বাংলা হান্ট ডেস্কঃ রোজই যখন ক্রমাগত আতঙ্ক বাড়িয়ে চলেছে কোভিড-১৯, তখন একমাত্র মুক্তির উপায় যে ভ্যাকসিন তা বলাই বাহুল্য। গবেষকরা এর আগেও জানিয়েছেন, ভ্যাকসিন দেওয়া থাকলে রোগের প্রভাব প্রায় ৮০ শতাংশ কমে যেতে পারে। বিশেষত অ্যাস্ট্রোজেনেকার ভ্যাকসিন গুলিত ভীষণ কার্যকর। অন্যদিকে আইসিএমআর তরফেও জানানো হয়েছে যে, ভারতে তৈরি সেরাম ইনস্টিটিউটের কোভ্যাকসিনও ভাইরাসের বিভিন্ন প্রজাতির সঙ্গে লড়তে সক্ষম। অর্থাৎ ভ্যাকসিন নিলে আক্রান্ত হবার ভয়ে সম্পূর্ণ না থাকলেও রোগের প্রভাব যে অনেকটাই কমতে পারে তা বলাই বাহুল্য।
কিন্তু এমতাবস্থায়, ভারতে যথেষ্ট সমস্যা তৈরি করেছে টিকার কম উৎপাদন। একাধিক হাসপাতালে যে পরিমাণ ভ্যাকসিন পাঠানোর কথা তা পাঠানো যাচ্ছে না। শুধু তাই নয় শুরু হয়েছে ব্ল্যাক মার্কেটও। যার ফলে এখন এই জীবনদায়ী ভ্যাকসিন হয়ে উঠেছে মহার্ঘ। ইতিমধ্যেই এ নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারকে কাঠগড়ায় দাঁড় করাতে শুরু করেছেন বিরোধীরা। যদিও সরকারের পক্ষ থেকে স্পষ্টতই জানানো হয়েছে আগামী ডিসেম্বরের মধ্যেই ভ্যাকসিন দেওয়ার কাজ শেষ করবেন তারা। একদিকে যখন, সমস্যা রোজই জটিল হচ্ছে তখন অন্তত কিছুটা স্বস্তির খবর দিল হায়দ্রাবাদের সংস্থা “বায়োলজিক্যাল-ই”। ভারতে এই মুহূর্তে রয়েছে মাত্র তিনটি ভ্যাকসিন। যার মধ্যে কোভিশিল্ড ভারত তৈরি করলেও ফর্মুলা অক্সফোর্ডের। এছাড়া রাশিয়ান ভ্যাকসিন স্পুটনিক’ ভিকেও ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে। তবে একমাত্র ভারতের তৈরি ভ্যাকসিন হল কোভ্যাকসিন। এবার সেই তালিকায় এল একটি দ্বিতীয় নাম। ভারতেই তৈরি হচ্ছে করোনার দ্বিতীয় ভ্যাকসিন।
ইতিমধ্যেই প্রথম এবং দ্বিতীয় ট্রায়ালে সন্তোষজনক ফল করেছে বায়োলজিক্যাল-ই নামক সংস্থার তৈরি এই ভ্যাকসিনটি। জানানো হয়েছে, খুব শীঘ্রই তৃতীয় ট্রায়াল শুরু করবে এই নতুন ভ্যাকসিন। এখন তৃতীয় ট্রায়ালে আইসিএমআর এবং ড্রাগ কন্ট্রোল অফ জেনারেলের ছাড়পত্র পেলে ডিসেম্বর থেকেই উৎপাদন শুরু হবে। কেন্দ্র ইতিমধ্যেই এই সংস্থার তৈরি টিকার ৩০ কোটি ডোজ বুক করে ফেলেছে। সেজন্য দেওয়া হয়েছে ১৫০০ কোটি টাকা অগ্রিমও। বৃহস্পতিবার সকালে কেন্দ্রের তরফে জানানো হয়, “হায়দ্রাবাদি ভ্যাকসিন প্রস্তুতকারী সংস্থা বায়োলজিক্যাল-ইর সাথে ইতিমধ্যেই ৩০ কোটি ডোজ কেনার চুক্তি পাকা করেছে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রক। চলতি বছরের আগস্ট থেকে ডিসেম্বর মাসের মধ্যেই এই উৎপাদন শুরু করবে সংস্থা। এর জন্য মন্ত্রকের পক্ষ থেকে অগ্রিম দেড় হাজার কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে তাদের। ”
এই প্রসঙ্গে নীতি আয়োগের অন্যতম সদস্য ডাক্তার ভি কে পালও জানিয়েছেন, ভ্যাকসিনটি প্রথম এবং দ্বিতীয় ট্রায়াল শেষ করেছে। রিপোর্ট খুবই সন্তোষজনক। যার জেরে শীঘ্রই শুরু হবে তৃতীয় ট্রায়াল’। এখন কবে নাগাদ এই ভ্যাকসিন বাজারে এসে পৌঁছায় সে দিকেই নজর থাকবে সকলের।