হিমাচল প্রদেশের এই মন্দিরে নেই কোন ছাদ, তবুও দেবীর মূর্তিতে এক ফোঁটা জমে না বরফ

বাংলাহান্ট ডেস্ক: ভারত ধর্মের দেশ। এই দেশের পাহাড়ি রাজ্য হিমাচল প্রদেশের (Himachal Pradesh) আরও এক নাম হল ‘দেবভূমি’। কারণ সকলে মনে করেন, এই রাজ্যের পাহাড়ে দেবতার বাস। কারণ এই রাজ্যে এমন অনেক মন্দির রয়েছে যেগুলি রহস্যে মোড়া। এই মন্দিরগুলির অলৌকিক কাহিনী আপনাকে অবাক করে দেবে। ঠিক এই কারণেই বলা হয় এখানে দেবতার বাস।

এই ‘অলৌকিক’ কাহিনীগুলির নেপথ্যে অনেক বৈজ্ঞানিক কারণও লুকিয়ে রয়েছে। তবে ভগবানের প্রতি মানুষের বিশ্বাস বিজ্ঞানকে এসবের থেকে অনেক দূরে রাখে। এমনই একটি মন্দির রয়েছে হিমাচলের মান্ডি জেলার সরাজ ঘাটিতে। এই মন্দিরটি শিকারী দেবী মাতার মন্দির। শীতকালে এই এলাকা প্রায় ছ’ থেকে সাত ফুট উঁচু তুষারে ঢাকা পড়ে যায়। কিন্তু আশ্চর্যের বিষয় হল অত ভারী তুষারপাতেও এই মন্দিরের মূর্তিগুলি বরফে ঢাকা পড়ে না। 

এমনকী, এই মন্দিরের ছাদেও বরফ জমে থাকে না। সোমবার হিমাচল প্রদেশে ভারী তুষারপাত হওয়ার খবর পাওয়া গিয়েছে। ১১ হাজার ফুট উচ্চতায় অবস্থিত মান্ডি জেলার এই মন্দিরের মূর্তিগুলিতে এবারেও একটুও বরফ জমেনি। ওই মূর্তিগুলি পাথরের একটি মাচায় স্থাপন করা হয়েছে। এমন হওয়ার পিছনে বৈজ্ঞানিক কারণও রয়েছে। তবে মানুষের আস্থার কারণে এটিকে দেবীর চমৎকার হিসেবেই দেখা হয়। অদ্ভুত বিষয় হল, আজ অবধি কেউ এই মন্দিরের ছাদ তৈরি করতে পারেনি।

Shikari Devi Mata Idols

শিকারী মাতার মন্দির হল একমাত্র যেখানে কোনও ছাদ নেই। খোলা আকাশের নীচেই মূর্তিগুলি অবস্থিত। লোকমুখে প্রচলিত, দেবী নাকি ছাদের নীচে থাকতে পছন্দ করেন না। তাই আজ অবধি কেউ এই মন্দিরের ছাদ তৈরি করতে পারেনি। মন্দিরের পুরোহিত সুরেশ কুমার শর্মা জানিয়েছেন, বেশ কয়েকবার এই মন্দিরে ছাদ তৈরি করার চেষ্টা করা হয়েছে কিন্তু সেই ছাদ টেকেনি। শিকারী মাতার আর এক নাম হল যোগিনী মাতা। 

এই মন্দিরে নবদূর্গা, চামুণ্ডা, কামরূনাগ এবং পরশুরামের মূর্তিও স্থাপিত রয়েছে। নবরাত্রির দিনগুলিতে এখানে বিশেষ মেলার আয়োজন করা হয়। তবে সব থেকে আশ্চর্যের বিষয়, যতই বরফ পড়ুক, মূর্তিগুলিতে এক ফোঁটা বরফও থাকে না। পৌরাণিক মতে বলা হয়, এই মন্দিরের স্থানে মার্কণ্ড ঋষি বহু বছর ধরে তপস্যা করেছিলেন। তাঁর তপস্যায় খুশি হয়ে মা দূর্গা শক্তির রূপ ধরে তাঁকে দেখা দেন এবং এখানে স্থাপিত হন। এরপর পান্ডবরা অজ্ঞাতবাসের সময় এখানে বসবাস করেন। 

বলা হয়, ছাদহীন এই মন্দিরের নির্মাণ করেছিলেন পান্ডবরাই। তবে এমন ছাদহীন মন্দিরের স্থাপনা কেন করেছিলেন তাঁরা, তা আজ অবধি জানা যায়নি। এই মন্দিরটি এমন জায়গায় অবস্থিত যেখানে বন্য জন্তুদের অবাধ বিচরণ রয়েছে। সে জন্য এখানে শিকারীরা এই অঞ্চলে শিকার করতে এলে আফল্য লাভের আশায় এই মন্দিরে পুজো দিত। সেই কারণেই এই দেবীর নাম শিকারী মাতা।

Subhraroop

সম্পর্কিত খবর