বাংলা হান্ট ডেস্ক: সাধারণত কম সময়ে বেশি জনের রান্নার ক্ষেত্রে সমস্যায় পড়তে হয় বাড়ির মহিলাদের। পাশাপাশি, খরচ হয় জ্বালানিরও। এমতাবস্থায়, এই অসুবিধে দূর করতেই অভিনব এক চুল্লি বানিয়ে সবাইকে অবাক করে দিলেন রাজস্থানের উদয়পুরে বসবাসকারী শের খান নামের এক ব্যক্তি। তিনি এমন এক চুল্লি বানিয়েছেন যার সাহায্যে মাত্র ৩০ মিনিটেই তৈরি করা সম্ভব ২৫ জনের খাওয়ার।
মূলত, ডাল-বাটি রাজস্থানের একটি বিখ্যাত খাওয়ার। প্রতিটি বিয়ের অনুষ্ঠান বা ধর্মীয় অনুষ্ঠানের সময় অবশ্যই তৈরি করা হয় এটি। এদিকে, এই ডাল-বাটি রান্না করার ক্ষেত্রে ডাল এবং বাটি আলাদাভাবে তৈরি করতে হয়। যাতে পরিশ্রমের পাশাপাশি লেগে যায় অনেকটা সময়ও। সেই কথা মাথায় রেখেই শের খান বানিয়েছেন এই চুল্লিটি।
রাজস্থানের পরিবারগুলি তুলনামূলকভাবে বড় হওয়ায় সদস্যসংখ্যাও বেশি থাকে। পাশাপাশি, ডাল-বাটি খুব জনপ্রিয় পদ হওয়ার জন্য প্রায়শই তৈরি হয়ে এই খাওয়ার। এমতাবস্থায়, শের খানের তৈরি চুল্লিতে ডাল-বাটিও দ্রুত তৈরি করা যায়। প্রথমে মসুরের সাহায্যে ডাল সরাসরি আগুনে রান্না করা হয় এবং তারপর তাপ দিয়ে বাটি তৈরি করা হয়।
এদিকে, সাধারণত মিষ্টান্ন তৈরি কারীরা চুল্লিতে কাঠ বা গোবরের জ্বালানি ব্যবহার করে ডাল রান্না করেন এবং অন্য চুল্লিতে তাঁরা বাটি তৈরি করেন। স্বাভাবিকভাবে, এই কাজটি অনেক শক্তি এবং সম্পদ খরচ করে। তাই এটিকে বাঁচানোর জন্য, একসাথে এই দুটি পদই রান্না করা যাবে এই চুল্লিতে।এই প্রসঙ্গে শের খান দাবি করেছেন যে, তাঁর তৈরি চুল্লিটি সামাজিক ও ধর্মীয় অনুষ্ঠানের সময়ে কয়েকশ মানুষের খাবার দ্রুত রান্না করতে পারে। অন্যদিকে এর অনন্য ডিজাইনের কারণে এটি বার্গার এবং পিজ্জার মতো ফাস্ট ফুডও তৈরি করতে পারে বলে জানিয়েছেন তিনি।
২ কেজি কাঠ খরচ হয়:
একটি সাধারণ মাটির চুল্লিতে ২৫ জনের রান্না করতে কমপক্ষে ১০ থেকে ১২ কেজি কাঠ পোড়াতে হয়। তবে এই বিশেষ চুল্লিতে মাত্র ২ কেজি কাঠের সাহায্যেই ২৫ জনের রান্না করা খুব সহজেই সম্ভব।
শুধু তাই নয়, এই চুল্লিতে জ্বালানি থেকে কম ধোঁয়াও নির্গত হয়, যার কারণে পরিবেশেরও ক্ষতি হয় না। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে, শের খান গত বছরের ডিসেম্বরে উদয়পুরে অনুষ্ঠিত গ্রামীণ শিল্প মেলায় এই বিশেষ চুল্লির দোকানটি স্থাপন করেছিলেন যা স্বাভাবিকভাবেই পছন্দ করেছেন সকলেই।
ফার্ম হাউস এবং ধাবার জন্য উপকারী:
শের খান জানিয়েছেন, যে সমস্ত ব্যবসায়ী বিভিন্ন খাদ্যদ্রব্য তৈরি করেন তাঁদের জন্য এই চুল্লি অত্যন্ত উপকারী। এমনকি, এই চুল্লির সাহায্যে দুগ্ধ খামারের মালিকরা প্রচুর পরিমাণে দুধ জাল দেওয়ার মাধ্যমে বিভিন্ন খাদ্য সামগ্রী তৈরি করতে পারেন বলেও জানিয়েছেন তিনি। শুধু তাই নয়, ধাবা ও হোটেলের কর্মীরাও গ্যাসের পরিবর্তে এই চুল্লিতে রান্নার মাধ্যমে কম কাঠ এবং শক্তি খরচ করতে পারেন। এতে খরচও কমবে।