বাংলা হান্ট ডেস্ক: ওড়িশার (Odisha) প্রথম মুসলিম মহিলা বিধায়ক হয়ে নতুন রেকর্ড তৈরি করেছেন কংগ্রেসের সোফিয়া ফেরদৌস (Sofia Firdaus)। ওড়িশার বিধানসভা নির্বাচনে জিতে মাত্র ৩২ বছর বয়সেই সোফিয়া ওড়িশার প্রথম মুসলিম মহিলা বিধায়ক (First Woman Muslim MLA) হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছেন। একদিকে উড়িষ্যায় যখন বিজেপি ঝরে ধরাশায়ী নবীন পট্টনায়কের বিজু জনতা দল।
তখন ওড়িশার বিধানসভা নির্বাচনে কংগ্রেসের তরফে ভোটে দাঁড়িয়েই বিজেপির পূর্ণচন্দ্র মহাপাত্রকে ৮০০১ ভোটে হারিয়ে ওড়িশার প্রথম মুসলিম মহিলা বিধায়ক হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন সোফিয়া। তবে সোফিয়া নিজেকে একজন মুসলিম মহিলা বিধায়ক হিসাবে নয়। বরং একজন ওড়িয়া, কিংবা ভারতীয় সর্বোপরি একজন মহিলা হিসেবেই দেখতে বেশি পছন্দ করেন।
সোফিয়ার নিজের কথায়, ‘আমি আগে একজন ওড়িয়া, একজন ভারতীয় এবং একজন মহিলা। চাকরি করার সময়ও মহিলাদের উন্নয়নের কথা ভেবেছি। নিজেকে মুসলিম রাজনীতিক হিসাবে ভাবিনি কখনও।’ ভারতীয় রাজনীতিতে ইতিমধ্যেই তৈরী হয়ে গিয়েছে সোফিয়ার উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ। কিন্তু রাজনীতিতে আসার আগে তিনি ছিলেন পেশায় একজন সিভিল ইঞ্জিনিয়ার। তাঁর শিক্ষাগত যোগ্যতাও রীতিমতো ঈর্ষণীয়।
আগাগোড়া রাজনৈতিক পরিবারের মেয়ে সোফিয়া কলিঙ্গ ইনস্টিটিউট অফ ইন্ডাস্ট্রিয়াল টেকনোলজি থেকে সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়ে স্নাতক পাশ করেছেন। এছাড়াও ২০২২ সালেই বেঙ্গালুরুর ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ ম্যানেজমেন্ট (আইআইএম) থেকে এগ্জ়িকিউটিভ জেনারেল ম্যানেজমেন্ট প্রোগ্রাম পাশ করেছেন তিনি। এখানেই শেষ নয় তার পরের বছর অর্থাৎ ২০২৩ সালে কনফেডারেশন অফ রিয়েল এস্টেট ডেভেলপারস অ্যাসোসিয়েশনস অফ ইন্ডিয়ার ভুবনেশ্বর শাখার সভাপতি নির্বাচিত হন সোফিয়া। এই সংগঠনের মহিলা শাখারও প্রধান ছিলেন তিনি।
আরও পড়ুন: জন্মদিনের পার্টিতে যাওয়াই হল কাল, মর্মান্তিক পথ দুর্ঘটনায় মৃত্যু ৪ জনপ্রিয় Youtuber-র
জানা যায় সোফিয়ার স্বামী মিরাজ উল হক বিশিষ্ট শিল্পপতি। এবছর নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার আগে সোফিয়া বাবার সংস্থা ‘মেট্রো বিল্ডার্স প্রাইভেট লিমিটেড’-এর সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। সিআইআই- ইন্ডিয়ান গ্রিন বিল্ডিং কাউন্সিলের ভুবনেশ্বর বিভাগেরও কো-চেয়ারপার্সন সোফিয়া জানিয়েছেন, নির্বাচনের আগে প্রচারের জন্য তার নাকি মাত্র এক মাস সময় ছিল।
আসলে সোফিয়ার বাবা মহম্মদ মোকিম একজন প্রবীণ কংগ্রেস নেতা। ২০১৪ এবং ২০১৯ সালে বাবার হয়েই ভোট প্রচার করলেও এবার কংগ্রেস নির্বাচনে তাঁর বাবাকে নয় টিকিট দেয় তাঁকেই। এপ্রসঙ্গে সোফিয়া সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, তাঁর বাবা লড়তে না পারে তাঁর কাছে ভোটে দাঁড়ানোর আর্জি জানিয়ে বাড়ির সামনে জড়ো হয়েছিলেন প্রায় ৫০০ সমর্থক। তাঁদের অনুরোধেই নাকি ভোটে দাঁড়িয়েছিলেন সোফিয়া। হাতে সময় কম থাকলেও তারই মধ্যে বারাবতী-কটক আসনে মশা এবং নিকাশী সমস্যাকেই প্রাচের হাতিয়ার করে তুলেছিলেন সোফিয়া।