বাংলা হান্ট ডেস্ক: একটা চাকরির জন্য মানুষ কত কিছুই না করে। বহু পড়াশোনা, অক্লান্ত পরিশ্রম সব কিছুর পরেই মেলে চাকরি। আবার চাকরি পেয়েও করতে হয় সমপরিমাণ কাজ। পাশাপাশি অনেক সময়ই কাজের অপরিসীম চাপে হাঁপিয়েও ওঠেন অনেকে।
কিন্তু, কখনও ভেবে দেখেছেন যদি ঘুমিয়ে ঘুমিয়েই লক্ষ লক্ষ টাকা উপার্জনের সুযোগ থাকত তাহলে ঠিক কেমন হত? অনেকের কাছেই এটা অকল্পনীয় মনে হলেও ঠিক এইরকমই এক সুবর্ণ সুযোগ নিয়ে এসেছে এক সংস্থা! এমন একটি কোম্পানি আছে, যারা শুধু বিছানায় ঘুমানোর জন্য চাকরি দিচ্ছে।
পাশাপাশি, উপযুক্ত বেতনও দেওয়া হবে যোগ্য প্রার্থীদের। আর যার পরিমাণটাও নেহাত কম নয়। আপনাকে শুধু কোম্পানির কিছু শর্ত পূরণ করতে হবে। তো চলুন জেনে নেই এই “ড্রিম জব” সম্পর্কে।
Sleep Junkie নামক একটি সংস্থা আরামপ্রিয় মানুষদের জন্য একটি বিশেষ কাজের সুযোগ দিচ্ছে। যেখানে নির্বাচিত প্রার্থীদের কাজ হবে কেবল বিছানায় ঘুমোনো। প্রকৃতপক্ষে, প্রার্থীকে এই কোম্পানির বিছানা, বালিশ, চোখের মাস্ক ইত্যাদি ব্যবহার করে সেগুলি তাদের কেমন লাগল সেই বিষয়ে মতামত প্রদান করতে হবে। এই কাজের জন্যই মোটা অঙ্কের মাইনেও পাবেন তাঁরা।
CNBC-র একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে, এই কোম্পানি নির্বাচিত প্রার্থীদেরকে দুই হাজার ডলার (ভারতীয় মুদ্রায় যা প্রায় দেড় লক্ষ টাকা) বেতন দেবে। দু’মাসের জন্য এই কাজে প্রত্যেক প্রার্থীকে ঘণ্টায় ২৫০ ডলার (১৮ হাজার টাকা) দেওয়া হবে। এই কাজ করার জন্য, কোম্পানির নির্ধারিত সময়ে বিছানায় ঘুমোতে হবে এবং তারপর তাঁদের তাদের অভিজ্ঞতার কথা জানাতে হবে।
ওই মতামতের ভিত্তিতে সংস্থার বিশেষজ্ঞরা পর্যালোচনা করে দেখবেন যে প্রার্থীদের স্বাভাবিক ঘুমের তুলনায় এই কোম্পানির বিছানা বা বালিশ ব্যবহার করে ঘুমের ক্ষেত্রে কি কি পার্থক্য ঘটছে। এই প্রসঙ্গে সংস্থা সূত্রে জানানো হয়েছে যে, এটি “বিশ্বজুড়ে ঘুমে সমস্যা রয়েছে এমন মানুষদের গাইড করতে” সাহায্য করবে।
সংস্থাটিতে চাকরির জন্য আবেদনকারীকে “কেন তাকে এই চাকরি দেওয়া হবে” এই প্রসঙ্গে ১৫০ শব্দের একটি ব্যাখ্যা লিখতে হবে। এছাড়াও, যারা গভীর ঘুমে ঘুমোন তারা আবেদন করতে পারবেন না। এখানে আবেদনের শেষ তারিখ ১৪ ফেব্রুয়ারি।
আবেদনকারীর বয়স কমপক্ষে ২১ বছর হতে হবে। পাশাপাশি আবেদনকারীর একটি স্মার্টফোন থাকতে হবে তাতে “স্লিপ ট্র্যাকিং অ্যাপস”ও ডাউনলোড করতে হবে। এই প্রসঙ্গে সংস্থাটির অন্যতম একজন ঘুম বিশেষজ্ঞ ডরোথি চেম্বার্স জানিয়েছেন যে, “আমরা বিশ্বাস করি যে প্রত্যেকেরই রাতের একটি ভাল ঘুম প্রাপ্য এবং আমরা এটি পেতে সাহায্য করতে পারি।” সংস্থাটি আরও জানিয়েছে যে, এটি ১৮ মার্চ “বিশ্ব ঘুম দিবস”-এর প্রাক্কালে অনিদ্রা সংক্রান্ত একটি পর্যালোচনা প্রকাশিত করবে।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, করোনা মহামারীর মাঝে ক্লিনিক্যাল স্লিপ মেডিসিন জার্নালে প্রকাশিত একটি পরিসংখ্যানে দেখা গেছে যে, মহামারী শুরু হওয়ার পর থেকে ৪০ শতাংশ মানুষের ঘুম ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তবে, ঘুমের জন্য বেশি আরামদায়ক জিনিসও ব্যবহার করা উচিত নয়। ইতিমধ্যেই বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন যে, ঘুমের সময়ে বেশি উচ্চতা বা পুরু বালিশ ব্যবহার করলে ঘাড় ও পিঠের ক্ষতি হয়।