প্রচন্ড বৃষ্টিতে আবির্ভাব হলো অদ্ভুত এক প্রাণীর, দেখেই চিন্তায় পড়লো বিজ্ঞান মহল

বাংলা হান্ট ডেস্ক: রেকর্ড পরিমান বৃষ্টির পরে অস্ট্রেলিয়ার সমুদ্র সৈকতে ঘুরতে আসা পর্যটকেরা সৈকতে দেখতে পেলেন একের পর এক সি-ড্রাগন। অত্যন্ত বিরল এই প্রাণীগুলিকে ওইভাবে দেখে রীতিমত অবাক হয়ে যান সকলেই। মূলত উইডি সি-ড্রাগন নামে পরিচিত এই দুর্লভ প্রাণীগুলিকে ক্রনুল্লা, মালাবার এবং সেন্ট্রাল কোস্টে বহুল পরিমানে দেখা গেছে। পাশাপাশি, অন্যান্য সময়ের তুলনায় এগুলির ভেসে আসার সংখ্যা প্রায় ১০ গুণ বেশি বলে জানা গিয়েছে।

এই প্রসঙ্গে সিডনি ইউনিভার্সিটি অফ টেকনোলজির মেরিন ইকোলজির অধ্যাপক, ডঃ ডেভিড বুথ, সিডনি মর্নিং হেরাল্ডকে জানিয়েছেন যে, “স্পষ্টতই এটি মর্মান্তিক আবহাওয়ার ফলাফল। পাশাপাশি দূষকগুলি সমুদ্রে মিশে যাওয়ার ফলে এত সংখ্যায় প্রাণীগুলি ভেসে এসেছে সৈকতে।”

এগুলি সাধারণ সি-ড্রাগন নামেও পরিচিত। প্রাণীগুলি শুধুমাত্র অস্ট্রেলিয়ার পূর্ব এবং দক্ষিণ উপকূল বরাবর পাওয়া যায়। সি-হর্সের তুলনায় আকারে কিছুটা ছোট এবং পাতার আকৃতির এই জীবগুলি তাদের জীবদ্দশায় খুব বেশি নড়াচড়া করে না। শুধুমাত্র তাদের আস্তানা থেকে সবসাকুল্যে ৫০ মিটার পর্যন্ত দূরে যেতে পারে তারা। সুতরাং, এটি একটি বিশাল আশ্চর্যের ব্যাপার যে, তারা এতদূর পথভ্রষ্ট হয়ে সৈকতে এসে উপস্থিত হয়েছে!

এই প্রসঙ্গে ডাঃ সেলমা ক্ল্যান্টেন জানিয়েছেন যে, “এটি তাদের বাসস্থানের ক্ষতি এবং পরিবেশগত কারণগুলির পরিবর্তনের জন্য সংবেদনশীল করে তুলতে পারে।” প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, এই সি-ড্রাগনগুলি তারা তাদের প্রাণবন্ত বৈশিষ্ট্য, রং এবং অস্বাভাবিক আকারের কারণে ডুবুরিদের কাছে বেশ জনপ্রিয়।

এমতাবস্থায়, ডঃ বুথ উদ্বিগ্ন হয়ে জানিয়েছেন উত্তরাঞ্চলীয় অঞ্চলে এগুলির সংখ্যা হ্রাস পাচ্ছে এবং জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ড্রাগনগুলি উপকূলের নীচে শীতল জলে স্থানান্তরিত হবে। পাশাপাশি, পরিসংখ্যানের ভিত্তিতে তিনি বলেন কারনেল, বোটানি সমুদ্রে একটি ডুব দিলেই সাত থেকে আটটি সি-ড্রাগন দেখা গেলেও এখন সেখানে দুই থেকে তিনটি সি-ড্রাগনের খোঁজ মিলবে বলে জানান তিনি।

মূলত, ডুবুরি এবং আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্সের সাহায্যে এই সি-ড্রাগনগুলিকে শনাক্ত এবং ট্র্যাক করেন তিনি। এছাড়াও, উন্নত সফ্টওয়্যার ব্যবহার করে তাদের অনন্য প্যাটার্ন এবং রঙের উপর ভিত্তি করে পৃথক ড্রাগন শনাক্ত করার কাজও করা হয়।

এই সামুদ্রিক ড্রাগন গুলিকে শক্তিশালী স্রোতের সময় কেল্প ধরে রাখার ক্ষমতার জন্য ‘কঠিন ছোট শয়তান’ হিসাবে বর্ণনা করা হয়। তবে তাদের বাড়ির প্রতি আসক্তি ঝড়ের সময় তাদের ঝুঁকির মধ্যে ফেলে।

২০১৯ সালে এই প্রজাতিকে বিপন্নদের তালিকায় নামিয়ে আনার আগে প্রজাতিগুলিকে একবার ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন ফর কনজারভেশন অফ নেচার-এর রেড লিস্টেও তালিকাভুক্ত করা হয়েছিল।

seadragon 6256b1129a1c7

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, বর্তমানে অস্ট্রেলিয়ার সমুদ্র সৈকতে ভেসে আসছে বেশ কিছু অস্বাভাবিক সামুদ্রিক প্রাণীও। সম্প্রতি, সমুদ্র সৈকতে একটি মানুষের মুখের মতো গঠন বিশিষ্ট সামুদ্রিক প্রাণীকেও দেখা গিয়েছিল। স্বাভাবিকভাবেই এটি দেখে ছড়িয়েছিল চাঞ্চল্যও।


Sayak Panda
Sayak Panda

সায়ক পন্ডা, মেদিনীপুর কলেজ (অটোনমাস) থেকে মাস কমিউনিকেশন এবং সাংবাদিকতার পোস্ট গ্র্যাজুয়েট কোর্স করার পর শুরু নিয়মিত লেখালেখি। ২ বছরেরও বেশি সময় ধরে বাংলা হান্ট-এর কনটেন্ট রাইটার হিসেবে নিযুক্ত।

সম্পর্কিত খবর