বাংলা হান্ট ডেস্ক : রাম নবমীর (Ram Navami) মিছিলে হামলার ঘটনাকে কেন্দ্র করে সরগরম রিষড়া (Rishra)। প্রায় ৩ ঘণ্টা তাণ্ডব চলার পর রাত একটার পর ট্রেন চলতে শুরু করে রিষড়ায়। সোমবার রাতেও চার নম্বর রেলগেটে ব্যাপক বোমাবাজি চলে। পরিস্থিতি এমন জায়গায় পৌঁছয়, যে রেলগেটটাই বন্ধ করা যাচ্ছিল না।
তার জেরে হাওড়া-বর্ধমান আপ ও ডাউন অভিমুখে ট্রেন চলাচলও বন্ধ হয়ে যায়। প্রায় তিন ঘণ্টা পর ফের পরিষেবা শুরু হয়। তবে এখনও সার্বিকভাবে রিষড়া, মাহেশের মতো এলাকা থমথম রয়েছে। পুলিস মোতায়েন করা হলেও সোমবার রাতে যেভাবে অশান্তি ছড়িয়ে পরে, তাতে আতঙ্কে পড়ে গিয়েছেন মানুষ। যে অশান্তির ঘটনায় ইতিমধ্যে ৩৬ জনকে গ্রেফতার করেছে চন্দননগর কমিশনারেটের পুলিস।
রবিবার রিষড়ায় রামনবমীর মিছিল ঘিরে যে অশান্তি তৈরি হয়, তা সোমবার সকালে কিছুটা নিয়ন্ত্রণে আসে। এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করা হয়। কয়েকটি এলাকায় ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ ছিল। কিন্তু রাত নামতেই ফের অশান্তি শুরু হয়। রাত সাড়ে আটটা নাগাদ থেকে রিষড়ার চার নম্বর রেলগেটের কাছে শুরু হয় তুমুল বোমাবাজি। স্টেশন সংলগ্ন এলাকায় কার্যত তাণ্ডব চলে বলে অভিযোগ। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কাঁদানে গ্যাসের শেলও ফাটায় পুলিস। অভিযোগ, ট্রেন এবং পুলিসকে লক্ষ্য পাথর ছোড়া হয়।
এই তাণ্ডবের মধ্যে চার নম্বর রেলগেট বন্ধ করতে পারেনি রেল। তার জেরে সোমবার থমকে যায় হাওড়া-বর্ধমানের ট্রেন পরিষেবা। বিভিন্ন স্টেশনে পরপর দাঁড়িয়ে পড়ে একাধিক লোকাল এবং দূরপাল্লার ট্রেন। রাতের ট্রেন না পেয়ে হাওড়া স্টেশনে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন। তাঁরা অভিযোগ করতে থাকেন, রেলের তরফে স্পষ্টভাবে কিছু জানানো হচ্ছে না। যদিও রেল কর্তৃপক্ষ কার্যত স্পষ্ট করে দেয়, তাদের হাত-পা বাঁধা। রেল সংক্রান্ত কোনও কারণে পরিষেবা থমকে যায়নি।
এরইমধ্যে, সবথেকে ভয়ংকর অবস্থা হয় রিষড়া স্টেশনে। ওই অশান্তির মধ্যে রিষড়া স্টেশনে দাঁড়িয়েছিল হাওড়া-ব্যান্ডেল লোকাল। রাত ৯ টা ৫১ মিনিট নাগাদ সেটি রিষড়ায় আসে। চরম আতঙ্কে ভুগতে থাকেন যাত্রীরা। বাইরে থেকে বোমাবাজি ও কাঁদানে গ্যাসেল শেল ফাটানোর আওয়াজেই আতঙ্কিত হয়ে পড়েন সকলে। আতঙ্কে ট্রেনের অধিকাংশ জানালা-দরজা বন্ধ করে দেন তাঁরা। প্রতিটি মুহূর্ত, প্রতিটি সেকেন্ডে উদ্বেগ বাড়তে থাকে।
সারারাত ধরে এলাকায় টহল দিয়েছে পুলিস। মোতায়েন করা হয় বিরাট পুলিস বাহিনী। বিভিন্ন এলাকায় তল্লাশি চালিয়ে মোট ৩৬ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিস। আজ সকালেও বিভিন্ন জায়গায় চলছে টহল। তবে পুরো এলাকা থমথমে রয়েছে। রাস্তায় ভাঙা কাঁচের বোতলও ছড়িয়ে রয়েছে বলে জানা যাচ্ছে।