বড় খবর! অবশেষে গ্রেফতার শেখ শাহজাহান, এতদিন কোথায় লুকিয়ে ছিলেন? জানলে শিউরে উঠবেন

বাংলা হান্ট ডেস্কঃ ৫৫ দিন পর অবশেষে গ্রেফতার তৃণমূলের শেখ শাহজাহান (Sheikh Shahjahan)। আদালতের সবুজ সংকেতের পরই রাজ্য পুলিশের হাতে গ্রেফতার (Arrested) সন্দেশখালিকাণ্ডের মূল অভিযুক্ত শেখ শাহজাহান। সূত্রের খবর অনুযায়ী, বৃহস্পতিবার মিনাখাঁ থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে শাসকদলের এই দাপুটে নেতাকে।

শাহজাহানের গ্রেফতারিতে কোনো বাধা নেই, সোমবারই জানিয়ে দিয়েছিল হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ। হাইকোর্টের (Calcutta High Court) বলার পরই পুলিশের খাতায় ‘ফেরার’ শাহজাহান অবশেষে পুলিশের হাতে গ্রেফতার। ৫ জানুয়ারি, শেখ শাহজাহানের বাড়িতে তল্লাশিতে গিয়ে আক্রান্ত ইডি (ED)। তারপর থেকেই সন্দেশখালির ত্রাস শেখ শাহজাহানের খোঁজ চলছিল। অবশেষে ৫৫দিন পরে গ্রেফতার শাহজাহান শেখ।

গত দুমাস থেকে শাহজাহানের গ্রেফতারির দাবিতে ফুঁসচিল সন্দেশখালি। তার সঙ্গীদের ধরা গেলেও শাহজাহানকে গ্রেফতার করা যাচ্ছিল না। যা নিয়ে ক্রমশই উত্তপ্ত হয়ে উঠছিল পরিস্থিতি। আপাতত শাহজাহানের গ্রেফতারিতে সেই পরিস্থিতি কিছুটা আয়ত্তে আসবে বলেই মনে করা হচ্ছে।

প্রসঙ্গত কিছুদিন আগেই তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন, ‘শেখ শাহজাহানকে রাজ্য প্রশাসন বা তৃণমূল আড়াল করছে না। যদি কেউ আড়াল করেই থাকে তা হল বিচার ব্যবস্থা।’ অভিষেকের কথায়, ‘আদালতে রাজ্য প্রশাসন স্থগিতাদেশ চায়নি। চেয়েছে ইডি। রাজ্য প্রশাসনের হাত-পা বেঁধে দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। আদালত প্রশাসনের হাত বেঁধে রাখলে শাহজাহানকে কীভাবে গ্রেফতার করা যাবে?’

‘শেখ শাহজাহানকে যদি কেউ গার্ড করে থাকে সেটা বিচারব্যবস্থা করছে। জুডিশিয়ারি স্টে তুলে দিক, তারপর যদি পুলিশ গ্রেফতার করতে না পারে, তখন আমাকে এসে বলবেন।’ এরপর অভিষেক বলেন, ‘গত ৫ জানুয়ারি ইডি আধিকারিকদের উপর হামলার ঘটনায় তারাই এফআইআর করে। ওই ঘটনায় সিট গঠন করেছিল কলকাতা হাইকোর্ট। ইডি আপিল করে রায়ের উপর স্থগিতাদেশ চায়। সেই স্টে আর্জি মঞ্জুর করে প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ। ৬ মার্চ শুনানি রয়েছে। পুলিশ কীভাবে গ্রেফতার করবে?’

যদিও অভিষেকের দাবি খারিজ করে সন্দেশখালি মামলায় শেখ শাহজাহানকে যুক্ত করার নির্দেশ দেয় কলকাতা হাইকোর্ট। জানায়, শাহজাহানের গ্রেফতারিতে কোনও বাধা নেই। কোনও স্থগিতাদেশ দেয়নি আদালত। ইডির মামলায় সিট গঠনের উপর স্থগিতাদেশ দেওয়া হয়েছিল। তবে পুলিশ চাইলেই শাহজাহানকে গ্রেফতার করতে পারে। সমস্ত বিষয় স্পষ্ট করে জানান হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম।

সোমবার হাইকোর্টের নির্দেশের পর মঙ্গলবার ফের এক্স হ্যান্ডলে আদালতের নির্দেশনামা পোস্ট করেন অভিষেক। সেখানেই তৃণমূল নেতা লিখেছেন, ”গত ৭ ফেব্রুয়ারি (সন্দেশখালি নিয়ে পুলিশের তদন্তে) স্থগিতাদেশ দেওয়া হয়েছিল। ঠিক তার পরের দিন অর্থাত্‍ ৮ ফেব্রুয়ারি থেকেই হিংসা এবং বিক্ষোভ শুরু হয় (সন্দেশখালিতে)।”

abhishek shahjahan

আরও পড়ুন: এবার হুড়মুড়িয়ে বাড়বে তাপমাত্রা! আজ কোন কোন জেলায় বৃষ্টি? একনজরে আবহাওয়ার খবর

অভিষেকের পোস্ট করা ৭ ফেব্রুয়ারির ওই নির্দেশনামায় স্বাক্ষর ছিল খোদ কলকাতা হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতির। নির্দেশনামাটি গত ১৭ জানুয়ারি হাই কোর্টের সিঙ্গল বেঞ্চের একটি নির্দেশের বিরুদ্ধে ইডি দু’টি আবেদন সংক্রান্ত। অভিষেকের পোস্ট করা ওই নির্দেশনামা থেকে যা বোঝা যায় তা হল, হাইকোর্ট এ রাজ্য পুলিশকে ইডির আবেদন সংক্রান্ত মামলায় কোনও রকম পদক্ষেপ এবং তদন্ত না করার নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে। অর্থ্যাৎ অভিষেক বোঝাতে চান পুলিশি তদন্তে স্থগিতাদেশ নিয়ে তিনি যেসব অভিযোগ তুলেছিলেন তা সত্য।

অভিষেক আরও লিখেছিলেন, শাহজাহানের গ্রেফতারি নিয়ে হাই কোর্ট বিভ্রান্তি দূর করার পর তিনি আশা করছেন সন্দেশখালির মানুষ দ্রুত সুবিচার পাবেন। আর সেই মন্তব্যের ৪৮ ঘণ্টা পেরোতে না পেরোতেই শাহজাহানকে গ্রেফতার করল পুলিশ।


Sharmi Dhar
Sharmi Dhar

শর্মি ধর, বাংলা হান্ট এর রাজনৈতিক কনটেন্ট রাইটার। উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাংবাদিকতায় স্নাতকোত্তর। বিগত ৩ বছর ধরে সাংবাদিকতা পেশার সঙ্গে যুক্ত ।

সম্পর্কিত খবর