বাংলা হান্ট ডেস্ক: ভারতের পড়শি দেশ পাকিস্তান (Pakistan) সম্প্রতি ভয়াবহ বন্যার সম্মুখীন হয়েছে। শুধু তাই নয়, প্রথম থেকেই অর্থনৈতিকভাবে দুর্বল থাকা ওই দেশ এই চরম প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের মুখোমুখি হয়ে আরও বিপদে পড়েছে। এক কথায়, রীতিমতো ভেঙে পড়েছে সেখানকার অর্থনৈতিক ব্যবস্থা। বন্যার জেরে কৃষিজমি এবং ব্যবসা-বাণিজ্যের পাশাপাশি পাকিস্তানের শহরাঞ্চলের সঙ্গে সংযোগপ্রদানকারী সড়কগুলিও ক্ষতির মুখে পড়েছে।
এমতাবস্থায়, এই সঙ্কটের মুখোমুখি হয়ে এবার চরম হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়লেন পাক প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরীফ (Shehbaz Sharif)। ইতিমধ্যেই দেশের অর্থনীতির একটি দুর্বল চিত্র উপস্থাপন করে, পাক প্রধানমন্ত্রী জানিয়েছেন যে, “এবার মিত্ররাও পাকিস্তানকে এমন একটি দেশ হিসেবে দেখছে যেটি ক্রমাগত অর্থের জন্য ভিক্ষা করছে।” শরীফ বলেন, “এমনকি ক্ষুদ্র অর্থনীতিও পাকিস্তানকে পেছনে ফেলে দিয়েছে এবং আমরা গত ৭৫ বছর ধরে ভিক্ষার পাত্র নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছি।”
এই প্রসঙ্গে স্থানীয় সংবাদপত্র ডন নিউজ শরীফকে উদ্ধৃত করে জানিয়েছে, “প্রধানমন্ত্রী বুধবার আইনজীবীদের একটি সম্মেলনে ভাষণ দেওয়ার সময় বলেছিলেন যে, আজ আমি যখন মিত্র দেশে যাই বা তাদের ফোন করি, তারা মনে করে আমরা তাদের কাছে টাকা চাইতে এসেছি।” শরীফের মতে, আগে থেকেই দেশের অর্থনীতি একটি চ্যালেঞ্জিং পরিস্থিতির মুখোমুখি ছিল। এমতাবস্থায়, বন্যা আরও সমস্যার সৃষ্টি করেছে।
৩০ বছরের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ বন্যার সঙ্গে লড়াই করছে পাকিস্তান: অর্থনৈতিক সঙ্কটের মধ্যে থাকা দেশটি গত ৩০ বছরের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ বন্যার সম্মুখীন হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। শুধু তাই নয়, চলতি বছরের জুনের শুরু থেকে, বন্যার কারণে প্রায় ১,৪০০ জনেরও বেশি মানুষ মারা গিয়েছেন সেখানে। পাশাপাশি, প্রায় ৩.৩ লক্ষ মানুষ এই দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। এমতাবস্থায়, বন্যার কারণে পাকিস্তানের অর্থনীতি দ্বিগুণ প্রভাবিত হয়েছে।
দেশের এক তৃতীয়াংশ এলাকা জলের তলায় ছিল: পরিসংখ্যান অনুযায়ী, এই ভয়াবহ বন্যার কারণে পাকিস্তানের এক-তৃতীয়াংশ এলাকা জলের তলায় চলে যায়। শুধু তাই নয়, সেই দেশে প্রতি সাতজন বাসিন্দাদের মধ্যে একজন বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। জানা গিয়েছে, ইতিমধ্যেই প্রায় ৭৮ হাজার বর্গ কিলোমিটার (২.১ কোটি একর) জমির ফসল সম্পূর্ণ জলমগ্ন হয়েছে সেখানে। যার ফলে প্রায় ১২ বিলিয়ন ডলারের ক্ষতি হয়েছে বলে অনুমান করা হচ্ছে। পাশাপাশি, এখনও পাকিস্তানের বিভিন্ন প্রান্তে ত্রাণ শিবিরেই আশ্রয় নিয়েছেন কয়েক হাজার মানুষ। এমতাবস্থায়, আমেরিকাসহ একাধিক দেশ পাকিস্তানকে সাহায্য করতে এগিয়ে এসেছে।