বাংলা হান্ট ডেস্ক : তিনি শতরূপ ঘোষ (Shatarup Ghosh)। বিধানসভায় বামের (Communist Party of India) শূণ্য হয়ে যাওয়ার পর লাল পার্টির মুখ হিসাবে যে কয়েকজনের নাম বাংলার রাজনীতির ময়দানে ঘুরে বেড়াচ্ছে তাঁদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন শতরুপ। সংবাদমাধ্যমকে যিনি নীতি আদর্শহীন বলে আক্রমণ করলেও সংবাদ শিরোনামে থাকতে বেশ পছন্দ করেন। তা সে ২২ লক্ষ টাকার গাড়ি কিনে হোক বা নিজের জন্মদিনের তারিখ পাল্টে ‘আধুনিক লেনিন’ সাজার ইচ্ছা প্রকাশের জন্যই হোক। এমনই মনে করেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞ মহল।
বাম নেতা শতরূপ ঘোষ বাংলা হান্ট কনক্লেভ ২০২৩-এর বিতর্ক সভায় এসে নিজের ভাষণ শুরুই করলেন সংবাদমাধ্যমকে নজিরবিহীন আক্রমণ করে। তিনি বললেন, ‘সংবাদমাধ্যম কি বাংলার মানুষকে বোকা ভাবেন? আপনারা যা ইচ্ছা তাই বলবেন?’। শতরুপের এই গাত্রদাহের মূল কারণ হল এই বিতর্কসভার একটি বিষয়। কবিতার ছন্দে সেখানে হয়, ‘যে হাতে কাস্তে ধরে কাটার কথা ছিল ঘাসফুল/ নীতি আদর্শ সব ভুলে উপড়াতে চায় পদ্ম ফুল?’ এই লাইনদুটিই ক্ষুব্ধ করে তরুণ বাম নেতাকে।
এদিন শতরূপ আরও বলেন, ‘আমাদের জন্মদাগ হল সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে লড়াই করা। যদি নীতি আদর্শ ভুলতাম তাহলে আমরা পদ্ম ফুল উপড়াতাম না। নীতি আদর্শ নিয়ে চলি বলেই বাজপেয়ি, আডবাণীর পার্টিকে, মোদি, যোগির পার্টিকে উপড়ে ফেলতে চাই। সংবাদমাধ্যম নিজের নীতি আদর্শ ভুলতে পারে, কমিউনিস্ট পার্টি ভোলে নি। কমিউনিস্ট পার্টি বিজেপির বিরুদ্ধে ছিল, বিজেপির বিরুদ্ধে আছে, আর বিজেপির বিরুদ্ধে থাকবেও।’
এবার সমগ্র সংবাদমাধ্যমকে নিশানা করে শতরূপ বলেন, ‘আপনারা এই প্রথমবার বলেননি যে সিপিএম তৃণমূল জোট করেছে। আপনারাই বলেন বাংলায় কুস্তি, দিল্লিতে দোস্তি। ২০১২ সালে প্রণব মুখোপাধ্যায় রাষ্ট্রপতি হওয়ার সময়কাল থেকে শুনে আসছি এই কথাগুলো। সংবাদমাধ্যম গত ১০ বছরে কম করে ১০ বলেছেন যে সিপিএম-তৃণমূল জোট করছে। তৃণমূলের সঙ্গে বরং বোঝাপড়া করেছিল বিজেপি। তৃণমূলের চোরগুলোকে দলে ঢুকিয়েছে।’
শতরূপ আরও বলেন, ‘বিজেপি রাজনৈতিক দল, তারা নিজেদের মতো ন্যারেটিভ তৈরি করবে। আমি বামপন্থী, আমি আমার মতো ন্যারেটিভ তৈরি করব, তৃণমূল তার নিজের মতো তৈরি করবে। সংবাদমাধ্যমের এত কী দায় পড়েছে বলুন তো, যে আপনারাও নিজেদের মতো ন্যারেটিভ তৈরি করছেন? আপনারা তো কর্পোরেট বিজনেস ম্যানদের কাছে বিক্রি হয়ে গেছেন। ১০ বছর ধরে আর কত মিথ্যা প্রচার করবেন?’