
যার পরই রেগে বোম অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। গতকাল দিনভর নবজোয়ার কর্মসূচিতে ব্যস্ত থাকার পর রাতে তিনি বলেন, “আজ যা ঘটল তা প্রমাণ করে দিল দেশে আইনের শাসন নেই। সুপ্রিম কোর্টের গাইডলাইন এরা মানে না। ভদ্রতার খাতিয়ে ৫ তারিখ যে আমার স্ত্রী যাচ্ছে, ৩ তারিখ ইডিকে জানানো হয়েছিল। যদি সমন দেওয়ার থাকত, আমি ৩ তারিখ জানিয়েছি, ৩ তারিখ রাতে পাঠান। ৪ তারিখ পাঠান। কেউ তো বারণ করেনি’।
কয়লা পাচার কাণ্ডে (Coal Smuggling Case) আগামী ৮ জুন রুজিরা বন্দ্যোপাধ্যায়কে সল্টলেকে সিজিও কমপ্লেক্সে তলব করেছে ইডি। সেই নিয়েও তোপ দেগে অভিষেক বলেন, “গত বছরের জুন মাসে তাকে শেষবার ডাকা হয়েছিল। প্রায় ১২ মাস, তাকে ডাকেনি। সে বলল, ৩৬৫ দিনের মধ্যে ৭ দিন খালি আমাকে ডাকবেন না। এই সময়টা আমি থাকব না। ৫ তারিখে সমন দিয়ে ৮ তারিখে ডেকেছে।”
অন্যদিকে, গতকালই কয়লা পাচারকাণ্ডে রাজ্যের আইনমন্ত্রী মলয় ঘটককে নোটিস দিয়েছে ইডি। আগামী ১৯ জুন মলয়বাবুকে দিল্লির সদর দফতরে সশরীরে হাজিরার নির্দেশ দিয়েছে ইডি। প্রসঙ্গত কিছুদিন আগে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় তলব করে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। তারপরই নেতা আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন যে তাকে এর মধ্যেই ফের তলব করা হতে পারে।
রাজ্যে আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচন, আর বছর ঘুরলেই লোকসভা। এবার এই উত্তপ্ত পরিস্থিতিতে তদন্তকারী সংস্থার তৎপররা দেখে কারও কারও মনে আবার বদ্ধমূল ধারণা তৈরি হয়েছে যে কেন্দ্রীয় এজেন্সির তদন্ত রাজনীতির সঙ্গে ওতোপ্রত ভাবে জড়িত। সোমবার সকালের ঘটনার পর রাজ্য রাজনীতির অন্দরে জোর চৰ্চা শুরু হয়েছে। পরবর্তীতে এই বিষয় কোন দিকে যাচ্ছে তাও আন্দাজ করার চেষ্টা করছেন অনেকেই। তবে কি হবে বা কি হতে চলেছে, এসব প্রশ্নের উত্তর মিলবে সময় এলেই।