বাংলা হান্ট ডেস্ক: দীর্ঘদিন ধরে চলে আসা সারদা মামলায় এবার আমানতকারীদের জন্য রয়েছে সুখবর। জানা গিয়েছে যে, এই চিটফান্ড কাণ্ডে আমানতকারীদের টাকা ফেরত দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করতে চলেছে কেন্দ্রীয় বাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ বোর্ড অব ইন্ডিয়া বা সংক্ষেপে সেবি। মূলত, এই বেআইনি অর্থলগ্নি সংস্থাটির সম্পত্তি বিক্রি করে দেওয়ার মাধ্যমেই সেটি থেকে প্রাপ্ত অর্থ আমানতকারীদের হাতে তুলে দেওয়া হবে বলে প্রাথমিকভাবে জানা গিয়েছে।
এই প্রসঙ্গে কলকাতা হাইকোর্টকে সেবি জানিয়ে দিয়েছে যে, সারদার অন্যান্য সম্পত্তির তথ্য বিস্তারিত ভাবে পাওয়া গেলে সেগুলি নিলাম করে সংগৃহীত অর্থ আমানতকারীদের ফিরিয়ে দেওয়া হবে। শুধু তাই নয়, ইতিমধ্যেই সারদার সাতটি সম্পত্তি বিক্রিও করা হয়েছে। আর তাতে মিলেছে সম্ভাব্য দামের দ্বিগুণেরও বেশি অর্থ।
এছাড়াও, রাজ্য সরকারও জানিয়ে দিয়েছে যে, শ্যামল সেন কমিশনের একটি অ্যাকাউন্টে পড়ে থাকা অর্থ ক্ষতিগ্রস্তদের ফেরত দেওয়ার উদ্যোগ এবার নিতে পারে আদালত। রাজ্য সরকারের হলফনামা অনুযায়ী আগেই জানা গিয়েছে যে, বন্ধ হয়ে যাওয়া শ্যামল সেন কমিশনের একটি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে বর্তমানে রয়েছে ২ কোটি ৩৯ লক্ষ ৮৭ হাজার ৯৫৫ টাকা। এগুলিও, সারদার স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি বিক্রি করে পাওয়া গিয়েছিল।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, শ্যামল সেন কমিশনের মাধ্যমেই এর আগে সারদার ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের টাকা ফেরাতে ৫০০ কোটি টাকা দেওয়ার ঘোষণা করে রাজ্য। সেই মত মোট পাঁচটি কিস্তিতে দেওয়া হয় ২৮৬ কোটি টাকা। এছাড়াও, ৪ লক্ষ ৯৮ হাজার ৩৪৫ টি চেক বিলি করা হয়। এমতাবস্থায়, ২০১৪ সালে ওই কমিশনের মেয়াদ শেষে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ছিল ১৩৮ কোটি ৯৫ লক্ষ ৮২ হাজার ৪৩৮ টাকা। যা ২০১৭ সালের নভেম্বর মাসে ফেরত নিয়ে নেয় রাজ্য।
এই প্রসঙ্গে আমানতকারীদের পক্ষে অন্যতম আইনজীবী অরিন্দম দাশ জানিয়েছেন যে, চিটফান্ডের যে কোনও রকমের সম্পদ বিক্রি করে পাওয়া অর্থ ফেরত দিতে ২০১৮ সালেই নির্দেশ জারি করেছিল সেবি। যার ফলে আইনত তারা এখন সরাসরি ক্ষতিগ্রস্তদের টাকা ফেরত দেওয়ার উদ্যোগ নিতে পারে।
এদিকে, সেবি এর আগেই সারদা রিয়েলটি ইন্ডিয়া লিমিটেডের সম্পত্তি নিলাম করার উদ্যোগ নিয়েছিল। তার পরিপ্রেক্ষিতে গত ৫ এপ্রিল এই ব্যাপারে বিস্তারিত তথ্য জানতে চায় হাইকোর্ট। এই প্রসঙ্গে সেবি জানিয়েছে, গত ২২ ফেব্রুয়ারি সারদার সাতটি সম্পত্তি নিলাম হয়েছে। সেগুলির দর ৫৯ লক্ষ ৩৮ হাজার ৭৯৪ টাকা ধরা হলেও নিলামে সেগুলি থেকে মিলেছে ১ কোটি ৩৩ লক্ষ ৭১ হাজার ১৮৫ টাকা ৭০ পয়সা।
ইতিমধ্যেই এই অর্থ রাখা হয়েছে একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কে। এছাড়াও, ওই হলফনামায় আরও বেশ কিছু সম্পত্তির উল্লেখ করেছে সেবি। আর সেগুলিরই নিলামের প্রক্রিয়া দ্রুত শুরু করতে চায় তারা। এদিকে, সেই সম্পত্তি সংক্রান্ত বিস্তারিত তথ্য এখনও তাদের হাতে না থাকায় নিলামের কাজ শুরু করা যাচ্ছে না।