রয়েছে মাত্র দু’দিনের তেল, বেতন-পেনশনের জন্যও নেই টাকা! থমকে যেতে পারে পাকিস্তান রেলের চাকা

বাংলাহান্ট ডেস্ক : মহা সংকটে পাকিস্তান রেলওয়ে (Pakistan Railways)। জ্বালানীর অভাবের পাশাপাশি রেল সম্পর্কিত সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণের অভাবের কারণেই আজ পাকিস্তান রেলওয়ে বড়সড় বিপদের মুখে পড়েছে। পাকিস্তানের একটি সংবাদপত্র ডনের (Dawn) প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে, আজকের দিনে দাঁড়িয়ে মাত্র তিন দিনের তেল মজুত থাকায় পাকিস্তান রেলওয়ের মারাত্মক সংকটজনক পরিস্থিতি তৈরী হয়েছে।

সংবাদমাধ্যমের তরফে জানানো হয়েছে, গত এক মাস ধরে ট্রেন চলাচলের জন্য তেলের পরিমাণ কমিয়ে আনা হয়। এর থেকে স্পষ্ট বোঝা যায় যে আর্থিক অবস্থা সংকটে রয়েছে। কিছুদিন আগেও ট্রেনের তেল মজুত ছিল। দিনকয়েক আগেই মাত্র একদিন চলার জন্য ট্রেনের তেল উদ্বৃত্ত থাকায় সরকার করাচি এবং লাহোর থেকে পণ্য ট্রেন চলাচল কমাতে বাধ্য হয়। এটি এমন একটি ঘটনা যা পাকিস্তান রেলওয়ের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো ঘটেছে।

   

আধিকারিকদের তরফে বারংবার সতর্ক করা হলেও সরকার সেকথাকে উপেক্ষা করতে থাকে। এমন চলতে থাকলে পাকিস্তান রেলওয়ের অবস্থা যে আরোও খারাপ হবে একথা বলাই বাহুল্য। এসব ছাড়াও আরও যে সমস্ত কারণে পাকিস্তান রেলওয়ের আজ এই অবস্থা সেগুলি হলো, অদক্ষতা, অবহেলা এবং কর্মকর্তাদের সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণের অভাব। জানা গিয়েছে, রোলিং স্টক, লোকোমোটিভ এবং অবকাঠামো সহ রেলওয়ের বিভিন্ন সম্পদে ব্যবহার হয় না। এছাড়াও রাজনৈতিক দলগুলির দ্বন্দের জন্য দেশে সৃষ্ট রাজনৈতিক অস্থিরতা এই সমস্যাকে আরও বাড়িয়ে তুলেছে।

রেলের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন যে, রেল বিভাগের আর্থিক অবস্থা প্রায় ভেঙে পড়েছে। এমনকি গত এক বছরে অবসর প্রাপ্ত অনেক অফিসারের জন্য গ্র্যাচুইটি যা প্রায় প্রায় ২৫ বিলিয়ন টাকার সমান তা পরিশোধ করার মতো অর্থও রেলের নেই। তিনি আরও বলেন যে, পাকিস্তান রেলওয়ে কর্মচারীদের মাসিক বেতন দিতে সক্ষম নয়। প্রতি মাসের ১ তারিখে যাদের বেতন পাওয়া উচিত তাঁরা ১৫ থেকে ২০ দিনের ব্যবধানে বেতন পাচ্ছেন। সম্প্রতি, ২০ ডিসেম্বর তারিখেও বেতন না পাওয়ায় ট্রেন চালকরা ট্রেন বন্ধ করে সারা দেশে ধর্মঘট করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন।

Pakistan railways

তিনি আরও দাবী করেন যে, ২০১৭-১৮-এর আর্থিক বছরে রেলের আর্থিক অবস্থা ভাল ছিল এবং তার আগে এটির বার্ষিক রাজস্ব প্রতি বছর ২০ বিলিয়ন টাকার অঙ্কে পৌঁছেছিল, যার মধ্যে করাচি থেকে ইউসুফওয়ালার (সাহিওয়াল) কয়লা কর্পোরেশন থেকে প্রাপ্ত আয়ও অন্তর্ভুক্ত ছিল। পরবর্তীতে আয় ধীরে ধীরে কমে যায় এবং এখন যা প্রায় ১৬ হাজার কোটি টাকায় সংকুচিত হয়েছে। জনসংযোগের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সালমান সাদিক শেখ স্বীকার করেছেন যে পিআর আজকাল চরম আর্থিক সংকটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে।

Avatar
Soumita

আমি সৌমিতা। বিগত ৩ বছর ধরে কর্মরত ডিজিটাল সংবাদমাধ্যমে। রাজনীতি থেকে শুরু করে ভ্রমণ, ভাইরাল তথ্য থেকে শুরু করে বিনোদন, পাঠকের কাছে নির্ভুল খবর পৌঁছে দেওয়াই আমার একমাত্র লক্ষ্য।

সম্পর্কিত খবর