বাংলা হান্ট ডেস্কঃ প্রথমবার ভোট দিতে গিয়েই গুলিতে বেঘোরে প্রাণ হারিয়েছে ছেলে। খবর শুনে স্বাভাবিকভাবেই বুক ভাঙ্গা কান্নায় ভেঙে পড়েছিলেন পরিবারের সকলে। তারপর রাজনৈতিক চাপানউতোরে কেটে গেছে গোটা একটা মাস। ইতিমধ্যেই বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে বাংলার মসনদে তৃতীয়বার কামব্যাক
করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রথম থেকেই পরিবারের পাশে দাঁড়ানোর আশ্বাস দিয়েছিলেন তারা। কিন্তু রাজি হয়নি বিজেপি সমর্থক আনন্দ বর্মনের পরিবার। এবার শেষমেষ আর্থিক সাহায্যের পাশাপাশি সরকারি চাকরি নিতেও প্রস্তুত তারা। প্রতিশ্রুতি মত মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে সঠিক ব্যবস্থা নেবেন এ বিষয়েও আশাবাদী তারা।
শুক্রবার শীতলকুচির তৃণমূল নেতা পার্থপ্রতিম এ রায়ের সঙ্গে দেখা করেন এই নিহত বিজেপি কর্মীর পরিবারটি। তাদের সঙ্গে নিয়েই এদিন সাংবাদিক বৈঠক করেন পার্থপ্রতিম। সেখানে তিনি জানান বৃহস্পতিবার আনন্দের পরিবারকে বার্তা পাঠিয়েছিলেন তিনি। চেয়ে ছিলেন তাদের সঙ্গে দেখা করতে। তাতে রাজি হন পরিবারের সদস্যরা। সেইমতো শুক্রবার সকালে দাদা গোবিন্দ বর্মন, মা বাসন্তী বর্মন এবং মামা জগদিশ রায় দেখা করেন তৃণমূল নেতার সঙ্গে। জানান সরকারি সাহায্য নিতে রাজি তারা। এর আগে যদিও তৃণমূল সরকারের থেকে কোনরকম সাহায্য নিতে রাজি হয়নি এই পরিবার। বরং সব জানিয়ে দিয়েছিলেন বিজেপি সরকার এলে তাদের থেকেই সাহায্য গ্রহণ করবেন। তাহলে কি সেদিন চাপের মুখেই একথা বলেছিলেন তারা?
সাংবাদিকরা এই প্রশ্ন তুলতেই মাছ পাতায় তাদের থামিয়ে দেন পার্থপ্রতিম। পুরনো প্রসঙ্গ তুলে লাভ নেই বলেন তিনি। এরপর আনন্দের মা অবশ্য বলেন, “চাকরি নেব। ঘর করব। মুখ্যমন্ত্রীর কাছে দোষীদের শাস্তি চাইবো।”
একি সুর আনন্দের দাদা গোবিন্দের গলাতেও। তিনি বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী সবার মুখ্যমন্ত্রী। বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। তিনি যদি দশটা পরিবারকে চাকরি দেন নিতে বাধা নেই। ভাইকে যারা মেরেছে সেই দোষীদের শাস্তি হোক। ”
আনন্দের পরিবারের এই মত বদলে আপত্তি তোলেননি স্থানীয় বিজেপি নেতৃত্বও। জেলা বিজেপির সম্পাদক সঞ্জয় চক্রবর্তী জানান, “অনেক বড় ক্ষতি হয়েছে ওদের পরিবারে। ছেলে চলে গিয়েছে। তার পরিবর্তে যত অর্থই দেওয়া হোক না কেন, কোনও দিন ক্ষতিপূরণ হবে না। তবে বর্তমান পরিস্থিতির দিকে তাকিয়ে বলা যায়, চাকরি পেলে দারিদ্র থেকে কিছুটা রেহাই পাবে পরিবারটি। আনন্দের হত্যাকারীদের কঠোর শাস্তির দাবি করছি আমরা।’’
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য গত ১০ এপ্রিল শীতলকুচির পাঠানটুলির শালবাড়ির ২৮৫ নম্বর বুথে ভোট দিতে গিয়ে গুলিবিদ্ধ হয়ে মৃত্যু হয় ১৮ বছরের আনন্দের। একইদিনে গুলি চলে জোড়পাটকির ১২৬ নম্বর বুথেও। নিহত হন মনিরুজ্জামান রহমান, সামিউল মিয়াঁ, সামিদুল মিয়াঁ এবং নুর আলম নামে চার তরতাজা যুবক।