বাংলা হান্ট ডেস্ক : ১৯৪৭ সালের পর থেকেই একাধিক কঠিন অবস্থার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে পাকিস্তানের অর্থনীতি। অনেক সাধ্য সাধনার পর সম্প্রতি আন্তর্জাতিক মুদ্রা ভান্ডার (IMF) থেকে ঋণের অনুমোদন পেয়েছে ইসলামাবাদ। ঋণ পাওয়ার পর কিছুটা খুশির আবহ ছিল দেশ জুড়ে। বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বেশ কিছুটা বেড়েছিল। বাণিজ্য ঘাটতিও কমেছিল কিছুটা। পুঁজিবাজারেও দেখা গিয়েছিল হালকা উচ্ছ্বাস।
কিন্তু এর পরেও দেশের অর্থনৈতিক বিশেষজ্ঞরা যথেষ্ট চিন্তিত। এক সপ্তাহ পর থেকেই ফের বাড়তে শুরু করেছে পাকিস্তানের ঋণের পরিমাণ। আইএমএফ থেকে ঋণ পেলেও তা এই অবস্থার সুরাহা করতে পারবে না কিছুতেই। চিনের কাছেও বিরাট অংকের ঋণ রয়েছে পাকিস্তানের। সব মিলিয়ে কার্যত নাভিশ্বাস ওঠার অবস্থা শহবাজ শরিফের দেশের।
আইএমএফের দাবি, পাকিস্তানের কাছে চিনের পাওনা প্রায় ৩০ বিলিয়ন ডলার। অথচ দেশের ওপর মোট বৈদেশিক ঋণ ১২৬ বিলিয়ন ডলার। চিন থেকে পাকিস্তানকে আরও ৩.৫ বিলিয়ন ডলার সহায়তা দেওয়া হবে। এর মধ্যে আমানত আকারে থাকবে দুই বিলিয়ন ডলার। আরও ১.৫ বিলিয়ন ডলার দেবে চিনের বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো। অন্যদিকে সৌদি আরব থেকে পাকিস্তান পাবে দুই বিলিয়ন ডলার এবং সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে এক বিলিয়ন ডলার।
অর্থনীতি বিশেষজ্ঞ খুররম হুসেন পাকিস্তানের একটি সংবাদপত্রে লেখেন, দেশে যা কিছু ইতিবাচক ঘটনা ঘটেছে, আইএমএফ চুক্তির সঙ্গে তার কোনো সম্পর্কই নেই। তবে বন্ডের মূল্য পরিবর্তন, স্টক মার্কেটের র্যালি, বিনিময় হার সমন্বয় এবং বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বৃদ্ধি আইএমএফ চুক্তির সাফল্যের সাথে যুক্ত বলে মনে করা হচ্ছে। তাঁর মতে, পাকিস্তান গত ১৮ মাস ধরে রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। এ কারণে সঠিক সিদ্ধান্তও গ্রহণ করতে ব্যর্থ হচ্ছে ইসলামাবাদ। তবে এখনও পর্যন্ত পাকিস্তান দেউলিয়া হয়ে যায়নি বলেই মনে করেন ওই অর্থনীতিবিদ।
পাকিস্তানের বৈদেশিক ঋণ শোধ করার ক্ষমতার চেয়ে অনেক দ্রুত হারে বাড়ছে ঋণ। খুররামের মতে, অর্থনীতিতে এত বেশি ঋণ রয়েছে যে আইএমএফ সাহায্য না করলে এক বছরেরও কম সময়ের মধ্যে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ শেষ হয়ে যাবে। ২০২১ সালের আগস্টে, দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ২০ লক্ষ কোটি ডলারে পৌঁছেছিল। তারপর এখান থেকে কমতে থাকে। এখন তা কার্যত তলানিতে এসে ঠেকেছে।