বাংলাহান্ট ডেস্ক : সংবাদ মাধ্যমের দৌলতে সায়গল হোসেনের নাম এখন বাংলার সবাই চেনেন। মাসখানেক আগেও তাঁকে ক’জন জানত সেই নিয়ে তাঁকে সন্দেহ রয়েছে। তবে, মুর্শিদাবাদে ডোমকলের মাথালিপাড়ায় গিয়ে বাবিনের বাড়ি যাব বললেই লোক চোখ বন্ধ করে আপনাকে পৌঁছে দেবে। আর হবে নাই বা কেন? বাবিনের বাড়ি তো আর যে সে বাড়ি নয়! প্রায় ৬ বিঘা জমির উপর সবুজ রঙের প্রাসাদের মতো অট্টালিকাটা যে কারুর চোখ টানবে। কিন্ত কনস্টেবলের চাকরি কীভাবে এই বাড়ি বানানো সম্ভব তা নিয়ে সকলের মনেই কৌতুহল ছিল বৈকি। তবে সায়গল খুব একটা পাড়ার কারুর সঙ্গে কথা বলত না, তাই তাঁকে জিজ্ঞাসা করার সাহসও দেখায়নি কেউই।
বৃহস্পতিবার সায়গলকে নিজাম প্যালেসে দীর্ঘক্ষণ জিজ্ঞাসাবাদ করে সিবিআই। আধিকারিকদের মূল প্রশ্নই ছিল কনস্টেবলের চাকরি করে কিভাবে এই বিরাট সম্পত্তি বানানো সম্ভব? যদিও এর কোনও উপযুক্ত উত্তর পায়নি সিবিআই।
ডোমকলের এক তৃণমূল নেতা বলেন, হোসেনের বাবা রাজ্য পুলিশের এএসআই হিসেবে কর্মরত ছিলেন। কিন্তু চাকরি শেষের আগেই তাঁর হঠাৎ মৃত্যু হয়। হোসেন তাঁর বাবার চাকরিটিই পেয়েছেন। বর্তমানে তিনি রাজ্য পুলিশের কনস্টেবল পদে কর্মরত। ওই নেতা আরও বলেন, অনুব্রত মণ্ডলের দেহরক্ষী হিসেবে যোগ দেওয়ার পরই ফিরে যায় হোসেনের আর্থিক অবস্থা। নিজের জন্য ১২ নম্বর ওয়ার্ডের রবীন্দ্র মোড়ে একটি সুবিশাল বাড়ি তৈরি করেন। পাশাপাশি ডোমকলে তাঁর একটি বাণিজ্যিক ভবনও ভাড়ায় দেওয়া থাকে।
এছাড়া এলাকাতে কান পাতলেই শোনা যায়, ডোমকল এবং তার আশেপাশের এলাকাতে প্রায় ৫-৬ কোটি টাকার জমিও কিনে রেখেছেন হোসেন। সূত্রের খবর, হোসেনের ১২টি ডাম্পার গাড়ি বর্তমানে বিভিন্ন জায়গায় ভাড়া খাটছে। পুলিশ সূত্রে খবর হোসেনকে সিবিআই গরু পাচার মামলায় অন্যতম ‘বেনিফিশিয়ারি’ হিসেবে দেখে এর আগেও তাঁর বাড়ি তল্লাশি হয়। জানা যায় সেই তল্লাশির সময় হোসেনের বাড়ি থেকে বেশ কিছু জমির দলিল এবং ফিক্সড ডিপোজিটের কাগজও পাওয়া গিয়েছে।
গোপন সূত্রে জানা যাচ্ছে, গরু পাচার চক্রে মূল অভিযুক্ত এনামুল হক তাঁর বয়ানে বলেন, বীরভূম দিয়ে গরু পাচার করতে গেলে মোটা অংকের টাকা দিতে হত তাঁকে। অনুব্রতর হয়ে সেই টাকা সায়গল হোসেনই নিতেন বলে দাবি করেন এনামুল। এখন দেখার সিবিআই সায়গল হোসেনকে জেরা করে আরও কিছু তথ্য জোগাড় করতে পারে কিনা।