অন্ধ চোখ নিয়ে অসাধারন নাচেন সপ্তপর্ণা, তার প্রতিভা সকলকে করে মুগ্ধ

বাংলাহান্ট ডেস্কঃ মনের জোর থাকলে অনেক দূর অবধি যাওয়া যায়। কাজের মাঝে আসে অনেক বিপদ। তা কাটিয়ে উঠলেই যাওয়া  যাবে অনেক দূর। তারই প্রমাণ দিল  সপ্তপর্ণা মন্ডল (Saptaparṇā mondal)। মাত্র চার(4) মাস বয়সে জটিল রোগে হারিছেন দৃষ্টিশক্তি । তবে তাতে সে হার মানেনি। এগিয়ে নিয়ে গেছেন নিজেকে। আঁধারেও ফোটে পদ্ম, চোখে আঁধার নিয়েও স্টেজে নাচেন সপ্তপর্ণা ।

কাটোয়ার স্টেশনবাজার এলাকার বাসিন্দা সপ্তপর্ণা মণ্ডল। চোখে না দেখলেও নাচ (dance)ও গানে(song)  তিনি পারদর্শী সে। স্পর্শেন্দ্রিয় অত্যন্ত সজাগ। একবার কাউকে স্পর্শ করলে তিনি মনে রাখতে পারেন বহুদিন। সাগরিকা ছবিতে চোখ হারিয়ে শুধু স্পর্শে যেমন সাগরিকাকে (সুচিত্রা সেন) চিনে নিয়েছিলেন অরুণ (উত্তমকুমার) অনেকটা তেমন ভাবেই একবার কারও হাত ছুঁলে তাঁকে মনে রাখতে পারেন সপ্তপর্ণা।

সপ্তপর্ণার নাচ দেখলে কেউ বুঝতেই পারবেন না যে তিনি দৃষ্টিহীন। তাঁর মা সুলক্ষণা পণ্ডিত (Sulakṣaṇā paṇḍita)
নিজে ভারতনাট্যম ও কত্থকশিল্পী। তা হলেও যিনি চোখে দেখেন না তাঁকে নাচের মুদ্রা শেখান মোটেই সহজ কথা নয়।

Capture o 1

সপ্তপর্ণা শুধুমাত্র চোখে দেখেন না। ব্যস এটুকুই। বাকিটা আর পাঁচজনের মতোই। প্রথমে তিনি ব্রেইল হরফে পড়াশোনা করতে শুরু করেছিলেন। এখন অবশ্য সেসবের ধার ধারেন না। তাঁর মা তাঁকে পড়ে শোনান। শ্রুতিধর সপ্তপর্ণা তা মনে রাখেন। তিনি পরীক্ষা দেন আর পাঁচজনের মতো। পার্থক্য শুধু একটাই। তাঁর সঙ্গে একজন রাইটার থাকেন। মাধ্যমিকে তিনি পেয়েছেন বাহাত্তর শতাংশ নম্বর। কাটোয়ার কাশীশ্বরী বিদ্যালয়ের ছাত্রী সপ্তপর্ণা এবার উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা দিচ্ছেন বাংলা, ইংরেজি, শিক্ষাবিজ্ঞান, সংস্কৃত ও মিউজিক নিয়ে। তাঁর সিট পড়েছে কাটোয়ার দুর্গাদাসী চৌধুরী বালিকা বিদ্যালয়ে।

সপ্তপর্ণার বাবা তন্ময় মণ্ডল (Tanmaẏa maṇḍala)  প্রথম থেকেই মেয়ের ইচ্ছাশক্তির মর্যাদা দিয়ে এসেছেন। সুলক্ষণার কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে লড়েছেন যাতে তাঁদের মেয়ে বেড়ে উঠতে পারে আর পাঁচজনের মতো করেই তাই লেখাপড়ার পাশাপাশি গান ও নাচেও মেয়েকে তালিম দেওয়া শুরু করেন তাঁরা। তাদের আশা  মেয়ে অনেক দূর অবধি এগোবে। কোনও বাধাতেই তাদের মেয়ে মাথা নত করবেন না।


সম্পর্কিত খবর