‘ভাদুর লুটের টাকার ভাগ নিত অনুব্রতও’, অগ্নিদগ্ধ স্ত্রীর মৃত্যুর পর ফুঁসে উঠলেন শেখলাল

বাংলাহান্ট ডেস্ক : বগটুইয়ের অগ্নিকাণ্ডে ভয়াবহ ভাবে পুড়ে গিয়েছিল দেহ। এক সপ্তাহ মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ে হার স্বীকার করলেন নাজেমা বিবি। সোমবার সকালেই রামপুরহাট মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে মৃত্য হয় তাঁর। স্ত্রীর মৃত্যুর পরই এবার ক্ষোভে ফুঁসে উঠে একের পর এক তৃণমূল নেতার বিরুদ্ধে সরব হলেন মৃত নাজেমা বিবির স্বামী শেখলাল শেখ। তাঁর বয়ানে উঠে এল অনুব্রত মণ্ডল থেকে শুরু করে ভাদু শেখ সকলেরই নাম। তাঁর গুরুতর অভিযোগ, গত সোমবার রাতে অগ্নিকাণ্ডের সময় গ্রামে পুলিশকে ঢুকতে বাধা দিয়েছিল আনারুল হোসেনই। এমনকি ভাদুর তোলাবাজির টাকার ভাগ অনুব্রত মণ্ডল এবং বীরভূমের পুলিশ কর্তারাও খেত বলেই অভিযোগ তাঁর।

বগটুই গণহত্যা কাণ্ডে গুরুতর আহত হয়ে গত এক সপ্তাহ ধরে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন নাজেমা বিবি। সোমবার সকালেই মৃত্যু হয় তাঁর। তার পরই একের পর এক অভিযোগ এনে সরব হয়েছেন স্বামী শেখলাল। তিনি জানিয়েছেন, ‘ভাদু শেখের লোকেরাই আগুন লাগিয়েছিল সেই রাতে। ভাদু বড়শাল পঞ্চায়েতের উপপ্রধান হলেও একটা ক্রিমিনাল। ও কালোবাজারি করত। কয়লা, বালির ব্যবসা ছিল ওর। রাস্তাঘাটে ক্র্যাশার থেকে যে সমস্ত গাড়ি আসত তা থেকে তোলাবাজি করত। ৪০ থেকে ৭০ জন ছেলে আছে ভাদুর। তারা এখন উধাও হয়ে গিয়েছে। ভাদুর কালোবাজারির যে ধান্দা তার ভাগ পেত আনারুল, আইসি, এসডিপিও। অনুব্রতও মণ্ডলও সেই টাকার বখরা পেতেন।’

আনারুলের বিরুদ্ধেও অভিযোগ তুলেছেন তিনি। বলেন, ‘সোমবার রাত নটা থেকে সাড়ে নটার মধ্যে আগুন লাগানো হয়েছে। দমকল পর দিন সকালে এসে জল দিয়েছে। রাতে যদি উদ্ধার চালাত তা হলে এটা হয়তো হত না। রামপুরহাট থানা থেকে আমাদের বাড়ি যেতে ১০-১৫ মিনিট লাগে। এসডিপিও-র বাড়ি আমার পাড়ায়। আমার বাড়ি থেকে পাঁচ মিনিট। সে দিন পুলিশ পার্টির চাপে আমাদের কোনও রকম নিরাপত্তা দিতে পারেনি। কিন্তু পুলিশ চায়নি যে সমস্ত বাড়ি জ্বলে পুড়ে খাক হয়ে যাক। সবাই ধ্বংস হয়ে যাক, এটা পুলিশ চায়নি। কিন্তু পুলিশকে আনারুল যেতে দেয়নি। আর ওই অবস্থায় আমরা শেষ হয়ে গিয়েছি। পরিবার জ্বলে গিয়েছে।’

স্ত্রীর মৃত্যুর কথা বলতে বলতে চোখ জলে ভিজে গিয়েছে শেখলালের। তিনি আরও বলেন, যে নাজেমা বিবি নাকি আগেই তাঁকে বলেছিলেন যে তিনি আর বাঁচবেন না। বাচ্চাদের দেখার দায়িত্বও নাকি স্ত্রী সঁপে দেন তাঁর হাতেই। এদিকে চোখের জলে ভাসতে ভাসতে শেখলালের বিলাপ, ‘ঘরে একমুঠো চালও নেই যে গিয়ে খাব! দিদি টাকা দিয়েছেন। কিন্তু কী হবে তাতে! ওই বাড়িতে কীকরে ফিরব? সব তো শেষ হয়ে গেল! পরিবারটাই তো ছারখারা হয়ে গেল।’

শেখলালের এই গুরুতর অভিযোগের প্রতিক্রিয়ায় অনুব্রত মণ্ডল অবশ্য জানিয়েছেন, তিনি কোনও শেখলালকেই চেনেন না। যে এসব বলছে তার সবটুকুই নাকি শেখানো বুলি।


Katha Bhattacharyya

সম্পর্কিত খবর