‘একজন হাফ প্যাসেঞ্জার …’ নাম না করেই আরাবুলকে নিশানা শওকতের, বিঁধলেন নওশাদকেও

বাংলা হান্ট ডেস্কঃ টানা পাঁচ মাস জেলবন্দি থাকার পর আদালতের নির্দেশে শর্ত-সাপেক্ষ জামিন পেয়েছেন আরাবুল ইসলাম। তারপর আরাবুলহীন ভাঙড়ে (Bhangar) লোকসভা নির্বাচনে শওকত মোল্লার নেতৃত্বে বিপুল ভোটে জয়লাভ করেছিল শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস। দীর্ঘ দশ মাস পর পুলিশ পাহাড়ায় তিনি পা রাখেন ভাঙড়ে (Bhangar)।

 আরাবুলকে নিশানা ভাঙড়ের (Bhangar) বিধায়ক শওকতের, বিঁধলেন নওশাদকেও

আরাবুল ভাঙড়ে (Bhangar) পা রাখা মাত্রই গোটা এলাকায় তৈরি হয় চাপা উত্তেজনা। সেই সাথেমাথাচাড়া দিয়েছে আরাবুল বনাম নওশাদ গোষ্ঠীর মধ্যে বিবাদও। এরই মাঝে বেফাঁস মন্তব্য করে বসলেন ভাঙড়ের (Bhangar) তৃণমূল বিধায়ক শওকত মোল্লা। নাম না করেই আরাবুল ইসলামকে বেলাগাম আক্রমণ শানিয়েছেন তিনি। একই সাথে এদিন তাঁর নিশানায় ছিলেন আইএসএফ বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকিও।

আরাবুল-নওশাদ গোষ্ঠীর বিবাদের মধ্যেই নাম না করেই  এদিন আরাবুল ইসলামকে ‘হাফ প্যাসেঞ্জার’ বলে কটাক্ষ করলেন  শওকত মোল্লা। তাঁর কথায়, ‘একজন হাফ প্যাসেঞ্জার আছেন। যিনি কোর্টের একটা রায়েই উজ্জীবিত হয়ে পড়েছেন। বলছেন, তিনিই নাকি ভাঙড়ের শেষ কথা। ভাঙড়ের জন্য তিনিই নাকি সবকিছু করেছেন।’ এরপরেই শওকত মোল্লার প্রশ্ন, ‘তাহলে এই মঞ্চে যারা বসে আছেন, তাঁরা কারা? এই মঞ্চে যে সমস্ত অঞ্চল সভাপতি, জেলা পরিষদের সদস্য,পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য কিংবা পঞ্চায়েত প্রধানরা বসে আছেন তাঁরা  কি দলের জন্য কিছু করেননি?’

রবিবার শোনপুরের একটি সভায় এমনই একাধিক বিস্ফোরক মন্তব্য করেন শওকত মোল্লা। এদিন তিনি দাবি করেন আইএসএফের মাধ্যমে নাকি তাঁকে ফাঁসানোর চেষ্টা করা হয়েছিল। এমনকি হাই কোর্টে পাঁচটি পিটিশন-ও করা হয়েছিল। সেই কথা টেনেই এদিনের সভা থেকে তৃণমূল বিধায়ক বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে অনেক চক্রান্ত করা হয়েছে। তারপরেও কিছু করতে পারেনি। এই বেইমানদের আপনারাও চিনে নিন। এরাই ২০২৪ সালে জেলের মধ্যে ছিল।’

আরও পড়ুন: ভোটের আগে বসিরহাটের ১০০ টি উদ্বাস্তু পরিবার পেল জমি! দু-হাত তুলে আশীর্বাদ মমতাকে

সামনেই ২০২৬-এর বিধানসভা নির্বাচন। শওকত মোল্লার দাবি লোকসভা ভোটে আরাবুল জেলে থাকাকালীন তাঁর নেতৃত্বে দল যেমন ৮৭ হাজার ভোটে জিতেছিল, তেমনি সবাই ভরসা করলে ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনেও ভাঙড় থেকে এক লক্ষেরও বেশি ভোটে জিতবেন তিনি। পাশাপাশি তিনি দাবি করেন পঞ্চায়েত সমিতি থেকে লক্ষ-লক্ষ টাকা লুট করা হয়েছে। হুমকি দেওয়া হচ্ছে ব্যবসায়ীদেরও। তাই জনসাধারণের উদ্দেশ্যে এদিন শওকত মোল্লার  প্রশ্ন ছিল সাধারণ মানুষ কার দিকে থাকবেন?

TMC 3 1

একইসাথে এদিন শওকত মোল্লার  নিশানায় ছিলেন আইএসএফ বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকিও। নাম না করেই তাঁর উদ্দেশ্যেও শওকত বলেন,’আরও একজন  আইএসএফের দালাল আছেন। সে আবার ১৫ বছরের বাচ্চা ছেলেগুলোর হাতে বোমা,গুলি,বন্দুক তুলে দিচ্ছেন। এসব করেই ভাঙড়কে অশান্ত করে তুলেছেন। এদেরকে আর কোনও সুযোগ দেওয়া হবে না। ভাঙড় কলকাতা পুলিশের আওতায় আসায় আইএসএফের সমস্ত সমাজবিরোধীদের তারা ঘরে ঢুকিয়ে দিয়েছে। তাই গত এক বছরে ভাঙড়ের মানুষ কোনও বোমার আওয়াজ পাননি।’

অন্যদিকে ভাঙড়ের আইএসএফ নেতা জেলা পরিষদ সদস্য রাইনুর হক সব দোষ শওকত মোল্লার ঘাড়ে চাপিয়ে বলেছেন, ভাঙড়ের সব অশান্তির জন্য দায়ী শওকত মোল্লা। তার দাবি শোনপুরের সভা পুরোপুরি ফ্লপ।

Anita Dutta
Anita Dutta

অনিতা দত্ত, বাংলা হান্টের কনটেন্ট রাইটার। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাংবাদিকতায় স্নাতকোত্তর। বিগত ৪ বছরের বেশি সময় ধরে সাংবাদিকতা পেশার সাথে যুক্ত।

সম্পর্কিত খবর