বাংলা হান্ট ডেস্কঃ গত সোমবার নয়া সংসদ ভবনে পুজোর মাধ্যমে অশোক স্তম্ভের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি (Narendra Modi)। ইতিমধ্যে তাঁর এই কর্মকাণ্ড নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি হয়ে চলেছে গোটা দেশে। একদিকে যেমন প্রধানমন্ত্রী সংবিধানের লঙ্ঘন করেছেন বলে অভিযোগ করেছে বিরোধীরা, আবার অপরদিকে জাতীয় প্রতীকের অবমাননা করা হয়েছে বলেও গতকাল অভিযোগ জানায় তৃণমূল কংগ্রেস (Trinamool Congress) আর এবার বিরোধীদের এসকল কটাক্ষ মাঝে তাদের উল্টে আক্রমণ শানালেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী স্মৃতি ইরানি (Smriti Irani)।
সম্প্রতি, শিয়ালদহ মেট্রো পথের উদ্বোধন করার জন্য বঙ্গ সফরে এসেছেন বিজেপি নেত্রী। এদিন হাওড়ায় একটি সভা থেকে আক্রমণাত্মক মেজাজে দেখা যায় স্মৃতির ইরানিকে। তাঁর দাবি, “দেশের সাংবিধানিক পরম্পরা এবং আমাদের সংবিধানকে যারা ধ্বংস করে চলেছে, তারা এটির স্মারককে ভয় পাবে, সেটাই স্বাভাবিক। ভুলে গেলে চলবে না, সংবিধানের স্মারক আমাদের গৌরব এবং ভারতের প্রতীক।” এদিন সভা থেকে এভাবেই বিরোধীদের উদ্দেশ্যে কটাক্ষ ছুঁড়ে দেন তিনি।
উল্লেখ্য, সম্প্রতি মা কালী বিতর্কে নাম জড়ায় তৃণমূল কংগ্রেসের সাংসদ মহুয়া মৈত্রের। একইসঙ্গে গতকাল প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে ‘অশোক স্তম্ভ’ প্রসঙ্গে আক্রমণও করেন তিনি। এ সকল বিষয়ে প্রশ্ন উঠতেই স্মৃতি ইরানির সাফ জবাব, “মা কালীকে যারা অপমান করতে পারে, তাদের পক্ষে রাষ্ট্রীয় প্রতীককে অপমান করা কোন নতুন বিষয় নয়।” এছাড়াও তৃণমূল শিবিরের সাংসদ জহর সরকারকে কটাক্ষ করে তিনি বলেন, “আমাদের দেশে একটি ধারণা ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে এবং তা হল, মুসলিমরাই শুধুমাত্র সংখ্যালঘু। তাহলে পার্সি, জৈন, বৌদ্ধরা কি সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মধ্যে পড়ে না?”
তবে শুধুমাত্র তৃণমূল কংগ্রেস নয়, বিজেপি নেত্রীর আক্রমণের কেন্দ্রবিন্দুতে ছিল অন্যান্য বিরোধী দলগুলিও। তিনি বলেন, “বিরোধীরা একদিকে যখন সবার সমান অধিকারের প্রসঙ্গ তুলে ধরছে, আবার সংখ্যালঘু বিষয়টিতেও তারা আলোকপাত করছে। এই ঘটনা অত্যন্ত লজ্জাজনক। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বিরোধিতা করতে গিয়ে যদি দেশের বিরোধিতা করা হয়, তাহলে সেটা নিন্দনীয়। আমি সংখ্যালঘু উন্নয়ন দপ্তরের মন্ত্রী। ফলে সংবিধান মেনে সবার উন্নতিসাধন করাই আমার একমাত্র লক্ষ্য। আসলে ২০১৪ সালে নির্বাচনে হেরে আসার পর থেকে বিরোধী দলগুলি দেশের ক্ষতি হওয়ার অপেক্ষায় রয়েছে।”
এরপরেই হাওড়ার সভা থেকে স্মৃতি ইরানি কেন্দ্রের সাফল্যের খতিয়ানগুলি তুলে ধরেন। তিনি বলেন, “গোটা বিশ্বের মধ্যে একমাত্র ভারতে বিগত দুই বছর ধরে ৮০ কোটি মানুষকে বিনামূল্যের রেশন দেওয়া হচ্ছে। আমাদের দেশই প্রথম, যেখানে ২০০ কোটি ভ্যাকসিনের লক্ষ্যমাত্রা ছোঁয়া গিয়েছে, তাও আবার বিনামূল্যে। এছাড়াও আমাদের সরকার মহিলাদের কথা সর্বদা ভেবে চলেছে।” এদিন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রসঙ্গ উঠে আসে স্মৃতির গলায়। আসন্ন রাষ্ট্রপতি নির্বাচন নিয়ে তিনি বলেন, “রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে আমাদের পদপ্রার্থী দ্রৌপদী মুর্মু। এক্ষেত্রে যিনি আদিবাসী মহিলাকে সমর্থন করবেন না, তিনি দেশের সমস্ত গরীব এবং আদিবাসীদের বিরুদ্ধে বলেই ধরে নিতে হবে।”