বাংলা হান্ট নিউজ ডেস্কঃ আজ এশিয়া কাপের (2023 Asia Cup) ফাইনাল। তিন সপ্তাহের হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের পর এই টুর্নামেন্টের ফাইনালে পৌঁছেছে ভারত এবং শ্রীলঙ্কা (India vs Sri Lanka)। সুপার ফোর পর্যায়েও এই দুই দলের দেখা হয়েছিল। সেই সময় লড়াই করলেও শ্রীলঙ্কা, ভারতীয় দলের (Indian Cricket Team) কাছে হেরে গিয়েছিল। তবে গতবারের চ্যাম্পিয়নদের বিরুদ্ধে ফাইনালে লড়াইটাও একেবারেই যে সহজ হবে না সেটা রোহিত শর্মা ভালো করেই জানেন। তাই নিজের নির্বাচিত একাদশে একটি বড় চমক রেখেছিলেন তিনি।
এই মুহূর্তে ভারতীয় দলকে টসে হারিয়ে প্রথমে ব্যাটিং করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে শ্রীলঙ্কা। ভারতীয় দলে একটা উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন রয়েছে। ইনজুরির কারণে মাঠের বাইরে থাকা অক্ষর প্যাটেলের জায়গায় দলে এসেছেন ওয়াশিংটন সুন্দর। তিনি একজন ডান হাতি অফস্পিনার যা ভারতীয় দলে এশিয়া কাপে জুড়ে ছিল না। প্রতিপক্ষের কাছে এটা বড় চমক হতে চলেছে বাদ পড়েছেন শার্দূল ঠাকুর, মহম্মদ শামির মতো প্রথম একাদশের দাবিদাররা। কলম্বোর পিচ স্পিনারদের অত্যন্ত বেশি সাহায্য করছে টুর্নামেন্টে। সেই কথা মাথায় রেখেই হয়তো কুলদীপ এবং জাদেজার পাশাপাশি তাকে দলে এনেছেন রোহিত।
কিন্তু সেই স্পিনাররা বোলিং করতে আসার আগেই দেখা গেল চমক। মেঘলা আবহাওয়া এবং বৃষ্টির কারণে নির্ধারিত সময়ের কয়েক মিনিট বিলম্বে খেলা শুরু হয়। আর শুরুর দিকে এই পরিস্থিতিটা যথেষ্ট ছিল ভারতীয় পেসারদের জন্য। নিজের প্রথম ওভারেই ওপেনার কুশল পেরে ড্রেসিংরুমে ফেরান বুমরা। কিন্তু তখনো বাকি ছিল সিরাজ ম্যাজিক।
নিজের প্রথম ওভারটা মেডেন দেন সিরাজ। এরপর নিজের দ্বিতীয় এবং ম্যাচের চতুর্থ ওভারটি করতে এসে ওভারের প্রথম, তৃতীয়, চতুর্থ এবং ষষ্ঠ বলে গোটা শ্রীলঙ্কা টপ অর্ডার এবং মিডল অর্ডারকে ড্রেসিংরুমে ফেরত পাঠিয়ে দেন তিনি। নিজের দ্বিতীয় ভাগের শেষে তার বোলিং ফিগার দাঁড়ায় ৪/৪। এর পরে নিজের তৃতীয় ওভারে তিনি নিজের পঞ্চম উইকেটটি নেন যখন তখন তার পরিসংখ্যান দাঁড়ায় ৫/৫। এরপর নিজের ষষ্ঠ ওভারে বোলিং করতে এসে ম্যাচে নিজের ষষ্ঠ উইকেট হিসেবে দীর্ঘক্ষণ ধরে ফ্রিজে দাঁড়িয়ে থাকা কুশল মেন্ডিসকে বোল্ড করে ড্রেসিংরুমে ফেরান সিরাজ! সেই সময় তার বোলিং পরিসংখ্যান দাঁড়ায় ৬/৮
গত এক বছর ধরে টানা ফরম্যাট নির্বিশেষে নতুন বল হাতে অভাবনীয় সাফল্য পাচ্ছিলেন সিরাজ। কিন্তু এশিয়া কাপে যেন প্রত্যাশিত সাফল্য তার হাতে ধরা দেয়নি গোটা টুর্নামেন্ট জুড়ে। অনেকেই তার বদলে মহম্মদ শামিকে খেলানোর পরামর্শ দিচ্ছিলেন। কিন্তু এশিয়া কাপ ফাইনালে বিধ্বংসী বোলিং করে সেই সকল নিন্দুকদের চুপ করিয়ে দিলেন সিরাজ।
আরও পড়ুন: দ্রুততম ৫ উইকেট ও আরও ১ রেকর্ড! শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধেই মালিঙ্গা ও ভাসের রেকর্ডে ভাগ বসালেন সিরাজ
আর শেষটা করলেন হার্দিক পান্ডিয়ার। লোয়ার অর্ডারকে ধ্বংস করার জন্য তিনি মাত্র ১৪ বলে ৩ রান দিয়ে ৩টি উইকেট নেন। এশিয়া কাপ ফাইনালের মঞ্চে মাত্র ৫০ রানে অলআউট শ্রীলঙ্কা। সিরাজ (৬/২১) ও হার্দিক (৩/৩) যা বোলিং করলেন তা ভবিষ্যতে বিশ্বকাপে প্রত্যেকটা দলকে চিন্তায় রাখবে। ২০০০ সালে সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের নেতৃত্বাধীন ভারতীয় দলকে এভাবেই নাস্তানাবুদ করেছিল শ্রীলঙ্কা। জয়সূর্যর ১৬১ বলে ১৮৯ এবং চামিন্ডা ভাসের ৫ উইকেটে ভর করে প্রথমে ব্যাটিং করে ভারতের সামনে তিনশ রানের টার্গেট রাখা শ্রীলংকা ভারতকে অলআউট করেছিল ৫৪ রানে। এদিন যেন সেই লজ্জার কিছুটা বদলা নিলেন রোহিত শর্মারা।