বাংলা হান্ট ডেস্ক : গতকাল সকালেই হাতে কালো পতাকা নিয়ে ঠাকুরবাড়িতে জমায়েত করেন মতুয়ারা। শুরু হল তুমুল বিক্ষোভ, স্লোগান! নেতৃত্বে জাহাজ প্রতিমন্ত্রী শান্তনু ঠাকুর (Shantanu Thakur)। পরিস্থিতি সামাল দিতে দিয়ে রীতিমতো হিমশিম খেতে হয় পুলিসকে। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhishek Banerjee) বলেন, ‘আমি কী করে ঢুকতে না পারি, জোরজবরদস্তি মন্দিরটাকে ঘিরে রেখে দিয়েছে বিজেপির (Bharatiya Janata Party) লোক দিয়ে। এই মন্দির কারও পৈতৃক সম্পত্তি নয়। যে কোন ধর্মের মানুষ এখানে আসতে পারে’। শান্তনু ঠাকুরে তাঁর চ্যালেঞ্জ, ‘ও বলেছে আমি চলে যাওয়ার পর ঠাকুরনগরের মাটিটা গোবর জল দিয়ে ধোবে। আমি ৩ মাস অন্তর আসব। ক্ষমতা থাকলে আটাক’।
অভিষেকের চ্যালেঞ্জের পাল্টা সরব হয়েছেন শান্তনু ঠাকুর। এক টিভি চ্যানেলে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বলেছেন, ‘অভিষেক) ঢুকতে পারেননি এটা বড় কথা। ৫ হাজারের বেশি পুলিস মোতায়েন করে আসতে হয়েছে। আমি কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। তবুও আমার সঙ্গে এত পুলিস থাকে না। সে কোন হনু। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বংশধর বলে কি সে রাজা হয়ে গেছে? পুলিসকে সঙ্গে নিয়ে গরম দেখানো যায়। একা পুজো দিতে আসুন। দেখব কত দম আছে।’
শান্তনু এদিন আরও বলেন, ‘অভিষেক তিন মাস ওর আবার আসবে বলেছে। ওর যদি দম থাকে আমাকে জানিয়ে আসুক। রাতের অন্ধকারে নয়, দিনের আলোয় আসুক। ও সাংসদ না থাকলে তো ওকে খুঁজেও পাওয়া যাবে না। আজ ও যেটা করল সেটা মতুয়ারা দেখেছে। এর জবাব দেওয়া হবে।’
এরপর, অভিষেককে ‘শিশু’ বলেও কটাক্ষ করেন শান্তনু। বলেন, ‘ও শিশু। বাংলা সম্পর্কে এখনও অনেক জানতে হবে। ওঁর চ্যালেঞ্জ অনেক দেখেছি। ওঁর চ্যালেঞ্জকে চ্যালেঞ্জ বলে মনেই করি না।’ অভিষেকের মন্দিরে পুজো দেওয়ার প্রসঙ্গে শান্তনু বলেন, ‘পঞ্চায়েত নির্বাচন ঘোষণা হতে এখন পুজো দিতে এসেছেন কেন? এত দিন কোথায় ছিলেন!’ অভিষেকের সফরের পরই মন্দির-সহ গোটা ঠাকুরবাড়িকে গোবরজল দিয়ে ধুয়ে পবিত্র করার কথা বলেন শান্তনু।
অভিষেক ঠাকুরনগর ছাড়ার পরই তৃণমূল এবং বিজেপির সংঘর্ষ শুরু হয়। বিজেপির অভিযোগ, তৃণমূলের লোকজনের মারে তাদের বেশ কয়েক জন আহত হন। তৃণমূলও হামলার অভিযোগ করেছে বিজেপির বিরুদ্ধে। আহতদের আলাদা আলাদা ভাবে হাসপাতালে নিয়ে গিয়েছিলেন তাঁদের রাজনৈতিক সতীর্থরা। সেখানেও দুই দলের সমর্থকরা হাতাহাতিতে জড়ান।
তাঁদের মারধর করা হয়েছে বলে পুলিসের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন শান্তনু এবং বনগাঁ উত্তরের বিজেপি বিধায়ক অশোক কীর্তনিয়া। হাসপাতালে মারামারির সময় বেশ কয়েক জনকে আটক করেছে পুলিস। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে গিয়ে বেশ কয়েক জন পুলিসকর্মীও আহত হন। সব মিলিয়ে সকাল থেকে শুরু হওয়া রাজনৈতিক উত্তেজনা সন্ধ্যাতেও বহাল মতুয়া অধ্যুষিত ঠাকুরনগরে।