বাংলাহান্ট ডেস্ক : মঙ্গল (NASA-Mars) গ্রহ নিয়ে বৈজ্ঞানিক তথা আমজনতারও কৌতূহল সবসময়ই থাকে তুঙ্গে। সৌরজগতের এই লাল গ্রহটিকে আরো ভালো ভাবে জানতে চায় বৈজ্ঞানিকেরা। সম্প্রতি নাসার Perseverance রোভার মঙ্গল গ্রহের পৃষ্ঠে এমন কিছু আবিষ্কার করেছে যা দেখে চোখ কপালে উঠেছে বিজ্ঞানীদেরও। গত ১১ ই মার্চ Jezero ক্রেটারের প্রান্তে অন্বেষণ করার সময়েই এক অনন্য আবিষ্কার করে রোভার।
মঙ্গল (NASA-Mars) গ্রহে বিস্ময়কর আবিষ্কার নাসার রোভারের
একটু বিশেষ ধরণের শিলা খুঁজে পাওয়া গিয়েছে, যার নাম রাখা হয়েছে ‘সেন্ট পলস বে’। এই শিলার গায়ে অসংখ্য গাঢ় ধূসর রঙের ছোট ছোট গোল রয়েছে, সঙ্গে রয়েছে বেশ কিছু ছিদ্রও। ২০২১ সাল থেকে এর খোঁজ চলছিল, এটা জানতে যে এখানে কখনো অণুজীবের বাস ছিল কিনা। উইচ হেজেল হিল এলাকার ঢালে পাওয়া গিয়েছে এই পাথর। জানা যায়, এই এলাকার পাথরের স্তরগুলি মঙ্গলের (NASA-Mars) অতীতের পরিবর্তনকে তুলে ধরে। তবে বিজ্ঞানীদের মতে, অন্য কোথাও থেকে শিলাটি এখানে প্রবাহিত হয়ে এসে থাকতে পারে।
কীভাবে তৈরি হল এমন পাথর: উল্লেখ্য, এর আগে Endurance এবং Gale ক্রেটারেও একই ধরণের কাঠামের হদিশ পেয়েছিল নাসার (NASA-Mars) কিউরিওসিটি অ্যান্ড অপরচুনিটি রোভার। বিজ্ঞানীদের মতে, ভূগর্ভস্থ জলের সংস্পর্শে এসেই পাথরে এই ধরণের ছোট ছোট গোল তৈরি হয়েছে। গত বছর পপকর্নের মতো স্তর যুক্ত পাথরেরও খোঁজ পাওয়া গিয়েছিল, যা এখানে কোনো না কোনো সময় জলের উপস্থিতির প্রমাণ দেয়। যদিও বিজ্ঞানীরা আগ্নেয়গিরির উপস্থিতির সম্ভাবনাও উড়িয়ে দিচ্ছেন না। লাভা দ্রুত গতিতে ঠাণ্ডা হলে এই ধরণের ছিদ্র তৈরি হয়। আবার উল্কাপিণ্ডের সংস্পর্শে এসে শিলাগুলি প্রথমে বাষ্পীভূত হয়ে তারপর ঠাণ্ডা হলেও এই ধরণের আকার ধারণ করতে পারে।
আরো পড়ুন : ভারতীয় হয়েও নীল নয়, এই রঙের পাসপোর্ট ব্যবহার করেন শাহরুখ খান! কারণটা জানেন?
কী মনে করছেন বিজ্ঞানীরা: এ বিষয়ে নাসার (NASA-Mars) তরফে জানানো হয়েছে, ভূগর্ভস্থ জলের কারণে এমনটা হয়ে থাকলে, এটাই প্রমাণিত হয় যে এখানে কোনো না কোনো সময়ের জলের উপস্থিতি ছিল। আর যদি আগ্নেয়গিরি বা উল্কাপিণ্ডের কারণে এই ধরণের শিলার আকার হয়ে থাকে, সেক্ষেত্রে মঙ্গলের বিবর্তনের ইতিহাসটাই বদলে যাবে। আসল কারণ খুঁজে বের করার চেষ্টায় রয়েছেন বিজ্ঞানীরা।
আরো পড়ুন : পিছু ছাড়ছে না অভিযোগ! এবার বড় অ্যাকশন নিচ্ছে আদালত, ফের বিপাকে গৌতম আদানি
বর্তমানে Jezero ক্রেটারের প্রান্তে খোঁজ চালান হচ্ছে। এই অংশটি মঙ্গল (NASA-Mars) গ্রহের অন্যান্য জায়গার পরিবেশের থেকে ভিন্ন হতে পারে। ইতিমধ্যে কিছু নজরকাড়া নমুনা সংগ্রহ করেছে রোভার এর মধ্যে পপকর্নের আকারের শিলা ছাড়াও চিতাবাঘের ছালের গঠনের মতো শিলার খোঁজও মিলেছে। বহুপ্রাচীন অণুজীবের উপস্থিতির প্রমাণ এ থেকে পাওয়া যেতে পারে বলে মনে করছেন বিজ্ঞানীরা। নমুনা পৃথিবীতে ফেরত আনার জন্য মার্স স্যাম্পল রিটার্ন মিশনে কাজ করছে নাসা। তবে ব্যয় এবং সময়সীমা নিয়ে কিছু সমস্যা থাকায় এই প্রোজেক্ট আপাতত আটকে রয়েছে। সব ঠিক থাকলে ২০৩৫-৩৯ সালের মধ্যে মঙ্গল থেকে সংগৃহীত নমুনা পৃথিবীতে আনা হতে পারে।