বাংলাহান্ট ডেস্ক : চিত্র পরিচালক নন্দিতা রায় এবং শিবপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় ডাকাত সর্দার শেখ একলাসের উপর ভিত্তি করে তৈরি করেছেন বাংলা ছবি ‘বহুরূপী’। দুর্গাপুজায় বাংলার বিভিন্ন প্রেক্ষাগৃহে সেই ছবি মুক্তিও পেয়েছে। ছবিটিকে ঘিরে দর্শকদের মধ্যেও উন্মাদনা কম নয়। তবে এই ছবিটি যার জীবনের উপর নির্ভর করে নির্মিত, সেই ডাকাত সর্দার শেখ একলাসের (Sheikh Eklas) জীবন কাহিনী চমকে দেবে আপনাকে।
বহুরূপীর আড়ালেই লুকিয়ে শেখ একলাসের (Sheikh Eklas) ডাকাতি
শেখ একলাস (Sheikh Eklas) ১৯৯৮ থেকে ২০০২ পর্যন্ত রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে কমপক্ষে ১৯ টি ব্যাংক ডাকাতি করেছেন। একটি খেলনা পিস্তল নিয়ে ভয় দেখিয়ে সবাইকে নাস্তানাবুদ করে দিতেন একলাস। ডাকাত নেতা থেকে আজ একলাস আদালতের মুহুরী। ডাকাতি ছেড়ে বর্তমানে এই পেশাকেই এখন আপন করে নিয়েছেন এককালের ত্রাস শেখ একলাস।
আরোও পড়ুন : প্রেমে পড়েও মন ভেঙেছে বারবার! এতদিনে জানা গেল সালমান খানের অবিবাহিত থাকার কারণ
অতীত দিনের কথা স্মরণ করে একলাস বলেন, ‘পরিবারের লোকেরা আমার নামে মিথ্যা অভিযোগ করে জেলে পাঠিয়ে দিয়েছিল। সেখানে পরিচয় হয় কাঁকিনাড়ার ব্যাঙ্ক ডাকাত শ্যামল চক্রবর্তীর সঙ্গে। তিনি আমাকে ডাকাতি করার বুদ্ধি দেন। জেলে বসেই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম, ডাকাতি করলে ছোটখাটো জায়গায় করব না, একেবারে ব্যাঙ্কের ভল্টে থাবা বসাব।”
পাশাপাশি তার আরোও সংযোজন, ‘জামিন পেয়ে বাড়ি ফিরে বৌ-বাচ্চাদের খাবার কিনে দেওয়ার মতো টাকা ছিল না। এরপর শ্যামলের পরিকল্পনা অনুযায়ী কাজ শুরু করি। এক থেকে দুই, শেষ পর্যন্ত ডাকাতির সেই সংখ্যাটা ১৯-এ গিয়ে দাঁড়ায়। তারপর ধরা পড়ে যাই। দলের এক সদস্য গদ্দারি করেছিল আমার সঙ্গে।’হাওড়ার উলুবেড়িয়ার সমবায় ব্যাঙ্কে ছিল একলাসের (Sheikh Eklas) শেষ অপারেশন।
আরোও পড়ুন : মিলেছিল ‘ডাইনি’ তকমা, ৪ বছর পর সুশান্ত মামলায় স্বস্তি রিয়ার! কোথায় দাঁড়িয়ে CBI তদন্ত?
একলাস (Sheikh Eklas) আরো জানান, , ‘২০০২ নাগাদ বহরমপুরের পঞ্চাননতলার সমবায় ব্যাঙ্কে ১৩ লক্ষ টাকা ডাকাতি করেছিলাম। হাতে একটা খেলনা পিস্তল এবং খেলনা বোমা নিয়ে ভয় দেখিয়ে উপস্থিত সকলকে বলি, আমরা বেকার ছেলে। কারও ক্ষতি করতে চাই না। শুধু ব্যাঙ্কের সিন্দুক থেকে টাকা নিয়ে চলে যাব। পরের দিন কংগ্রেস নেতা অধীর চৌধুরী বিবৃতি দেন, কে এই ডাকাত, যে থানার উপরে থাকা ব্যাঙ্কে ডাকাতি করে চলে গেল!’
২০০২ সালে পুলিশের হাতে গ্রেফতার হন ১৯ টি ডাকাতির ঘটনার নায়ক একলাস (Sheikh Eklas)। সংশোধনাগারে বসেই আইন নিয়ে পড়াশোনা করেছেন একলাস। আলিপুর আদালতে আইনজীবী জয়ন্ত নারায়ণ চট্টোপাধ্যায়ের নজরে পড়ে যান ‘বহুরূপী’ ছবির নেপথ্য নায়ক। ২০১০ সালে দীর্ঘ আইনি লড়াইয়ের পর জেলমুক্ত হন একলাস। তারপর থেকেই তিনি কাজ করছেন জয়ন্ত নারায়ণের কাছে।