বাংলা হান্ট ডেস্কঃ গতবছর থেকেই নিয়োগ দুর্নীতি (Recruitment Scam) নিয়ে তোলপাড় রাজ্য। শিক্ষক কেলেঙ্কারিতে নাম জড়িয়েছে রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী থেকে শুরু করে বহুজনার। যত দিন বাড়ছে ততই লম্বা হচ্ছে অভিযুক্তদের তালিকা। নিয়োগ দুর্নীতিতে বারবারই শিরোনামে উঠে এসেছে পূর্ব মেদিনীপুরের নাম। গত মাসেই নতুন করে এ ক্ষেত্রে নাম জড়িয়েছিল কাঁথির (Contai) এক স্কুল শিক্ষকের (School Teacher)। শনিবার সন্ধ্যায় অবশেষে অভিযুক্ত শিক্ষককে গ্রেফতার করল কাঁথি থানার পুলিশ।
সূত্রের খবর, অভিযুক্ত শিক্ষকের নাম দীপক জানা। চাকরি দেওয়ার নাম করে কয়েকজনের কাছ থেকে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতানোর অভিযোগ উঠেছিল তার বিরুদ্ধে। বর্তমানে কাঁথির বিচুনিয়া জগন্নাথ বিদ্যামন্দিরের ইংরেজির শিক্ষক হিসেবে কর্মরত তিনি। ২০১৮ সাল থেকে শুরু করে রাজ্য সরকারের নানা দফতরে চাকরি করে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে ৫ কোটি টাকা প্রতারণার অভিযোগ উঠেছে তার বিরুদ্ধে। এই নিয়ে গত মাসে কলকাতা হাই কোর্টে কয়েকজন চাকরিপ্রার্থী অভিযোগ জানিয়েছিলেন।
চিরঞ্জীবকুমার দাস নামে কাঁথির এক বাসিন্দার অভিযোগ, ‘‘২০১৯ সালে খাদ্য সরবরাহ দফতরে চাকরি পাইয়ে দেবে বলে ৪ লাখ টাকা বাড়ি থেকে নিয়ে গিয়েছিলেন। তারপর কিছুই হয়নি।টাকা ফেরত চাইতে গেলে শাসকদলের নাম করে হুমকি দেওয়া হয়। বাধ্য হয়ে হাই কোর্টে মামলা করেছি।’’ শুধু একটি নয়, এমন আরও বহু অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। যদিও পূর্বে নিজের বিরুদ্ধে ওঠা এই সমস্ত অভিযোগই ভিত্তিহীন বলে দাবি করেছিলেন দীপক জানা।
ধৃত ওই শিক্ষিকের বিরুদ্ধে একের পর এক অভিযোগ পেয়ে নড়ে চড়ে বসেছে কাঁথি থানার তদন্তকারী থেকে জেলা পুলিশের আধিকারিকেরা। জানা গিয়েছে, কাঁথির ওই শিক্ষক দাদা তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্য ছিলেন। পেশায় শিক্ষক হলেও নিজের এলাকায় দীপক রীতিমতো প্রভাবশালী বলে দাবি স্থানীয় বাসিন্দাদের। সম্প্রতি, তার বিরুদ্ধে ৫ কোটি টাকার একটি চাকরির দুর্নীতির অভিযোগে কলকাতা হাইকোর্টে মামলার দায়ের করেন কংগ্রেস মুখপাত্র তথা আইনজীবী কৌস্তভ বাগচী।
এরপরই শুরু হয় তদন্ত। অবশেষে শনিবার সন্ধ্যায় কাঁথির কুরকুলিতে তার শ্বশুরবাড়ি থেকে অভিযুক্ত ওই শিক্ষকক গ্রেফতার করে পুলিশ। এই বিষয়ে কাঁথি থানার এক পুলিশ আধিকারিক জানান, ” এখনও পর্যন্ত ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে দুই মেদিনীপুরে তিনটি অভিযোগ দায়ের হয়েছে। অভিযোগে পাওয়ার পরেই তদন্তে নেমে শিক্ষককে গ্রেফতার করা হয়েছে। পুরো ঘটনাটি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।”