বাংলা হান্ট ডেস্কঃ শুক্রবার রাজ্যে দ্বিতীয় দফার ভোটগ্রহণের দিন সন্দেশখালি (Sandeshkhali) থেকে উদ্ধার হয়েছে বিপুল অস্ত্রভাণ্ডার। গতকাল সকালে ‘শাহজাহান গড়ে’ (Sandeshkhali) হানা দেন কেন্দ্রীয় এজেন্সির আধিকারিকরা। এরপর বিকেলের দিক করে সেখানে পৌঁছয় এনএসজি। টানা কয়েক ঘণ্টা ধরে তল্লাশি চালানোর পর উদ্ধার হয় প্রচুর পরিমাণে আগ্নেয়াস্ত্র। এবার জানা গেল, কীভাবে এই অস্ত্রভাণ্ডারের খোঁজ পেয়েছিল সিবিআই (CBI)।
সূত্রের খবর, সন্দেশখালি কাণ্ডের তদন্তে বর্তমানে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার মূল ভরসা শেখ শাহজাহানের ভাই আলমগির (Sheikh Alamgir)। সন্দেশখালি মামলায় তিনি রাজসাক্ষী হতে চান বলে খবর। আর সেই জন্যই গোয়েন্দাদের একের পর এক তথ্য দিচ্ছেন তিনি। আলমগিরের থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ীই সিবিআই (Central Bureau of Investigation) আধিকারিকরা সন্দেশখালির আগারহাটির মল্লিকপাড়ায় হানা দেয় বলে খবর।
এদিকে স্থানীয়দের কথায়, সন্দেশখালি এলাকার ‘মুকুটহীন সম্রাট’ ছিলেন শাহজাহান। তাঁর অঙ্গুলিহেলনে চলত গোটা এলাকা। গায়ের জোরে জমি দখল, ভেড়ি দখল করতেন বলে অভিযোগ, বহিষ্কৃত এই তৃণমূল নেতার বিরুদ্ধে নারী নির্যাতনের মতো গুরুতর অভিযোগও রয়েছে। অন্যদিকে শাহজাহান-সহোদর আলমগিরও কম যান না। সূত্রের খবর, দাদার সঙ্গে তাঁর ক্ষমতা দখলের লড়াই চলতো।
বর্তমানে শাহজাহান এবং আলমগির দু’জনেই কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার জালে ফেঁসেছে। এই সুযোগটাকেই আলমগির কাজে লাগাতে চাইছেন বলে জানা যাচ্ছে। দাদার অনুপস্থিতিতে ফাঁকা ‘সাম্রাজ্য’ দখল করাই আলমগিরের উদ্দেশ্য বলে খবর। সেই জন্য সন্দেশখালি রাজসাক্ষী হতে চান তিনি। সিবিআইকে একের পর এক তথ্যের জোগানও দিচ্ছেন আলমগির।
এদিকে গতকাল সন্দেশখালিতে শাহজাহান ঘনিষ্ঠ তৃণমূল পঞ্চায়েত সদস্য হাফিজুল খাঁয়ের ভগ্নিপতি আবু তালেব মোল্লার বাড়িতে হানা দেয় সিবিআই। সেখানে তল্লাশি চালিয়ে উদ্ধার হয় বিপুল অস্ত্রভাণ্ডার। এরপর রোবট নামিয়ে তল্লাশি চালায় এনএসজি। প্রায় ঘণ্টা খানেকের বেশি সময় ধরে তল্লাশি চালিয়ে ওই বাড়ি থেকে একটি রহস্যময় ব্যাগ বের করে নিয়ে আসে সেই রোবটটি।
কেন্দ্রীয় এজেন্সির তরফ থেকে জানানো হয়েছে, বহুমূল্য ৩টি বিদেশি বন্দুক, ১টি দেশি বন্দুক, ১টি কোল্ট অফিশিয়াল পুলিশ রিভলভার এবং ১টি করে দেশি এবং বিদেশি পিস্তল উদ্ধার করা হয়েছে। সেই সঙ্গেই বুলেট এবং কার্তুজও বাজেয়াপ্ত করেছেন গোয়েন্দারা। এই অস্ত্র কীভাবে এল? কোথা থেকে এল? এখন এই প্রশ্ন ভাবাচ্ছে তদন্তকারীদের। বিপাকে ফেলার জন্য শাহজাহান ঘনিষ্ঠের আত্মীয়ের বাড়িতে এই অস্ত্র আলমগিরই রেখেছিলেন কিনা সেই প্রশ্নও দেখা দিয়েছে। সব দিকই তদন্তকারীরা খতিয়ে দেখছেন বলে খবর।