বাংলা হান্ট ডেস্কঃ সরস্বতী পুজোয় শেষবার বাড়ি আসা হয়েছিল, তারপর বাড়ি আসার ছাড়পত্র পাওয়া গেলেও লকডাউনের কারণে আসা হয়নি আর। বাড়ির লোককে জানিয়েছিল সবকিছু মিটে গেলে আমি আসব। ছেলেটা ফিরে আসল ঠিকই, কিন্তু সবার চোখে জল দিয়ে। কারণ সে আর পায়ে হেঁটে বাড়ি ফেরেনি। কফিনে করে রাজকীয় সন্মানে তাঁর পবিত্র দেহ এসে পৌঁছাল বীরভূমে (Birbhum) নিজের গ্রামে। আর এই বীর পুত্রকে শেষ বারের মতো দেখতে কাতারে কাতারে মানুষ একত্রিত হল।
কথা ছিল, বাড়ি এসে বোনের বিয়ে দেবে কিন্তু বোনের বরকে সুসজ্জিত গাড়িতে নিয়ে আসার বদলে নিজেই এলো স্বর্গ রথে। আর বোনকে বিদায় জানানোর বদলে নিজেই সবাইকে কাঁদিয়ে বিদায় জানিয়ে চলে গেলো রাজেশ ওরাং (rajesh orang)। বন্ধুদের বলেছিল, চীনের জিনিষ ব্যবহার করিস না, ওঁরা ভালো নয়। আর সেই চীনের হাতেই সর্বোচ্চ বলিদান দিলো রাজেশ।
নাহ, সে কোন অপরাধ করেনি … সে শুধু নিজের মাতৃভূমির এক ইঞ্চিও ছাড়বে না বলে চীনের সেনার সাথে কোন হাতিয়ার ছাড়াই সংঘর্ষে লিপ্ত হয়ে গেছিল। আর চীনের সেনা প্রতারকের মতো পেরেক লাগানো লোহার ডাণ্ডা দিয়ে হামলা করেছিল রাজেশদের উপর। রাজেশ হয়ত একটু বেশিই এগিয়ে গেছিল মাতৃভূমির রক্ষার জন্য তাই চীনের সেনা ওর উপর প্রহারটাও বেশি করেই করতে পেরেছিল।
আজ সকালে বীরভূমের মোহম্মদ বাজার দিয়ে নিয়ে যাওয়া হয় রাজেশের পবিত্র শরীর। দেখার জন্য লোক জড় হয়েছিল হাজার হাজার। গ্রামের ছেলে চীনের সাথে লড়াই করে এসেছে, সে স্বর্গে যাবে আর সেটাই দেখার জন্যই জড় হয়েছিল সবাই। রাস্তা থেকে রাজেশের বাড়ি পর্যন্ত চারিদিকে ছেয়ে গেছিল রাজেশের ছবি আর ভারতের পতাকা। এই পতাকা রক্ষার জন্যই তো প্রাণ দিয়েছে সে।
বাড়ির কাছে একটি মঞ্চ বানানো হয়েছিল রাজেশের পবিত্র দেহ রাখার জন্য। রাজেশকে দেখে সবাই কাঁদছিল তবে রাজেশ হাসছিল, কারণ সে বীরের মতো লড়াই করেছে, দেশের সন্মান বাঁচিয়েছে। রাজেশকে শেষবার দেখে তাঁর ভাই অভিজিৎ কাঁদতে কাঁদতে বলেই দিলো, বদলা চাই দরকার পড়লে আমিও যাব বর্ডারে।