বাংলা হান্ট ডেস্কঃ করোনার অতিমারী ইতিমধ্যেই ভয়াবহ হয়ে উঠেছে দেশে। লকডাউনের জেরে আক্রান্তের সংখ্যা কিছুটা কমলেও মৃত্যুর সংখ্যা এখনো চিন্তা বাড়াচ্ছে কেন্দ্রের। গত ২৪ ঘন্টায় যেখানে আক্রান্তের সংখ্যা কমে দাঁড়িয়েছে দু লাখের কিছু বেশি, সেখানে ফের একবার মৃত্যু হয়েছে ৪১৫৭ জনের। এ নিয়ে দেশে মোট মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ৩ লক্ষ ১১ হাজার ৩৮৮। যা রীতিমতো চিন্তার বিষয়। ইতিমধ্যেই এসেছে ২-ডিজির মতো করোনা চিকিৎসার ওষুধ, কিন্তু তাতেও মৃত্যুর সংখ্যা কমছে না কিছুতেই। এমতাবস্থায় পরিবারহীন হয়ে পড়ছেন অনেকেই। যতদিন এই কোভিড আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হওয়া কর্মীদের ক্ষেত্রে বড় সিদ্ধান্ত নিয়েছে টাটা। তারা জানিয়েছে কর্মী মারা গেলেও তার পরিবার বেতন তো পাবেনই, সঙ্গে সঙ্গে বিশেষ বিশেষ ক্ষেত্রে সন্তানদের পড়াশোনার পুরো দায়িত্ব নেবে কোম্পানি।
এই মহামারীর জেরে শুধু যে আমরা আমাদের প্রিয় আত্মীয়-স্বজনদের হারিয়েছি তা নয়। বহু শিশুই হারিয়েছে বাবা ও মাকে। হঠাৎ এই মহামারীর ছোবলে কার্যত অনাথ হয়ে পড়েছে তারা। এবার তাদের পাশেই দাঁড়ালো কেন্দ্র সরকার। মঙ্গলবার কোভিডের মারণ আক্রমণে বাবা মা হারানোর শিশুদের একটি তালিকা প্রকাশ করেছে নারী ও শিশু কল্যাণ মন্ত্রক। যার জেরে দেখা গিয়েছে গত ৫৫ দিনে এই মহামারিতে বাবা ও মাকে হারিয়েছে প্রায় ৫৭৭ জন শিশু। মন্ত্রকের শীর্ষ আধিকারিকরা জানিয়েছেন, কোভিডে অনাথদের দত্তক নেয়ার ক্ষেত্রে হঠাৎই খুব বেশি আবেদন চোখে পড়ছিল সোশ্যাল মিডিয়ায়। আর সেখান থেকেই এ বিষয়ে জেলাস্তরে অডিটের সিদ্ধান্ত নেয় মন্ত্রক। আর তার ফলেই সামনে এসেছে এই তথ্য।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, এর আগে এই কোভিডে অনাথ শিশুদেরকে দেখভালের জন্য বড় সিদ্ধান্ত নিয়েছিল দিল্লি এবং পাঞ্জাব সরকারও। বিনামূল্যে শিক্ষা তো বটেই এছাড়া আর্থিক সাহায্য প্রদান করা হয়েছিল তাদের। এবার সেই পথেই হাঁটলো কেন্দ্রীয় নারী সুরক্ষা ও শিশু কল্যাণ মন্ত্রক। মন্ত্রী স্মৃতি ইরানি এদিন টুইট করে জানান, “কোভিড মহামারীতে বাবা মা হারানো শিশুদের সবরকম সাহায্য ও সুরক্ষা দেবে সরকার। আমরা প্রত্যেক জেলাকে ১০ লক্ষ টাকা করে দেব এই অনাথ শিশুদের দেখভালের জন্য। জেলাশাসক মারফৎ শিশুসুরক্ষা প্রকল্পে এই অর্থ প্রদান করা হবে। আমরা চাই কোভিডে অনাথ একজন শিশুরও যেন ক্ষতি না হয়।”
কেন্দ্রের এই প্রকল্প যে খুবই জরুরী তা বলাই বাহুল্য। করোনার এই দ্বিতীয় ঢেউ বড় আক্রমণ শানিয়েছে ৩০ থেকে ৪৫ বছর বয়সীদের ওপরেও। যার ফলে রীতিমতো ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে অনেক পরিবার। কারণ বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই তারা হারিয়েছে তাদের রোজগেরে সদস্যকে৷ এমতাবস্থায় অনাথ শিশুদের জন্য সরকারের এই প্রকল্প আগামী দিনে শিশুদের উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ গড়ার লক্ষ্যে যে অনেকটাই সাহায্য করবে তা বলাই বাহুল্য।