বাংলাহান্ট ডেস্ক : দুর্গাপুজোর সময় মন্ডপের বাইরে বইয়ের স্টল খোলা বামপন্থী দলগুলোর একটি পুরনো রেওয়াজ। দীর্ঘদিন ধরে মূলত বামফ্রন্টের বিভিন্ন দল পূজো আসলেই মণ্ডপের বাইরে বইয়ের স্টল খুলে বসে যায়। সেই স্টলগুলিতে স্বাভাবিকভাবে বিভিন্ন বামপন্থী চিন্তাধারা বই পাওয়া যায়। বামপন্থীদের ইতিহাস থেকে শুরু করে আধুনিক সময় ভারতে বামপন্থীদের অবদান ইত্যাদি নানা বিষয়ের উপর লেখা বই সেখানে পাওয়া যায়।
বামফ্রন্টের পাশাপাশি বেশ কিছু বছর হল রাজ্যের ক্ষমতাশীল দল তৃণমূল কংগ্রেসও তাদের “জাগো বাংলা”র বুকস্টল থেকে পুজোর সময় বই বিক্রি করছে। সেই স্টল গুলিতে মূলত তৃণমূলের নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের লেখা বিভিন্ন বই পাওয়া যায়। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ছাড়াও তৃণমূল মনস্ক বিভিন্ন লেখক – লেখিকাদের বই এই স্টলগুলোতে উপলব্ধ থাকে।
এই বছর দুই বুক স্টলে খোঁজ নিলে জানা যাবে, দুর্গা পূজার বইয়ের বাজারে মূলত টক্কর দিচ্ছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও সীতারাম ইয়েচুরি। তৃণমূল কংগ্রেসের বইয়ের স্টলে সব থেকে বেশি চাহিদা রয়েছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের লেখা বইয়ের। অন্যদিকে বামফ্রন্টের বুক স্টল গুলিতে সীতারাম ইয়েচুরির বইয়ের চাহিদা রীতিমতো চোখে পড়ার মতো।
সিপিএমের বইয়ের বিপণনকারী ন্যাশনাল বুক এজেন্সির (এনবিএ) ধিকর্তা অনিরুদ্ধ চক্রবর্তীর কথায়, “সীতারামজির লেখা ‘স্বাধীনতা ৭৫’ বইটি বহু মানুষ কিনছেন। এছাড়াও সফদর হাসমির বইয়ের চাহিদাও বেশ আশাব্যঞ্জক। গত ২ বছর করোনার দাপট থাকার পর, এই বছর মানুষ স্বতঃস্ফূর্তভাবে উৎসবমুখর হয়েছেন। আমাদের স্টলেও বইয়ের চাহিদা বিশাল।”
শারীরিক সমস্যার কারণে বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের নতুন বই প্রকাশ না পেলেও, অতীতে তার লেখা ‘ফিরে দেখা’ বইটির চাহিদাও বেশ চোখে পড়ছে বামফ্রন্টের বিভিন্ন স্টলে। অন্যদিকে তৃণমূল কংগ্রেসের মুখপত্র কুনাল ঘোষ জানিয়েছেন, “আমাদের বুক স্টলে উৎসব সংখ্যার চাহিদা সবথেকে বেশি। এরপরই রয়েছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের লেখা বই। বর্তমানের তরুণ প্রজন্ম অতীত দিনের ইতিহাস সম্পর্কে জানতে চায়। তাই তাদের মধ্যে দিদির লেখা ‘পরিবর্তন’ বইটাও বেশ জনপ্রিয়।” পুজোর কটা দিন রাজনৈতিক নেতা নেত্রীরা বিভিন্ন পুজোয় ব্যস্ত থাকলেও বইয়ের স্টলে পরস্পরের সাথে ঠান্ডা যুদ্ধ জনগণকে আলাদা আনন্দ দিচ্ছে।