বাংলা হান্ট ডেস্কঃ গত ৯ই নভেম্বর ভারতের বহু প্রতীক্ষিত অযোধ্যা মামলার রায়দান হয়। কয়েক দশক ধরে চলা আইনি মামলার পর অযোধ্যা মামলার নিষ্পত্তি হয়। আর সেই দিনই করতারপুর করিডোর খুলে দেয় পাকিস্তান। শিখেদের পবিত্র স্থান গুলোর মধ্যে একটি হল করতারপুর সাহিব। আর এই করতারপুর সাহিব ভারত পাকিস্তান সীমান্তে পাকিস্তানের আওতায় পড়ে। দীর্ঘ ৭০ বছর পর বহু বাধা বিপত্তি কাটিয়ে ভারতের শিখ ধর্মাবলম্বিরা এবার করতারপুর সাহিবে যেতে পারবেন।
করতারপুর করিডোর উদ্বোধন নিয়ে অনেক রাজনৈতিক চাপানউতোরও চলেছে। পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান একদিন ট্যুইট করে জানিয়েছিলেন যে, করতারপুর করিডোরে যাওয়ার জন্য ভারতীয়দের ভিসা পাসপোর্ট লাগবেনা। আবার পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের দাবি খারিজ করে পাক সেনা জানিয়েছিল যে, করতারপুর সাহিবে যাওয়ার জন্য ভারতীয়দের পাসপোর্ট প্রয়োজন। পাক সেনার এই বয়ানের পর ইমরান খানের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল।
আরেকদিকে পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী ক্যাপ্টেন অমরিন্দর সিং পাকিস্তানের উপর অভিযোগ করে বলেছিলেন যে, পাকিস্তান করতারপুর করিডোর উদ্বোধন করে বড়সড় ষড়যন্ত্র রচনা করতে চাইছে। আরেকদিকে করতারপুর করিডোর উদ্বোধনে ডাক পেয়ে কংগ্রেস নেতা নবজ্যোত সিং সিধু (Navjot Singh Sidhu) পাকিস্তান যাওয়ার জন্য মুখিয়ে ছিলেন। বন্ধু ইমরানের ডাকে পাকিস্তান যাওয়ার জন্য সিধু ভারতের বিদেশ মন্ত্রালয়ের সাথে পরপর দুবার আবেদন করে ব্যার্থ হয়েও তৃতীয়বার আবেদন করেন। এরপর বিদেশ মন্ত্রক থেকে ওনাকে পাকিস্তানে যাওয়ার ছাড়পত্র দেয়।
সিধুর পাকিস্তানে যাওয়ার এত উৎসুকতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল নানা মহলে। কারণ এর আগে সিধু পাকিস্তানে গিয়ে সন্ত্রাস বাদের পৃষ্ঠপোষক তথা পাক আর্মি জেনারেল বাজওয়ার সাথে আলিঙ্গন করে বিতর্ক সৃষ্টি করেছিলেন। এছাড়াও সিধু পুলওয়ামা হামলার পর পাকিস্তানকে ক্লিনচিট দিয়ে উলটে ভারতের উপরেই দোষ চাপিয়ে দিয়েছিলেন। এরপর সিধুকে নিয়ে তোলপাড় হয় গোটা দেশ। বয়কট সিধু ক্যাম্পেইন চালিয়ে সনি টিভির কমেডি শো থেকে ওনাকে বাদও দেওয়া হয়।
https://facebook.com/TIP1002/videos/2501635193441419/
এত কিছুর পরেও সিধুর পাকিস্তান প্রেম একটুও কমেনি। করতারপুর করিডোর উদ্বোধনে গিয়ে বন্ধু ইমরান এবং পাকিস্তানের প্রশংসায় পঞ্চমুখ হন কংগ্রেস নেতা সিধু। উদ্বোধনী মঞ্চে পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে বিশ্বের সবথেকে শান্তিপ্রিয় এবং ভালো মানুষ হিসেবে দেখাতে চান সিধু। কংগ্রেস নেতা সিধু বলেন, ‘ইমরান খান গোটা দুনিয়ার মন জয় করে নিয়েছেন।” এমনকি উনি এও বলেন যে, ইমরান খানের মতো মানুষ খুব কম হয়। এছাড়াও উনি ইমরান খানের প্রশংসায় একটি কবিতাও লেখেন। এখন প্রশ্ন হচ্ছে, যেই ইমরান খান জম্মু কাশ্মীর থেকে ৩৭০ ধারা তোলার পর ভারতে জেহাদের ঘোষণা করেছিলেন। এমনকি ভারতকে পরমাণু যুদ্ধের হুমকি দিয়েছিলেন, সেই ইমরান খানকে নিয়ে কংগ্রেস নেতা সিধুর এত গর্ব কিসের?